Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
Karnataka

Maternity Leave & WHF: কাজের ধরন বুঝে তবেই মাতৃত্বকালীন ছুটির পর বাড়ি থেকে কাজের অনুমতি মিলবে: কর্নাটক হাই কোর্ট

মাতৃত্বকালীন ছুটির পর দফতরে না গিয়ে বাড়ি থেকে কাজ চালাচ্ছিলেন সরকারি এক গবেষক। সে মামলার শুনানিতেই ওঠে বাড়ি থেকে কাজের সুবিধা নিয়ে প্রশ্ন।

কর্নাটক হাই কোর্ট

কর্নাটক হাই কোর্ট

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০২২ ১৮:২৭
Share: Save:

মাতৃত্বকালীন ছুটি শেষ হয়ে যাওয়ার পর অনেকেই বাড়ি থেকে কাজ করার অনুমতি চাইছেন। এ সংক্রান্ত এক মামলায় সম্প্রতি কর্নাটক হাইকোর্ট একটি রায় দিয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, মাতৃত্বকালীন ছুটির পর বাড়ি থেকে কাজ করা যাবে কি না, তা সম্পূর্ণ নির্ভর করে সেই মহিলার কাজের ধরনের উপর। যদি কাজটি বাড়ি থেকে করা সম্ভব হয়, তবেই তিনি ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’-এর অনুমতি পেতে পারেন। না হলে, নয়।

এই মন্তব্যের পিছনে রয়েছে সরকারি এক গবেষকের তরফে করা মামলা। সেই মহিলা ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (ডিআরডিও)-র সেমিকন্ডাক্টর টেকনোলজি অ্যান্ড অ্যাপলায়েড রিসার্চ সেন্টার (এসটিএআরসি)-র কর্মী। গত আট বছর ধরে সেখানে সিনিয়র এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়র হিসাবে কর্মরত।

২০২০ সালের অগস্ট মাসে ডিআরডিও-র সেই কর্মী কন্যাসন্তানের জন্ম দেন। পরের বছরের ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত তিনি মাতৃত্বকালীন ছুটিতে থাকেন। তার পর ২০২১ সালের এপ্রিল মাসে তাঁর প্রাপ্য অন্যান্য সব খাতের ছুটিও শেষ হয়ে যায়। এর পর করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আসে। তাঁর দাবি, সে সময়ে অফিসের বাকি সকলের সঙ্গে তিনিও বাড়ি থেকে কাজ করেন। কিন্তু এই সময় থেকে তাঁর বেতন জমা পড়া নিয়ে সমস্যা দেখা দেয়। এর পর তিনি কর্তৃপক্ষের দ্বারস্থ হন নিজের বেতন এবং মাতৃত্বকালীন ছুটির সময়ের সব পাওনা হাতে পাওয়ার জন্য।

কোর্টের নজরে অবশ্য আসে যে, ওই সময়ে একই কমপ্লেক্সের মধ্যে তিনি সন্তানকে ক্রেশে রাখার সুযোগ পেতেন। তবে সহমর্মিতার সঙ্গে এই মহিলার পরিস্থিতি বুঝে দেখার কথাও বলা হয় তাঁর সংস্থাকে।

কিন্তু সংস্থার তরফে দাবি করা হয় যে, মহিলার মাতৃত্বকালীন ছুটি শেষ হওয়ার পর তিনি কাজে যোগ না দেওয়ায় দফতর থেকে বার্তা পাঠানো হয়েছিল। তা সত্ত্বেও তিনি কাজে আসেননি। কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই ছুটিতে ছিলেন। এ কারণে যে তাঁর বেতন কাটা যেতে পারে, সে কথাও জানানো হয়েছিল বলে সংস্থার কর্তৃপক্ষের তরফে কোর্টে দাবি করা হয়।

ওই মহিলা কর্মী মেটার্নিটি বেনিফিটস অ্যাক্ট-এর প্রসঙ্গ উল্লেখ করে পাল্টা দাবি করেন, সন্তানের ১৮ বছর বয়স হওয়া পর্যন্ত তাদের যত্নে ছুটি পাওয়ার ব্যবস্থা আছে আইনে। মিনিস্ট্রি অব পার্সোনেলের এই নিয়মের বিষয়টি তুলে বেঙ্গালুরুর সেন্ট্রাল অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনালের দ্বারস্থ হন সেই কর্মী। এসটিএআরসি কর্তৃপক্ষ অবশ্য এর পরও তাঁকে ২০২১ সালের মে মাসে কাজে যোগ দেওয়ার বার্তা পাঠিয়েছিল বলেই দাবি করা হয়েছে সেই সংস্থার তরফে।

এই মামলার শুনানি শেষেই কর্নাটকের হাইকোর্ট রায় দেয় যে মেটার্নিটি বেনিফিটস অ্যাক্টের প্রসঙ্গ যদিও তোলা হয়েছে, তবু খেয়াল রাখতে হবে সেই কর্মী কোন ধরনের কাজ করেন। যে সব ধরনের কাজ বাড়ি থেকে করাই যায় না, তেমন কাজের দায়িত্ব পালন করতে হবে কর্মক্ষেত্রে গিয়েই। যেমন এই মহিলা গবেষণার কাজে যুক্ত। যা কিছুটা গোপনীয় এবং জটিলও। ভারত সরকারের প্রতিরক্ষা দফতরের জন্য করা হয় সেই গবেষণা। সে সব ধরনের কাজের বিষয়ে জনসাধারণের মধ্যে কোনও তথ্য যেন না ছড়ায়, সে দিকেও নজর দিতে হয়। ফলে এই কাজ যে কোনও ভাবেই বাড়ি থেকে করা যায় না, তা বোঝাই যাচ্ছে বলে মন্তব্য করে কর্নাটক হাইকোর্ট।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE