Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
social site

সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি দিচ্ছেন রোজ? কী মারাত্মক অসুখ হতে পারে জানেন?

আমাদের জীবনে সোশ্যাল মিডিয়ার ক্ষতিকারক দিক কম নেই, সম্প্রতি একটি গবেষণা সেই পথে যোগ করল আরও একটি কাঁটা। ছবি পোস্টের স্বভাব থাকলে সাবধান হন এখনই।

সোশ্যাল মিডিয়ার হাত ধরে এক কল্প-বাস্তব জগতের বিপজ্জনক খাদে ডুবছে কৈশোর। ছবি: পিক্সঅ্যাবে।

সোশ্যাল মিডিয়ার হাত ধরে এক কল্প-বাস্তব জগতের বিপজ্জনক খাদে ডুবছে কৈশোর। ছবি: পিক্সঅ্যাবে।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০১৮ ১৫:১৮
Share: Save:

ঘন ঘন নিজস্বী তোলেন? ফেসবুক-টুইটারে ভাগ করেন নানা দিনের স্মৃতি? এমন মানুষ কিন্তু আমাদের চারপাশে কম নেই। বরং আধুনিক জীবনযাত্রা ও সোশ্যাল মিডিয়ার হাতছানির যুগে এ সব থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখাই দায়! আমাদের জীবনে সোশ্যাল মিডিয়ার ক্ষতিকারক দিক কম নেই, সম্প্রতি একটি গবেষণা সেই পথে যোগ করল আরও একটি কাঁটা।

যে সব মানুষ, বিশেষত মেয়েরা প্রায় প্রতি দিন সোস্যাল সাইটে নিজেদের ছবি দেন, অজান্তেই তাঁদের মনে জন্ম নেয় চেহারা নিয়ে সচেতনতা। ছবিতে নিজেকে ‘সুন্দর’ দেখানোর প্রতিযোগিতা, লাইক, কমেন্টসের খিদে তাঁদের অভ্যস্ত করে তুলছে ভুল ডায়েট ও অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসে। যে কারণে প্রয়োজনীয় খনিজ লবণ, পুষ্টিগুণ কিছুই পাচ্ছে না শরীর। ইউনিভার্সিটি অব পিটসবার্গের স্কুল অব মেডিসিনের গবেষণায় উঠে এল এমনই খতিয়ান।

দু’ধরনের মানুষকে নিয়ে এই গবেষণা চালানো হয়। দেখা গিয়েছে, যাঁরা নিয়ত সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেদের ছবি পোস্ট করেন ও তার প্রতিক্রিয়া দেখতে উদগ্রীব হন, তাঁরাই সব চেয়ে ভুল ডায়েট বাছেন ও অন্যদের চেয়ে ২.৬ গুণ শারীরিক ক্ষতির শিকার হন।

আরও পড়ুন: সামাজিক মাধ্যম কি অসামাজিক করে তুলছে আমাদের?

গুজব রুখতে নয়া দাওয়াই, সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেও হতে পারে জেল

এমনই আর এক সমীক্ষা চালান লস অ্যাঞ্জেলসে ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফর্নিয়ার ব্রেন ম্যাপিং সেন্টারও। তাদের পরীক্ষাতে দেখা গিয়েছে, এই স্বভাবে সব চেয়ে বেশি আক্রান্ত তরুণ প্রজন্ম, বিশেষ করে বয়ঃসন্ধির কিশোর-কিশোরীরা। সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেদের ছবি পোস্ট করার সময় ও তার প্রতিক্রিয়া কেমন এল তা দেখার যে মানসিকতা তাতে মস্তিষ্কের থ্যালামাস ও হাইপোথ্যালামাসকে উত্তেজিত করে। ডোপামিন জাতীয় নানা নিউরোট্রান্সমিটারের রাসায়নিক ক্রিয়ার ফলে ব্রেন রিওয়ার্ড সেন্টার উদ্দীপ্ত হয়। সোশ্যাল মিডিয়ায় অতিরিক্ত সক্রিয়তা এই রাসায়নিক বিক্রিয়াকে বাড়িয়ে দেয়। যা আবেগতাড়িত ভাবেও ক্ষতি করে মানুষের।

সমীক্ষা বলছে, যে মানুষ যত বেশি সোশ্যাল মিডিয়ায় আসক্ত তার দুর্বলতা, হতাশা এ সব বেশি। ছবি: পিক্সঅ্যাবে।

পাশ্চাত্যের ছবিটা এমন বলে আমাদের নিশ্চিন্ত থাকার কোনও কারণ নেই। তেমনটাই জানাচ্ছেন মনোবিদ জয়রঞ্জন রাম। তাঁর মতে, প্রতি দিন এমন অনেক রোগী আসেন, যাঁদের হতাশার মূল কারণ এই সোশ্যাল মিডিয়া। তাঁর মতে, এমনিতেই সোশ্যাল মিডিয়ায় কেউ পুঁইডাটার চচ্চড়ি খাওয়ার বা বাড়ির পাশের খালের ধার ধরে হাঁটার ছবি সচরাচর দেন না। সকলেই দেখাতে চান ‘আমি কত ভাল আছি’। আর আমার চেয়ে অন্যরা বেশি ভাল আছে, বেশি রোগা দেখাচ্ছে তাদের— এমন ভাবনা প্রবণতা এমনিতেই মানুষের যথেষ্ট। তার মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় হাতেগরম প্রমাণ দেখলে সে আরও তুলনায় চলে যায় মনে মনে। এই ভাবনা থেকেই ভুল ডায়েট, অস্বাস্থ্যকর খাবারে অভ্যস্ত হচ্ছেন তাঁরা। দেখা যাচ্ছে, যে মানুষ যত বেশি সোশ্যাল মিডিয়ায় আসক্ত তার দুর্বলতা, হতাশা এ সব বেশি। এমনকি, অন্য বন্ধুরা দূরে বেড়াতে গেলে কেন আমাকে বাড়ির কাছাকাছি নিয়ে যাওয়া হচ্ছে তা নিয়েও চলছে মা-বাবার সঙ্গে লড়াই। বলা যায়, সোশ্যাল মিডিয়া সংসারে সমস্যাও ডাকছে নানা রকম।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE