বহুতল আবাসনগুলিতে ভোটগ্রহণ কেন্দ্র তৈরি নিয়ে বুধবারের মধ্যে জেলা নির্বাচনী আধিকারিক (ডিইও)- রিপোর্ট দিতে বললেন ডেপুটি নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ ভারতী। মঙ্গলবার ৮ জন ডিইও-র সঙ্গে বৈঠক করেন জ্ঞানেশ। তিনি জানিয়েছেন, বুধবার দু’টি রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। একটি দিতে হবে ৩০০ জন ভোটার রয়েছেন এমন বহুতলের তালিকা। আরেকটি ৫০০ জন বা তার বেশি বহুতল-ভোটারের তালিকা নিয়ে রিপোর্ট দিতে হবে।
প্রসঙ্গত, রাজ্যের বহুতল আবাসনগুলিতে পৃথক ভোটকেন্দ্র তৈরি করার উদ্দেশ্যেই জেলাশাসক তথা জেলা নির্বাচনী আধিকারিক (ডিইও)-দের সঙ্গে সরাসরি বৈঠকে বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। ডিইও-দের সঙ্গে বৈঠক করতেই মঙ্গলবার কলকাতায় এসেছেন ডেপুটি কমিশনার ভারতী। এর আগে বহুতলে ভোটগ্রহণ কেন্দ্র তৈরি করা নিয়ে জেলাশাসকদের সময় বেঁধে দিয়েছিল কমিশন। নতুন ভোটগ্রহণ কেন্দ্র তৈরিতে কেন মাত্র দু’টি আবেদন জমা পড়ল, সেই প্রশ্নও উঠেছিল। কমিশন জানিয়ে দেয়, নতুন ভোটগ্রহণ কেন্দ্র তৈরি করা নিয়ে ডিইও-দের উদাসীন মনোভাব রয়েছে। এই কাজে তাঁদের সমীক্ষার অভাব রয়েছে বলেও জানায় কমিশন।
আরও পড়ুন:
কমিশনের তরফে এর আগে রাজ্যের সিইও-কে চিঠি পাঠিয়ে বলা হয়েছিল, ডিইও-দের নতুন করে সমীক্ষা করে আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রস্তাবিত বুথের তালিকা জমা দিতে হবে। অন্যথায় কড়া পদক্ষেপের হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়। ঘটনাচক্রে, বুধবারই সেই সময়সীমা শেষ হচ্ছে। তার আগেই চার ডিআরও-কে নিয়ে বৈঠকে বসেছিলেন নির্বাচন কমিশনের প্রতিনিধি ভারতী। কলকাতা এবং পার্শ্ববর্তী এলাকার বেশ কিছু বিধানসভা কেন্দ্রে গত দু’দশকে অভিজাত বহুতল আবাসনের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। রাজনৈতিক দলগুলির হিসাব বলছে, কলকাতার ক্ষেত্রে এই বহুতলবাসীরা মোট ভোটারের ৮-১০ শতাংশ। কিন্তু এই সব অভিজাত আবাসনের বাসিন্দাদের অনেকেই ভোটের দিনে নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত হয়ে ভোটকেন্দ্রে যান না বলে অভিযোগ।
সে কারণেই কলকাতা এবং পার্শ্ববর্তী এলাকার ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের ভাবনা ছিল, কোনও আবাসনে ৩০০-র বেশি ভোটার থাকলে সেই আবাসন চত্বরের ভিতর পৃথক ভোটকেন্দ্র তৈরি করে দেওয়া হবে। ২৫০টি পরিবার অথবা ৫০০ জন ভোটার রয়েছেন, এমন গ্রুপ হাউজ়িং সোসাইটি, কলোনি, বস্তি এলাকাতেও ভোটকেন্দ্র তৈরির বিষয়ে সমীক্ষা করতে হবে ডিইও-দের। যদিও শুরু থেকেই এই ভাবনায় আপত্তি জানিয়েছে তৃণমূল। গত মাসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেও মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমারকে জোড়া চিঠি লিখে প্রশ্ন তুলেছিলেন, বুথ সরকারি বা আধা-সরকারি জায়গায় হওয়াই দস্তুর, আবাসনে কী ভাবে ভোটকেন্দ্র হতে পারে? কিন্তু এ বিষয়ে নানা রাজনৈতিক দলের অবস্থান ভিন্ন হওয়ায় বিতর্ক সত্ত্বেও বহুতলে ভোটকেন্দ্র নিয়ে কোনও দলের সঙ্গে আলোচনা না-করার সিদ্ধান্ত নেয় কমিশন।