মনের মানুষ বা সময় কাটানোর সঙ্গী খোঁজার জন্য ডেটিং অ্যাপ রয়েছে। মোবাইল বার্তালাপে কয়েক দিনের কথোপকথনে যে মানুষটিকে ভাল লাগল, হয়তো ভাবলেন সেই মানুষটির সঙ্গে মুখোমুখি দেখা করে পরিচয় আরও এগোবেন। কিন্তু মুখোমুখি সাক্ষাতে কথা তো এগলোই না, উল্টে দেখলেন এক অদ্ভূত অস্বস্তিকর নীরবতা থম মেরে রয়েছে মাঝখানে। দু’টি একটি প্রশ্ন আর তার জবাবে তাকে মোটেই টলানো যাচ্ছে না। ফলে পরিচয় এগনোর বদলে সম্ভাবনাময় বন্ধুত্বে সেখানেই ইতি পড়ল।
ডেটিং অ্যাপে আলাপের পরে সাক্ষাৎপর্বে এমন অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে অনেকেই পড়ে থাকবেন। যাপন সংক্রান্ত পরামর্শদাতা প্রিয়া পারুলেকর বলছেন, ‘‘কয়েকটি সহজ নিয়ম জানা থাকলে অস্বস্তিকর পরিস্থিতিকেও প্রাণবন্ত করে তোলা সম্ভব অধিকাংশ ক্ষেত্রে। ধরুন উল্টো দিকের মানুষটি চুপচাপ। সেক্ষেত্রে তাঁকে প্রশ্ন করলে লাভ হবে না। তিনি যদি অস্বস্তি বোধ করেন, তবে প্রশ্নের উত্তরও হবে ছোট। তা থেকে কথাবার্তা এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ কম। তাই তাঁকে প্রশ্ন করার বদলে নিজের কথা বলতে পারেন। তাতে তিনি ধীরে ধীরে সহজ বোধ করতে পারেন।’’

প্রথম সাক্ষাতে দেখলেন, অদ্ভূত অস্বস্তিকর নীরবতা থম মেরে রয়েছে মাঝখানে। ছবি: শাটারস্টক।
প্রিয়ার মতে, প্রথম সাক্ষাৎতের আড়ষ্টতা কাটানোর দায়িত্ব কোনও একজনকে নিতে হবে। যিনি সেই দায়িত্ব নেবেন তিনি কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখলে কাজটি সহজ হবে।
১। সঙ্গীর পছন্দের বিষয়: ডেটিং অ্যাপে পছন্দ-অপছন্দ, শখের কথা জানানো থাকে। সঙ্গীর পছন্দের বিষয়টি নিয়ে কথা শুরু করতে পারেন। ধরা যাক তিনি জানিয়েছেন, তিনি পাহাড়ে ট্রেক করতে ভালবাসেন। আপনি জানতে চাইতে পারেন, তিনি কোথায় কোথায় গিয়েছেন, কোনও বিশেষ জায়গার অভিজ্ঞতা কেমন ছিল ইত্যাদি।
২। দু’জনের যে পছন্দ মেলে: কথা বলার সময় নিশ্চয়ই এমন কোনও বিষয় খেয়াল করেছেন, যা দু’জনেরই পছ্ন্দ। সেই বিষয়েও কথা শুরু করতে পারেন।
৩। কোনও মজাদার কাহিনি: তাতেও কাজ না হলে মজাদার কোনও ঘটনার কথা জানাতে পারেন। হতে পারে এমনই কোনও সাক্ষাতে গিয়ে আপনার কোনও অদ্ভুত অভিজ্ঞতা হয়েছিল। সেই অভিজ্ঞতার গল্প বলতে পারেন।

কী দেখে আপনার ভাল লেগেছিল, তা-ও বিস্তারে জানাতে পারেন। ছবি: ফ্রিপিক।
৪। প্রশংসা: সঙ্গীর ডেটিং প্রোফাইল নিয়েও কথা বলতে পারেন। সেই প্রোফাইলে কী দেখে আপনার ভাল লেগেছিল, তা-ও বিস্তারে জানাতে পারেন। পরে জানতে চাইতে পারেন, আপনার কোন বিষয়গুলি সঙ্গীর ভাল লেগেছিল।
৫। ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা: নিজের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা জানাতে পারেন। হয়তো দেখলেন, তিনিও তাঁর পরিকল্পনার কথা জানাচ্ছেন, এ ভাবেও কথা এগোতে পারে।
এর কোনওটিতেই কাজ না হলে আরও একটি বিষয় চেষ্টা করে দেখতে পারেন। মনোদিন রিমা ভান্ডেকর বলছেন, ‘‘অল্প বয়সে একটি ক্যুইজ়ের খেলা অনেকেই খেলে থাকবেন। সেই ক্যুইজ়ের কোনও ঠিক-ভুল উত্তর হয় না। প্রশ্ন করা হয় সাধারণত দু’টি বিকল্প দিয়ে। যেমন— পাহাড় না সমুদ্র? রঙিন না সাদাকালো? বা সিনেমা দেখা না বই পড়া— ইত্যাদি। এর থেকে উল্টো দিকের মানুষটির ভাললাগা আর পছন্দেরও একটা আন্দাজ পাওয়া যায়। যা কথোপকথন এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করে।’’