Advertisement
০৬ ডিসেম্বর ২০২৪

হাতের লেখায় লুকিয়ে মনখারাপের হদিস

চল্লিশোর্ধ্ব মহিলা ক্রনিক অ্যাজমায় ভুগছিলেন। অনেক চিকিৎসকের দ্বারস্থ হয়েও সুফল মেলেনি। শেষ পর্যন্ত তাঁর হাতের লেখা দেখে বোঝা গিয়েছিল, ওই মহিলার অ্যাজমা হয়ইনি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০১৯ ০০:৩৩
Share: Save:

চল্লিশোর্ধ্ব মহিলা ক্রনিক অ্যাজমায় ভুগছিলেন। অনেক চিকিৎসকের দ্বারস্থ হয়েও সুফল মেলেনি। শেষ পর্যন্ত তাঁর হাতের লেখা দেখে বোঝা গিয়েছিল, ওই মহিলার অ্যাজমা হয়ইনি। পারিবারিক কারণে দিনের পর দিন উদ্বেগে, উৎকণ্ঠায় থাকতেন তিনি। আর তার জেরেই শ্বাসকষ্টে ভুগতেন তিনি।

সম্পর্কে সমস্যাজনিত কারণে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন সরকারি হাসপাতালে কর্মরত এক চিকিৎসক। এক সময় আত্মহত্যা করার কথাও ভেবেছিলেন। আর তাঁর সেই আত্মহত্যাপ্রবণ মানসিকতা ফুটে উঠেছিল হাতের লেখায়। অবশেষে সেই হাতের লেখার সূত্র ধরেই মানসিক অবসাদের চিকিৎসা করাতে শেষ পর্যন্ত সুস্থ জীবনে ফিরতে পারেন তিনি।

হাতের লেখা বিশ্লেষণ করে বা ‘ক্লিনিক্যাল গ্রাফোলজি’র মাধ্যমে রোগীদের চিকিৎসা সম্পর্কিত সমস্ত হালহদিস বই আকারে প্রকাশিত হল রবিবার। উদ্বেগ, উৎকণ্ঠাজনিত রোগ কী ভাবে বাসা বাধে শরীরে, সে কারণে কারও মানসিক স্থিতি কী ভাবে টাল খায়, কী ভাবেই বা তার প্রতিফলন হয় হাতের লেখায়— গত ১৫ বছর ধরে রোগীদের উপরে গবেষণা চালিয়ে সেই সমস্ত তথ্য সংগৃহীত হয়েছে ‘সাইকোসোম্যাটিক ডিজ়অর্ডার অ্যান্ড হ্যান্ডরাইটিং’

নামের ওই বইয়ে। প্রায় ১৫ হাজার রোগীর উপরে গবেষণা চালানো হয়েছিল। সংগ্রহ করা হয়েছিল তাঁদের হাতের লেখা। রোগের আগে এবং রোগ সময়ে তাঁদের হাতের লেখা কী ভাবে পাল্টে গিয়েছে, তারই পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্য সংগ্রহ করা হয়। তার মধ্যে থেকে ঝাড়াই-বাছাই করে ৩০টির মতো উদাহরণের উল্লেখ রয়েছে ওই বইটিতে।

বইয়ের লেখক, পেশায় ক্লিনিকাল গ্রাফোলজিস্ট স্বপনকুমার চন্দ্র বলেন, ‘‘এই বইয়ে মূলত উদ্বেগ, উৎকণ্ঠাজনিত রোগ ও সেই সূত্রে হাতের লেখা কী ভাবে পাল্টায়,

তার বাছাই করা গবেষণাগুলি ধরা হয়েছে। ভবিষ্যতে আরও বৃহত্তর ক্ষেত্রে গবেষণা করা হবে।’’ চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, মানসিক উদ্বেগের কারণে শরীরে কী রোগ বাসা বেধেছে, তার শিকড় খুঁজে বার করার অন্যতম উপায় হল গ্রাফোলজি। কারণ, যে কোনও মানুষের হাতের লেখা স্নায়ুনির্ভর। ফলে স্নায়বিক দৌর্বল্য দেখা দিলে তার কারণে হাতের লেখাও পাল্টাতে বাধ্য। বিশেষ করে দীর্ঘদিন ধরে উদ্বেগে থাকলে কোনো ব্যক্তির হাতের লেখার উপরে তা সরাসরি প্রভাব ফেলে। শুধু প্রাপ্তবয়স্কেরাই নন। পরীক্ষা বা কোনও কাজে ভাল ফল করতে হবে, সেই চাপে অল্পবয়সিদের হাতের লেখাও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ক্রমাগত পাল্টাতে থাকে। পরিবর্তিত সেই হাতের লেখায় মানসিক উৎকণ্ঠার সমস্ত চিহ্নই ধরা থাকে বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞেরা।

বইটি প্রকাশে সাহায্য করেছে যে সংস্থা, তার প্রধান গ্রাফোলজিস্ট মোহন বসু বলেন, ‘‘মানসিক অবসাদ, উদ্বেগ, উৎকণ্ঠায় হাতের রেখা বদলে যায়। ক্রমাগত উদ্বেগ, উৎকণ্ঠার কারণে শরীরে অনেক রোগ হয়। হাতের লেখা বিচার করে সেই সমস্ত রোগ চিহ্নিত করা সম্ভব। বিদেশে এ ধরনের বইয়ের অজস্র

উদাহরণ থাকলেও এ দেশে এই ধরনের বই এই প্রথম।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Health Sadness Mind Hand Writing
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy