দেশ জুড়েই ব্যক্তিগত তথ্য লেনদেনের কারবার এই মুহূর্তে রমরমিয়ে চলছে, অভিযোগ এমনই। যেখানে শুধু মোবাইল নম্বর বা ঠিকানাই নয়, টাকা দিতে পারলে মিলে যায় কারও ইমেল আইডি, আধার বা ভোটার কার্ডের নম্বরও। এমনকি, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বাৎসরিক কত আয়ের শ্রেণিতে পড়েন বা তাঁর বিমা করানো রয়েছে কিনা এবং সেটির নমিনিই বা কে, সেই তথ্যও সহজলভ্য! আর এ সবের সূত্র ধরেই ফের এক বার প্যান কার্ড ও আধার কার্ডে জালিয়াতি বেড়েছে। বিশেষ করে নতুন ‘প্যান ২.০ স্ক্যাম’ নিয়ে সতর্ক করছে জাতীয় সাইবার নিরাপত্তা বিভাগ।
‘প্যান ২.০ স্ক্যাম’ কী?
ভুয়ো ইমেলে আয়কর দফতরের ওয়েবসাইটের নকল লিঙ্ক দিয়ে প্যান ও আধারের নম্বর জেনে নিচ্ছে প্রতারকেরা। সরকারি নানা ওয়েবসাইটের ভুয়ো আইডি দিয়ে যাচাই করে নিচ্ছে গ্রাহকের প্যান কার্ডের নম্বর। সেই সূত্রেই চলছে সাইবার জালিয়াতি ও আর্থিক প্রতারণা। সাইবার নিরাপত্তা বিভাগ জানিয়েছে, হ্যাকারেরা সরকারি ওয়েবসাইটের আইডি নকল করে সেখান থেকে ইমেল পাঠাচ্ছে। তাতে গ্রাহকের প্যান কার্ড, আধার কার্ড ও ব্যাঙ্কের তথ্য জানতে চাওয়া হচ্ছে। প্যান কার্ড আপডেট করার পরামর্শও দেওয়া হচ্ছে। এমনও বলা হচ্ছে, নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে পুরনো প্যান নতুন প্যান ২.০-তে আপডেট না করলেই তা বাতিল হয়ে যাবে। নানা ভাবে ভয় দেখিয়ে গ্রাহকের ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে। প্রতারকেরা কৌশলে জেনে নিচ্ছে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের বিস্তারিত তথ্যও। তার পরেই সর্বস্বান্ত করে দিচ্ছে গ্রাহককে।আয়কর দফতরের তরফ থেকে বা উচ্চপদস্থ আধিকারিকের পরিচয় দিয়েও ভুয়ো ইমেল পাঠাচ্ছে সাইবার অপরাধীরা। ফলে সহজেই বিভ্রান্ত হয়ে পড়ছেন সাধারণ মানুষ।
আরও পড়ুন:
বাঁচার উপায় কী?
১) যদি দেখেন আপনার মেলবক্সে অচেনা কোনও আইডি থেকে লিঙ্ক পাঠানো হয়েছে, তা হলে তা ক্লিক করবেন না। যতই প্রলোভন দেখানো হোক, ইমেলে অজানা আইডি থেকে আসা কোনও ওয়েবসাইটের লিঙ্ক খোলা উচিত হবে না।
২) সরকারি কোনও দফতরের ওয়েবসাইট বা আয়কর দফতরের ওয়েবসাইট থেকে প্যান আপডেট করার লিঙ্ক পাঠানো হলে,বুঝবেন সেটি ভুয়ো। কোনও সরকারি দফতর থেকেই প্যান বা আধারের তথ্য আপডেট করার বা ব্যক্তিগত তথ্য চেয়ে ইমেল পাঠানো হয় না।
৩) ই-প্যান কার্ড ডাউনলোড করতে বলে যদি কোনও লিঙ্ক পাঠানো হয়, তবে ভুলেও সেটি ভুলবেন না। এই ধরনের লিঙ্কে ‘ম্যালঅয়্যার’ইনস্টল করা থাকে, যা আপনার ডিভাইসে ঢুকে ব্যক্তিগত সমস্ত অ্যাকাউন্টের দখল নিয়ে নিতে পারে।
আরও পড়ুন:
৪) সরকারি দফতরের ইমেলের ডোমেন সবসময়ে .ইন, .গভ.ইন অথবা .এনআইসি.ইন দিয়ে শেষ হয়।
৫) যে সাইটটি খুলছেন, তার ইউআরএল-এ ‘এইচটিটিপিএস’ আছে কি না, দেখতে হবে। কোনও ওয়েবসাইটে যদি ‘এইচটিটিপি’-র সঙ্গে ‘এস’ না থাকে, তা হলে বুঝতে হবে, সেই ওয়েবসাইটটি ভুয়ো। সেখানে গিয়ে কোনও রকম ব্যক্তিগত তথ্য দেবেন না। আধার বা প্যান কার্ডের নম্বর তো একেবারেই নয়।
৬) নিজের ইমেল বা ব্যক্তিগত অ্যকাউন্টগুলিতে ‘টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন’ চালু করে রাখুন, এতে নিরাপত্তা অনেকটাই বাড়বে।