Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Pregnant Woman

Myth vs Fact: ছেলে হবে না মেয়ে, শরীরে ‘লক্ষণ’ দেখে কি আগে বলা যায়

বাড়িতে কোনও অন্তঃসত্ত্বা মহিলা থাকলেই তাঁকে ঘিরে নানা রকম কৌতূহল। কিছু লক্ষণ দেখেই আত্মীয়রা বলে দেন ছেলে হবে না মেয়ে। এ কি আদৌ সম্ভব?

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি। ছবি: সংগৃহীত

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ অগস্ট ২০২১ ১৭:৫৭
Share: Save:

আপনার পরিবারে এক খুদে সদস্য আসতে চলেছে, এমন খবর পাওয়ার পর থেকেই দেখবেন প্রচুর আত্মীয়স্বজন আপনাকে নানা রকম উপদেশ দেওয়া শুরু করছেন। সবচেয়ে বেশি কথোপকথন চলতে থাকবে শিশুর লিঙ্গ নিয়ে। ছেলে হবে না মেয়ে, সেই নিয়ে সকলেই নিজের মতো মতামত দেওয়া শুরু করছেন। মা-মাসিমারা নাকি আপনার কিছু ‘লক্ষণ’ দেখেই বলে দিতে পারেন, আপনার ছেলে হবে না মেয়ে। কিন্তু এই অনুমানগুলির কি কোনও রকম সত্যতা রয়েছে? বিজ্ঞান কী বলছে?

কখনও বোঝা সম্ভব

বিজ্ঞানের মতে, যে মুহুর্তে শুক্রাণুর সঙ্গে ডিম্বাণু মিলে যায়, তখনই গর্ভের শিশু বাবা মায়ের শরীর থেকে ২৩টি করে ক্রোমোজোম পেয়ে যায়। লিঙ্গ, চোখের মণির রং, চুলের রঙের মতো কিছু বৈশিষ্ঠ্য তখনই নির্ধানরণ হয়ে যায়। শিশুর যৌনাঙ্গ অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার ১১ সপ্তাহের মাথায় তৈরি হওয়া শুরু হয়। তবে আরও বেশ কিছুটা সময় না গেলে আলট্রাসাউন্ড পরীক্ষার মাধ্যমেও বোঝা সম্ভব নয়, যে শিশুটি ছেলে না মেয়ে। এখানে বলে রাখা ভাল যে, ভারতে আল্ট্রাসাউন্ডের পরীক্ষার মাধ্যমে শিশু লিঙ্গ নির্ধারণ করা আইনত অপরাধ। তাই আত্মীয়রা তাঁদের পুরাতন বিশ্বাসের উপরেই নির্ভর করে আন্দাজ করে থাকেন।

প্রচলিত ধারণাগুলি কী

বমির প্রবণতা

বলা হয় কোনও অন্তঃসত্ত্বা মহিলার যদি ‘মর্নিং সিকনেস’ বা বমির প্রবণতা বেশি হয়, তার মানে তার মেয়ে হবে। মেয়ে হলে শরীর হরমোনের ক্ষরণ বেশি হয়, তাই নাকি হবু-মায়েরা বমি করেন বেশি। ‘দ্য ল্যানসেট’ পত্রিকায় প্রকাশিত একটি সমীক্ষা এমন ইঙ্গিত ছিল বটে। কিন্তু তা ছাড়া এই নিয়ে খুব বেশি গবেষণা হয়নি।

ত্বকের জেল্লা

মেয়ে হলে নাকি মায়ের সৌন্দর্যে ভাগ বসায়। তাই অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় যদি আপনার চেহারা ফ্যাকাসে হয়ে যায়, তা হলে মেয়ে হবে ধরে নেন অনেকে। ছেলে হলে এমন কোনও সমস্যা থাকে না। বরং হবু মায়ের চেহারা আরও উজ্জ্বল হয়। এমনও বলা হয় যে ছেলে হলে মায়ের চুল লম্বা হবে, মেয়ে হলে চুল পড়ে যাবে বেশি। এই ধরনের ধারণার অবশ্য বৈজ্ঞানিক কোনও প্রমাণ এখনও পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

খাওয়ার ইচ্ছা

ছেলে হলে নাকি হবু মায়েদের নোনতা খাবার বা আচার খাওয়ার ইচ্ছে বেশি হয়। মেয়ে হলে মিষ্টি। খাওয়ার পছন্দ অপছন্দের সঙ্গে শিশুর লিঙ্গের কোনও যোগ রয়েছে কিনা, তা নিয়ে কোনও রকম গবেষণা এখনও করা হয়নি।

হার্ট রেট

ভ্রুণের হৃদস্পন্দর আল্ট্রাসাউন্ডে শোনা যায়। জনপ্রিয় বিশ্বাস অনুযায়ী, ১৪০ এর মতো হার্ট রেট হলে ছেলে এবং তার বেশি হলে মেয়ে। ‘ফিটাল ডায়াগনোসিস অ্যান্ড থেরাপি’তে প্রকাশিত এক গবেষণাপত্র অনুযায়ী অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় ছেলে বা মেয়ের হার্ট রেটে খুব একটা ফারাক বোঝা সম্ভব নয়।

পেটের আকার

অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় গর্ভ যদি খুব ঝুলে যায় তা হলে নাকি ছেলে হবে। তা না হলে মেয়ে। তবে বিজ্ঞান বলছে হবু মায়েদের গর্ভের আকার নির্ভর করবে তাঁর শারীরিক গঠন এবং ভ্রুণের আকারের উপর, লিঙ্গের উপর নয়।

ছেলে হবে না মেয়ে, সেই কৌতূহল থাকা ভাল। জন্মের সময়ে তা জানতে পারার নির্মম আনন্দ অতুলনীয়। তাই আত্মীয়দের বিশ্বাস বা অনুমানের ভিত্তিতে বাবা-মায়েদের প্রত্যাশা তৈরি না করাই ভাল। সুস্থ শিশুর জন্মই সকলের কাম্য।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE