এশিয়ার অন্যতম ধনী পরিবারগুলির মধ্যে একটি। ভারতের ধনকুবের পরিবার অম্বানীরা সব সময়েই জনগণের কাছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। তাঁদের জীবনযাপন নিয়ে আগ্রহের শেষ নেই সাধারণ মানুষের। তারকাদের একাংশও এই আগ্রহীদের দলে পড়েন। কিন্তু সেই পরিবারের সন্তানদের লালনপালনও কিন্তু আর পাঁচটা পরিবারের মতোই। খোদ নীতা অম্বানী সে কথা জানিয়েছিলেন সিমি গারেওয়ালকে।
নীতা এবং মুকেশ অম্বানী বিশ্বাস করেন, মধ্যবিত্ত ভারতীয়ের মূল্যবোধ থাকা দরকার ছেলেমেয়েদের মধ্যে। আর তাই আকাশ অম্বানী, ঈশা অম্বানী এবং অনন্ত অম্বানীকে সে ভাবেই বড় করেছেন তাঁরা। একটি ঘটনার উদাহরণ দিয়েছিলেন নীতা, যা থেকে তাঁদের অভিভাবকত্বের ঝলক মিলতে পারে।
আকাশ অম্বানী, অনন্ত অম্বানী এবং ঈশা অম্বানীর শৈশবের ছবি। ছবি: সংগৃহীত।
এক বার আকাশ তাঁদের বাড়ির নিরাপত্তারক্ষীর সঙ্গে তর্ক করছিলেন। সেটি চোখে পড়ে মুকেশের। নিরাপত্তারক্ষীর উপর চিৎকার করছিলেন তাঁর বড় ছেলে। মুকেশ সঙ্গে আকাশকে তাঁর খারাপ আচরণের জন্য ধমক দিয়ে নিরাপত্তারক্ষীর কাছে ক্ষমা চাইতে বলেন। আকাশও সঙ্গে সঙ্গে বাবার কথা মেনে নেন। ক্ষমা চান নিরাপত্তারক্ষীর কাছে। এ কথা স্পষ্ট, সমাজের সমস্ত শ্রেণির মানুষেক প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া, পরিবারের অহংয়ে বয়ে না যাওয়ার শিক্ষা দিতে চেয়েছেন নীতা এবং মুকেশ।
এর আগেও জানা গিয়েছিল, ছেলেমেয়েরা যখন ছোট, তখন সুযোগ পেলেই নীতা তাঁদের বাসে-ট্রেনে চাপাতেন। বাড়িতে একাধিক নামী দামি গাড়ি থাকা সত্ত্বেও তিনি সন্তানদের বাইরের দুনিয়ার সঙ্গে পরিচয় করাতে গণপরিবহণে ভ্রমণ করাতেন। নীতার বাবা-মা সান্তাক্রুজ়ে থাকতেন। দাদু-দিদার বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রথমে চার্চগেট পর্যন্ত যেতেন, সেখান থেকে ট্রেনে চড়তেন সবাই মিলে। তা ছাড়া নীতার মা মাঝেমধ্যে তাঁদের অহমদাবাদের বাড়িতে নিয়ে যেতেন আকাশ, ঈশা আর অনন্তকে। সে সময়ে গুজরাত মেল ট্রেনে করেই নিয়ে যেতেন। এমনকি তিন ভাইবোন ছোট থেকে নিজেদের ঘর নিজেরাই পরিষ্কার করতেন।
ছোট ছোট অভ্যাসের মাধ্যমেই সন্তানদের মাটিতে পা রেখে চলার উপদেশ দিয়ে এসেছেন নীতা। নয়তো যতই টাকাপয়সার অধিকারী হোন না কেন, ছেলেমেয়েদের মধ্যে মানসিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। আত্মবিশ্বাস, সমস্যার সমাধান করার ক্ষমতা, বাইরের দুনিয়ার বিষয়ে জ্ঞান আহরণ, উদারতা, মূল্যবোধ ইত্যাদি তৈরি হয়। তবেই কি না তারা পড়াশোনায়, কাজেকর্মে সফল হতে পারবে।