Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
skin

গর্ভাবস্থায় রাসায়নিক প্রসাধন নয়, স্ট্রেচমার্ক ও চুলের নানা সমস্যা এড়াতে মেনে চলুন এ সব

বিশেষ কিছু নিয়মে পরিচর্যা করাই একমাত্র উপায়। কেমন হবে তা?

গর্ভাবস্থায় ত্বক ও চুলের যত্নে বিশেষ যত্নবান হওয়াটা খুবই জরুরি। ছবি: শাটারস্টক।

গর্ভাবস্থায় ত্বক ও চুলের যত্নে বিশেষ যত্নবান হওয়াটা খুবই জরুরি। ছবি: শাটারস্টক।

সুজাতা মুখোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০১৯ ১৫:৩০
Share: Save:

গর্ভাবস্থায় নানা রকমের সমস্যা হানা দেয় অনেকের ত্বকে। সাধারণত এই সময় অনেকের ক্ষেত্রে ত্বক নরম হয়, ত্বকে জেল্লা আসে, কারও আবার রুক্ষ হয়। ব্রণ হয়। ত্বক শুকিয়ে কালো–বাদামী ছোপ ধরে৷ শুধু মুখেই নয়, গর্ভাবস্থায় তলপেটেও অনেকের স্ট্রেচ মার্ক পড়ে। দেখা দেয় কালো দাগ৷

শুধু ত্বকই নয়, চুলের বিষয়েও এক এক জনের অভিজ্ঞতা এক এক রকম হয়। কারও চুল ঘন ও চকচকে হয় এই সময়৷ আবার কারও ক্ষেত্রে পাতলা হয়ে যায়৷ মুখে–পেটে অবাঞ্ছিত রোম ওঠে৷ চিকিৎসকদের মতে, এতে ভয়ের কিছু নেই হরমোনের কারণেই এমনটা ঘটে। প্রসবের পর ধীরে ধীরে সব ঠিকও হয়। তবে এই সময় নিজের কিছু বিশেষ পরিচর্যা নিলে গর্ভাবস্থাতেও কোনও রকম পরিবর্তন খুব একটা আসে না। ত্বক ও চুলের দীর্ঘমেয়াদী সমস্যা না আসায় প্রসব পরবর্তী সময়ে সে সব নিয়ে চিন্তাতেও পড়তে হয় না।

তবে এই সময় ত্বক ও চুল খুব স্পর্শকাতর হয়ে ওঠে। তাই ত্বক ও চুলের যত্নে বিশেষ যত্নবান হওয়াটা খুবই জরুরি। ঘন ঘন রাসায়নিকের ব্যবহার এই সময় বেশি ক্ষতি করে। তাই বিশেষ কিছু নিয়মে পরিচর্যা করাই একমাত্র উপায়। কেমন হবে তা?

আরও পড়ুন: সন্তানের পড়া মনে রাখার ক্ষমতা থেকে তার বুদ্ধিমত্তা, সবই বাড়বে এ সব কৌশলে

স্নানের পর গায়ের জল আলতো করে মুছে ময়েশ্চারাইজার লাগান। বা এক মগ জলে দু’–চার ফোঁটা তেল মিশিয়ে গায়ে ঢালুন। তার পর হালকা করে মুছে নিন। ত্বক নরম থাকবে। নতুন কোনও প্রসাধনী ব্যবহার করবেন না। পুরোনো প্রসাধনীতে অ্যালার্জি হলে সঙ্গে সঙ্গে ত্বক বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে তা বদল করুন। নিজের সিদ্ধান্তে এক ব্র্যান্ড ছেড়ে অন্য ব্র্যান্ডের ব্যবহার শুরু করে দেবেন না। নাকে, কপালে, গালে, চিবুকে বাদামী প্যাচ হলে কনসিলার দিয়ে ঢেকে দেওয়া আর সানস্ক্রিন মাখা ছাড়া আপাতত আর কিছু করার নেই৷ ব্রণ হলে মুখে–মাথায় তেল দেবেন না৷ অয়েল ফ্রি ফেস ওয়াশ, ময়েশ্চারাইজার ও সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন৷ চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনও মলম লাগাবেন না৷ বন্ধ রাখুন যে কোনও রকমের ফেসিয়াল ও কেমিক্যাল ট্রিটমেন্ট। নখ ভঙ্গুর হয় কারও৷ একটু যত্নআত্তি করলে সমস্যা আরও কম থাকে। ত্বক স্পর্শকাতর হয়ে যায় অনেকের৷ চড়া রোদে বেরলে সমস্যা হতে পারে। সমস্যা কমাতে পর্যাপ্ত জল ও তরল জাতীয় খাবার, যোমন স্যুপ, ডাবের জল, ফলের রস, ডালের জল ইত্যাদি খান। সানস্ক্রিন লাগান, হাত–পা ঢাকা পোশাক পরুন। এই সময় চুল শুকিয়ে যেতে পারে, ফাটতে পারে। তেলতেলে চুল আরও তৈলাক্ত হতে পারে। ভাল সংস্থার নরম শ্যাম্পু ও প্রয়োজনে কন্ডিশনার ব্যবহার করুন৷ খুব বেশি আঁচড়াবেন না৷ রং বা কোনও রকম কেমিক্যাল ট্রিটমেন্টও এই সময় করবেন না।

আরও পড়ুন: শীতে এই এক উপাদানেই বাজিমাত! ফাটবে না ত্বক, থাকবে নরম ও উজ্জ্বল

স্ট্রেচ মার্ক কমাতে

দিনে কম করে ৮–১০ গ্লাস জল খান৷ তেষ্টা পেলে আরও খেতে হতে পারে। ভিটামিন এ, সি ও ই সমৃদ্ধ খাবার, যেমন, পালং, টক ফল, বাদাম, গাজর, মিষ্টি আলু, ডিম, চিজ, দুধ, ঠান্ডায় জমানো সব্জি, কুমড়ো ইত্যাদি খান৷ গরম কাল হলে কাঁচা আম ও পাকা আম দুই-ই রাখুন ডায়েটে। ক্রিম বা তেল মেখে ত্বক নরম রাখুন, যাতে পেটের আকার বড় হওয়ার সময় ত্বকে চাপ কম পড়ে। সাধারণ ময়েশ্চারাইজার বা ক্রিমের চেয়ে ভাল কাজ করে নারকেল–তিল বা ক্যাস্টর অয়েল। ভেজা ত্বকে আলতো করে মালিশ করুন যে কোনও একটি তেল। সপ্তাহে ২–৩ বার উষ্ণ জলে শরীর ভিজিয়ে স্ক্রাবারে সাবান দিয়ে হালকা করে ঘষে নিন। ভেজা ত্বকে লাগান ময়েশ্চারাইজার। ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা বজায় রাখতে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মতো হালকা ব্যায়াম করুন। স্ট্রেচমার্ক পড়ে গেলে নারকেল তেল লাগান৷ চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে গ্লাইকোলিক অ্যাসিড বা রেটিনল মেশানো মলমও লাগাতে পারেন৷ তা ছাড়া, প্রসবের পর দাগ এমনিতেই আস্তে আস্তে রূপোলি হয়ে যায়৷ খুব অসুবিধে হলে পরবর্তীকালে প্লাস্টিক সার্জারি করে নিতে পারেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE