কোনও অভ্যাসই এক দিনে বদলে ফেলা যায় না। এক দিনে প্রাণপণ চেষ্টা করা যেতে পারে মাত্র। তার পরে ধারাবাহিক চেষ্টা আর সদিচ্ছার জোরে ধীরে ধীরে বদলায় অভ্যাস। মোবাইলে চোখ রেখে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটিয়ে দেওয়ার অভ্যাসও তাই এক দিনে বদলানো যাবে না। তবে চেষ্টা করলে আর সময় দিলে ভাল অভ্যাস গড়ে তোলা সম্ভব।
চোখের জন্য এবং সার্বিক ভাল থাকার জন্য মোবাইল অথবা ডিজিটাল পর্দার দিকে দীর্ঘ ক্ষণ তাকিয়ে থাকতে বারণ করেন চিকিৎসকেরা। কর্মক্ষেত্রে কম্পিউটার বা ল্যাপটপের পর্দা থেকে চোখ সরানোর উপায় থাকে না অনেকেরই। তার বাইরে যে সময়টুকু নিজের, সেই সময়ে অনেকেই সমাজমাধ্যমে নজর রাখেন। কেউ দেখেন সিনেমা। কেউ বা বুঁদ হয়ে থাকেন রিলসে। এ ভাবেই কেটে যায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা। আপাত দৃষ্টিতে বিষয়টি মন ভাল রাখার পন্থা মনে হলেও আদতে তা ক্ষতি করছে। রাত জেগে মোবাইলে চোখ রেখে কারও রাতের ঘুম নষ্ট হচ্ছে তো কারও প্রভাব পড়ে চোখে এবং সার্বিক স্বাস্থ্যে। তার চেয়েও বড় কথা হল এই অভ্যাস আমাদের সামাজিকভাবেও এক ঘরে করে ফেলছে। যোগাযোগ কমছে মানুষের সঙ্গে।
তবে আপনি যদি অতিরিক্ত মোবাইল দেখার অভ্যাস বদলানোর কথা ভেবেই থাকেন, তবে অর্ধেক কাজ হয়ে গিয়েছে। বাকি অর্ধেকটুকু করার জন্য তিনটি উপায় মেনে চলতে পারেন।
১। বাইরে যান
অফিস থেকে বাড়িতে ফিরেই মোবাইল দেখতে শুরু করেন। যে সময় মোবাইল দেখতে ইচ্ছে করবে সেই সময়ে মোবাইল থেকে চোখ সরিয়ে বাইরে যান। হয়তো খানিক ক্ষণ বাড়ির সামনের রাস্তায় হাঁটলেন। সেটা একান্তই সম্ভব না হলে ছাদে কিংবা বারান্দায় যান। খোলা হাওয়ায় অন্তত মিনিট ১৫ হাঁটুন। তাতেও মোবাইলে নজর রাখার ইচ্ছে চলে যাবে।
২। কথা বলুন
যে সময়ে পর্দায় নজর রাখেন, সেই সময়ে কারও সঙ্গে কথা বলুন। বাড়ির লোক জনের সঙ্গে কথা বলুন। তা-ও না সম্ভব হলে বন্ধু-বান্ধব আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে ফোন করে কথা বলুন। সপ্তাহে অন্তত দু’দিন দু’জন বন্ধু বা আত্মীয়কে ফোন করুন। পাঁচ মিনিট হলেও তাঁদের সঙ্গে কথা বলুন। খবর নিন।
৩। মোবাইল ফ্রি জ়োন
বাড়িতে মোবাইল ফ্রি জ়োন তৈরি করুন। ধরুন খাওয়ার ঘর এবং শোয়ার ঘরে মোবাইল দরকার ছাড়া ব্যবহার করবেন না। সেখানে মনোরঞ্জনের দরকার হলে বই পড়ুন। বা অন্য কোনও উপায় হাতের কাছে রাখুন।