স্বাস্থ্যকর খাবারের সেরা ঠিকানা ‘কাফে প্রাণা।’
পুজোর চার দিন তো বটেই, তারও আগে থেকে যখন ইচ্ছে তখন জমিয়ে খাব চেটেপুটে— অথচ তার জন্যমেদ বাড়ছে ভেবে কোনও অপরাধ বোধও থাকবেনা। এমন আবার হয় না কি!
তবে এ বার এমনটাই হতে চলেছে। সৌজন্যে ‘কাফে প্রাণা’। যাঁরা ক্যালোরি নিয়ে দিবারাত্র মাথা ঘামান, তাঁদের ডাইন আউটের ঠিকানা এ বার হতেই পারে এই কাফে। শরীর-স্বাস্থ্য ও মেদের কথা মাথায় রেখে এমন এক কাফের কথা ভেবেছেন শেফ রাহুল অরোরা।
আর পাঁচটা কাফের থেকে এর একটা মূলগত তফাত আছে। কলকাতাবাসীর জিভ ভাজাভুজি পছন্দ করলেও ভাল থাকার আকাঙ্ক্ষায় রসনাকে সংযত রাখতে হয়। কিন্তু এ দিকে ভাল থাকার অন্যতম পাসওয়ার্ড জিভে জল আনা খাবারদাবার! কাঁহাতক আর শুকনো মুখে সুপ আর শসার স্যালাড খেয়ে দিন কাটানো যায়। সেই ভাবনা থেকেই একেবারে ভিন্ন স্বাদের কিছু মেনু সৃষ্টি করেছেন রাহুল।
আরও পড়ুন: রেস্তরাঁর মটন তৈরি হোক আপনার রান্নাঘরেই
পাখির চোখের মতোই ছোট্ট আর উজ্জ্বল, কিন্তু ঝালে ভুতো জালোকিয়ার তুতো ভাই। ভুতো জালোকিয়ার সঙ্গে জিভের পরিচয় না থাকলেও, নামের সঙ্গে জান-পহেচান আছে অনেক ভোজনরসিকেরই। বিশ্বের সবচেয়ে ঝাল লঙ্কা, যার বাস অরুণাচল।
কাফের বাগানে এই লঙ্কার নাম ‘বার্ডস আই’। বালিগঞ্জ ফাঁড়ি থেকে হাজরার দিকে গেলে রিচি রোডের মোড়েকাফেপ্রাণার একচিলতে বাগান। ঝাঁকড়া গাছে পাতার ফাঁকে ফাঁকে ঝুলছে সারি সারি খুদে লঙ্কা। বাঁদিকে সবুজ একচিলতে উঠোনে আড্ডা জোন। পাশে পেঁপেগাছ ফুলে ভরা, কয়েকটা ছোট্ট পেঁপেও সঙ্গ দিচ্ছে।
বাঁ দিকের দরজা ঠেলে ভিতরে ঢুকলেই মনটা জুড়িয়ে যাবে। ছোট্ট সুন্দর আড্ডা-ঘর, সঙ্গে এলাহি খাবারের আয়োজন। শুধু ফরমায়েশের অপেক্ষা। বললে কিছুক্ষণের মধ্যেই হাজির ঠান্ডা ঠান্ডা স্মুদি আরগরমা গরম সুরভিত চায়ের সঙ্গতে জিভে জল আনা খাবারদাবার। এই কম্বিনেশন দিতে পারে কাফে প্রাণা। আসলে অসুস্থ বাবার দেখভালের জন্য পাঁচতারা হোটেলের চাকরি ছেড়ে কলকাতায় প্রত্যাবর্তন। কিন্তু ঘরে বসে থাকলে সংসার কীসে চলবে! ভেবেচিন্তে বালিগঞ্জ ফাঁড়িতে ধাবার পাশে কাফে প্রাণার যাত্রা শুরু হল ২০১৪–র ১৪ নভেম্বর, শিশু দিবসের দিন। এর কিছুদিনের মধ্যেই জায়গা বদল। রাস্তার কোলাহল ছেড়ে আড্ডা দেওয়ার আপাত নির্জন জায়গা বেছে নিলেন রাহুল।
আরও পড়ুন: পুজোর রান্নায় থাকুক বনেদিয়ানার ছোঁয়া
আগে একা হাতেই সব কিছু সামলাতেন, এখন সাহায্য করার জন্য আছেন বেশ কয়েক জন। দরজা ঠেলে ভিতরে ঢুকতেই উষ্ণ আপ্যায়ন। কিছুক্ষণের মধ্যেই হাজির ঠান্ডা ঠান্ডা ব্লুবেরি স্মুদি। ইচ্ছে হলে পাবেন স্ট্রবেরি-সহ নানা ধরণের স্মুদি। যাঁরা চিনি মেশানোর ভয়ে স্মুদির স্বাদে বঞ্চিত, তাঁরাও নির্ভয়ে চুমুক দিতে পারেন চিনির নামগন্ধহীন এই ঠান্ডা শরবতে। বাজার ঢুঁড়ে খুঁজে আনা ব্লুবেরি, স্ট্রবেরি, ব্ল্যাকবেরি বা কমলালেবুর তৈরি শরবত একেবারেই কাফে প্রাণার নিজস্ব রেসিপি। দই কিংবা ইয়োহোগার্টএর সঙ্গে ফলের মেলবন্ধনে বানানো শরবতের ওপরে তাজা পুদিনা ভাসছে, এক অসাধারণ সুন্দর স্বাদ। অথচ নেই বাড়তি ক্যালোরিরও ভয়।
লো ক্যালোরির মেনুর কারণ জিজ্ঞাসা করতে রাহুলের উত্তর,‘‘এখন মানুষের স্বাস্থ্য সচেতনতা আগের থেকে অনেক বেড়েছে। অথচ খাবার আকাঙ্ক্ষা পুরোদমে আছে। মনপসন্দ খাবার না পেলে ডিপ্রেশন হতে পারে। আবার ডিপ্রেশন কাটানোর এক বড় দাওয়াই ইটিং আউট। এই সব ভেবে চিন্তেই হেলদি ফুড তৈরির সিদ্ধান্ত।’’
যদিও ইদানীং অবসরের সময় অনেক কমে গিয়েছে, সকলেই তুমুল ব্যস্ত।তবুও বন্ধুদের সঙ্গে বসে দু’দণ্ড আড্ডা দিতে কার না মন চায়। আর জমিয়ে গল্প কি খাবার ছাড়া জমে!
কাফে প্রাণার বেশিরভাগ রান্নায় তেলও নামমাত্র। তাও আবার অলিভ অয়েলে রান্না। ইদানীং পুষ্টিবিজ্ঞানীরা রোজকার ডায়েটে কুইনো সিড রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন। সামগ্রিক ভাবে সুস্থ থাকতে কুইনো সিড উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেয়। তাই এখানকার অনেক মেনুতেই আছে সেরা কুইনো সিডের ব্যবহার। আর স্বাদে লা জবাব।
কাফে প্রাণার সিগনেচার ডিশের কয়েকটা হল ‘ফ্রুট অফ দ্য ফরেস্ট’( ১৭৯ টাকা), ‘মেক্সিকান কুইনো বোল’( ২২৯ টাকা), তাজা বেসিলের গন্ধে ভরা ‘মাইনসড চিকেন হট বেসিল’( ২২৯), রোস্ট করা সাদা তিল, শশার দানা আর তরমুজের বিজ ছাড়িয়ে সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ান আঙুরের মিলমিশে তৈরি ‘গ্রেপ মেলন স্যালাড’— যা না খেলে পস্তাতে হবে। আছে হরেক কিসিমের সুগন্ধী চা।গরম আর ঠান্ডা দু’রকমেরই। দু’জনে পেট ও মন ভরে খেলে মেরে কেটে খরচ হবে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। পুজোয় খোলাও থাকবে মাঝ রাত পর্যন্ত।
ম্যাডক্স স্কোয়ারের পুজো দেখতে গিয়ে কাফে প্রাণায় ঢুঁ মারলেই আড্ডা জমে জমজামাট!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy