শিশু অস্থির। পড়াশোনায় মন নেই। জেদ ক্রমশ বাড়ছে। অভিভাবকদের এমন নানা অভিযোগ রয়েছে। কড়া হাতে শাসন করতে গিয়ে হিতে বিপরীতও হচ্ছে। এতে সন্তান আরও বেশি অসহিষ্ণু হয়ে পড়ছে, অবসাদও গ্রাস করছে অনেককে। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে কোনও কাউন্সেলিংয়ের প্রয়োজন নেই। বাবা-মায়েরাই তা পারেন। সে জন্য রোজ সকালে অন্তত ১০ মিনিট ধ্যান বা মেডিটেশনের অভ্যাস করাতে পারলে ভাল হয়।
কী কী ধরনের মেডিটেশন করানো যেতে পারে?
শিশুর বয়স অনুযায়ী ধ্যানের পদ্ধতি বাছতে হবে বাবা-মাকে। ৫ থেকে ৯ বছর বয়সে মাইন্ডফুল ব্রিদিং, মাইন্ডফুল লিসেনিং, কপালভাতি ইত্যাদি অভ্যাস করাতে পারেন।
মাইন্ডফুল ব্রিদিং
ফিটনেস প্রশিক্ষক অনুপ আচার্য জানাচ্ছেন, ছোটদের অনুলোম-বিলোম করাতে পারেন। শ্বাস নেওয়া এবং ছাড়ার মাধ্যমে শরীরের উপরে নিয়ন্ত্রণ বাড়বে, মন শান্ত হবে, চিন্তাভাবনাও কেন্দ্রীভূত হবে।
মাইন্ডফুল লিসেনিং
বিভিন্ন শব্দ, যেমন পাখির ডাক, বৃষ্টির শব্দ, কোনও বাজনা ইত্যাদির দিকে ছোটদের মনোযোগ দিতে বলা হয়। এতে একাগ্রতা বাড়ে।
আরও পড়ুন:
কপালভাতি
শান্ত হয়ে পদ্মাসনের ভঙ্গিতে বসতে বলুন সন্তানকে। চোখ বন্ধ রেখে প্রথমে স্বাভাবিক ভাবে শ্বাস নেবে। তার পরে মুখ দিয়ে শ্বাস নিয়ে কিছু ক্ষণ ধরে রাখতে হবে। ধীরে ধীরে নাক দিয়ে শ্বাস ছাড়তে হবে। এই প্রক্রিয়া ২০ বার করে করতে হবে। এতে স্মৃতিশক্তি বাড়বে, মন স্থির হবে। ধৈর্যও বাড়বে।
কী কী লাভ হবে সন্তানের?
একাগ্রতা বাড়বে
ধ্যান শিশুদের মনোযোগ বাড়ায়। এতে একটানা দীর্ঘ ক্ষণ পড়াশোনা, সৃজনশীল কাজকর্মে মনোনিবেশ করতে পারে।
মানসিক চাপ কমায়
প্রশিক্ষকের মতে, ছোট থেকে শিশুদের ধ্যানের অভ্যাস করাতে পারলে পরবর্তী সময়ে গিয়ে আবেগ নিয়ন্ত্রণ, রাগ-উত্তেজনা প্রশমন করতে পারবে নিজেই। সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতাও তৈরি হবে।
আত্মসচেতনতা বাড়বে
মন শান্ত ও ধীরস্থির হবে শিশুর। আত্মবিশ্বাস বাড়বে। ব্যক্তিত্ব গঠনেও সহায়ক হবে।
ইতিবাচক মনোভাব
নিয়মিত মেডিটেশনে ইতিবাচক মনোভাব তৈরি হবে। ‘অ্যাটেনশন ডেফিসিট হাইপারঅ্যাক্টিভিটি ডিজ়অর্ডার’ অর্থাৎ এডিএইচডিতে আক্রান্ত শিশুর জন্যও কার্যকরী হতে পারে ধ্যান। এতে অটিস্টিক শিশুদের মানসিক সক্রিয়তা বাড়ানোও সম্ভব হবে।