Advertisement
E-Paper

পরিদর্শনে এসে বিক্ষোভের মুখে স্বাস্থ্যকর্তা

জেলা হাসপাতালের শিশু বহির্বিভাগের সামনে চিকিৎসকের অপেক্ষায় অসুস্থ শিশুদের নিয়ে লাইন দিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন অভিভাবকেরা। টানা সাড়ে চার ঘণ্টা অপেক্ষা করেও কোনও চিকিৎসক আসেননি বলে অভিযোগ। সেই সময় রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতাল পরিদর্শন করতে এসে অসুস্থ শিশুদের অভিভাবকদের বিক্ষোভের মুখে পড়লেন রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের উপসচিব জলি চৌধুরী। শুক্রবার দুপুর দেড়টা নাগাদ হাসপাতাল পরিদর্শনের পর সুপারের চেম্বারে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করছিলেন উপসচিব-সহ রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের চার সদস্যের একটি প্রতিনিধি দলের সদস্যরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ জুন ২০১৫ ০২:১৯
রায়গঞ্জে হাসপাতালে বিক্ষোভ। শুক্রবার তোলা নিজস্ব চিত্র।

রায়গঞ্জে হাসপাতালে বিক্ষোভ। শুক্রবার তোলা নিজস্ব চিত্র।

জেলা হাসপাতালের শিশু বহির্বিভাগের সামনে চিকিৎসকের অপেক্ষায় অসুস্থ শিশুদের নিয়ে লাইন দিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন অভিভাবকেরা। টানা সাড়ে চার ঘণ্টা অপেক্ষা করেও কোনও চিকিৎসক আসেননি বলে অভিযোগ।

সেই সময় রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতাল পরিদর্শন করতে এসে অসুস্থ শিশুদের অভিভাবকদের বিক্ষোভের মুখে পড়লেন রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের উপসচিব জলি চৌধুরী। শুক্রবার দুপুর দেড়টা নাগাদ হাসপাতাল পরিদর্শনের পর সুপারের চেম্বারে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করছিলেন উপসচিব-সহ রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের চার সদস্যের একটি প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। খবর পেয়ে অসুস্থ শিশুদের অভিভাবকেরা সুপারের চেম্বারের দরজা ঠেলে ভিতরে ঢুকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ শুরু করেন। ঘটনায় হতভম্ব হয়ে পড়েন উপসচিব জলিবাবু। অস্বস্তিতে পড়ে যান হাসপাতাল সুপার অনুপ হাজরা-সহ হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সদের একাংশ। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আন্দোলনকারীদের সাধারণ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে দিয়ে শিশুদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দেওয়ার প্রস্তাব দেন। কিন্তু তাঁরা সেই প্রস্তাব প্রত্যাখান করে শিশু চিকিৎসককে বহির্বিভাগে হাজির করানোর দাবি জানান। প্রায় এক ঘণ্টা পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ঘটনার তদন্ত ও ভবিষ্যতে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী সঠিক সময়ে বহির্বিভাগে চিকিৎসকেরা থাকবেন বলে আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের উপসচিব জলিবাবু বলেন, ‘‘হাসপাতাল সুপার ও মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে বলেছি। ভবিষ্যতে যাতে সঠিক সময়ে বহির্বিভাগে চিকিৎসকেরা থাকেন, তা দেখতে বলা হয়েছে।’’ উত্তর দিনাজপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রঞ্জনকুমার মজুমদার বলেন, ‘‘সুপারের রিপোর্ট চেয়েছি। প্রয়োজনে এ দিন শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বহির্বিভাগের দায়িত্বে ছিলেন, তাঁকে শোকজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’

হাসপাতাল সূত্রের খবর, এ দিন বহির্বিভাগে বসার কথা ছিল হাসপাতালের শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ নীলাঞ্জন মুখোপাধ্যায়ের। নীলাঞ্জনবাবু জানান, ‘‘সুপারের কাছে ছুটির আবেদন জমা দিয়ে ব্যক্তিগত কাজে বাইরে ছিলাম।’’ নীলাঞ্জনবাবু যদি সত্যিই ছুটির আবেদন করে থাকেন, বা তাঁর ছুটি যদি মঞ্জুর করা হয়, তাহলে এদিন বহির্বিভাগে অন্য কোনও শিশুরোগ চিকিৎসক কেন ছিলেন না, সেই প্রশ্ন তুলেছেন অভিভাবকেরা। সুপার অনুপবাবু বলেন, ‘‘নথিপত্র না দেখে কোনও মন্তব্য করব না।’’

প্রতিদিনের মতো এ দিনও সকাল ৯টা থেকে হাসপাতালের শিশু বহির্বিভাগের শিশুদের নিয়ে অপেক্ষা করছিলেন অভিভাবকেরা। সাড়ে চার ঘণ্টা ধরে অপেক্ষার পরেও কোনও চিকিৎসক আসেননি বলে অভিযোগ। আন্দোলনকারীদের তরফে রায়গঞ্জের সুদর্শনপুর এলাকার বাসিন্দা বীথি মজুমদার বলেন, ‘‘জ্বরে আক্রান্ত আড়াই বছরের ছেলেকে নিয়ে প্রচণ্ড গরমের মধ্যে সকাল ৯টা থেকে অপেক্ষা করছি। অথচ চিকিৎসকের দেখা নেই। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতে এ দিন অসুস্থ শিশুরা পরিষেবা পেলেন না। অভিভাবকদের হয়রানি হল।’’

রায়গঞ্জের গোয়ালপাড়ার বাসিন্দা মমতা রায় বলেন, ‘‘ছেলে গত তিন দিন ধরে ঠিকঠাক খাচ্ছে না। আগেই হাসপাতাল কতৃর্পক্ষ চিকিৎসক থাকবে বলে দিলে আমাদের ভোগান্তি হত না। জরুরি বিভাগেও যেতে পারতাম।’’ এ দিন জলিবাবুর নেতৃত্বে প্রতিনিধি দল হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরে দেখেন।

হাসপাতাল সূত্রের খবর, হাসপাতালের ক্রিটিকাল কেয়ার ইউনিট (সিসিইউ) চালু হওয়ার তিন সপ্তাহের মধ্যে চিকিৎসকের অভাবে গত বুধবার থেকে বন্ধ করে দিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সিসিইউর কর্তব্যরত নার্সদের অন্য কোনও ওয়ার্ডে দায়িত্ব না দিয়ে বসিয়ে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ। এ দিন উপসচিব জলিবাবুর কাছে সিসিইউ কবে চালু হবে তা জানতে চাওয়া হলে তিনি মেজাজ হারিয়ে ফেলেন। তিনি বলেন, ‘‘আমি কোনও প্রশ্নের কোনও জবাব দেব না। আপনারা বেশি বিরক্ত করলে আমি প্রতিনিধি দলের সদস্যদের নিয়ে হাসপাতাল ছেড়ে চলে যাব।’’

health secretary jolly chowdhuri raiganj hospital raiganj hospital protest
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy