—প্রতীকী ছবি।
অস্ত্রোপচারেই শেষ নয়, সুস্থ হতে চাই অস্ত্রোপচার-পরবর্তী চিকিৎসা। এমনটাই মত বিশেষজ্ঞদের।
রবিবার স্পাইনাল কর্ড সোস্যাইটি অব ওয়েস্ট বেঙ্গলের অষ্টম সম্মেলনে উপস্থিত স্নায়ু, অস্থি এবং ফিজিক্যাল মেডিসিনের বিশেষজ্ঞেরা জানান, অস্ত্রোপচার তো বটেই, তার পরের এই চিকিৎসাও ততটাই গুরুত্বপূর্ণ।
চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, ১৫ থেকে ৩০ বছর বয়সের ছেলেদের মধ্যে মেরুদণ্ডের সমস্যা বেশি। পথ দুর্ঘটনা, মানসিক চাপ, দীর্ঘক্ষণ এক জায়গায় বসে থাকা-সহ নানা কারণে এই ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। অনেক ক্ষেত্রেই অস্ত্রোপচার করতে হয়। অস্ত্রোপচারের পরে অনেকেই পুরো সুস্থ জীবন ফিরে পান না। হাত-পা অসাড় হয়ে যায়, প্রাণে বাঁচলেও বাকি জীবনটা কাটে বিছানায় শুয়ে।
বিশেষজ্ঞদের মতে— অস্ত্রোপচারের পরে বাড়ি নয়, রোগীর যাওয়া উচিত স্পাইনাল কর্ড রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টারে। খুব জটিল অস্ত্রোপচার না হলে দিন তিনেক পরেই রোগীকে বিছানায় শুইয়ে না রেখে ওই পুনর্বাসন কেন্দ্রের জিমে পাঠানো উচিত। তাতে রোগীর সুস্থ হয়ে ওঠার সম্ভাবনা বাড়ে। এ ক্ষেত্রে চোটের গুরুত্বের উপরে রোগীর সেন্টারে থাকার সময়সীমা নির্ধারিত হয়। চিকিৎসকেরা জানান, ১৫ দিন থেকে তিন মাস পর্যন্ত সেন্টারে রাখা হয় রোগীকে। তাঁদের মতে, বাড়িতে ফিজিও থেরাপিস্টের হাতে মেরুদণ্ডের অস্ত্রোপচার হওয়া রোগীকে ছেড়ে দিলে অনেক সময়েই তাঁর সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়। কারণ, সেন্টারে প্রশিক্ষিত ও দক্ষ কর্মীরা রোগীকে যে ধরনের রোবোটিক থেরাপি করান তা বাড়িতে অসম্ভব।
চিকিৎসক মৌলিমাধব ঘটকের কথায়, ‘‘অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সচেতনতার অভাবে অস্ত্রোপচারের পর রোগীকে বাড়ি নিয়ে যান আত্মীয়রা। তাতে রোগীর সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা পিছিয়ে যায়। অস্ত্রোপচারের পরে রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টারে পাঠালে দ্রুত সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।’’
বিশেষজ্ঞদের মতে, রোগীকে দ্রুত সুস্থ করে তুলতে মেরুদণ্ডের চিকিৎসাকে এক ছাদের তলায় আনা জরুরি। দুর্ঘটনাগ্রস্তকে হাসপাতালে এনে তাঁকে মেরুদণ্ডের চিকিৎসার বিভাগে ভর্তি করা গেলে অস্ত্রোপচার এবং পরবর্তী চিকিৎসার পর্যায়গুলিও দ্রুত প্রয়োগ করা যাবে। স্নায়ুশল্য চিকিৎসক সুদীপ্ত চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘এ রাজ্যে এক ছাদের তলায় এই ধরনের চিকিৎসা পরিষেবা এখনও নেই। রাজ্যের সব হাসপাতালেই তা থাকা দরকার।’’ স্বাস্থ্য দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, রাজ্যে এমন চিকিৎসা-পরিকাঠামো গড়ে তুলতে রাজ্য সরকার আগ্রহী। এ নিয়ে বিভিন্ন হাসপাতালের সঙ্গে কথাও চলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy