ভেন্টিলেশন শব্দটির সঙ্গে জড়িয়ে থাকে আতঙ্ক। কোনও রোগীকে ভেন্টিলেশনে দেওয়া হয়েছে শুনলেই প্রমাদ গনা শুরু। কোভিডের সময়ে বাইপ্যাপ সাপোর্টের কথাও খুবই প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে। এটি এক ধরনের নন-ইনভেসিভ ভেন্টিলেশন সিস্টেম। কোভিড নিউমোনিয়ার ক্ষেত্রে, কিংবা সিওপিডি, ব্রঙ্কাইটিস, হার্ট ফেলিয়োর ইত্যাদি ক্ষেত্রে যখন রোগীর ফুসফুসের কার্যক্ষমতা তলানিতে এসে ঠেকে, তখনই চিকিৎসকেরা শরণাপন্ন হচ্ছেন এই কৃত্রিম ভেন্টিলেশনের।
ভেন্টিলেশনের নানা রকম
স্বাভাবিক উপায়ে শ্বাস-প্রশ্বাস চালিয়ে যাওয়া সম্ভব না হলে কৃত্রিম উপায়ে তা চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার নামই ভেন্টিলেশন। মেশিনের মাধ্যমে জোরে প্রেশার দিয়ে বাতাস বা অক্সিজেন শরীরে প্রবেশ করানো হয় এর মাধ্যমে। এই ভেন্টিলেশনের প্রধানত দু’টি ভাগ— ইনভেসিভ এবং নন-ইনভেসিভ। প্রথম ক্ষেত্রে নাক অথবা গলা দিয়ে একটি টিউব ফুসফুস পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়া হয়। এটিই ভেন্টিলেশনের আদি পদ্ধতি বা মেকানিক্যাল ভেন্টিলেশন। দ্বিতীয় উপায়ে নাক বা মুখে মাস্ক পরিয়ে তার মাধ্যমে প্রেশারাইজ়ড বাতাস প্রবেশ করানো হয়। এটিই নন-ইনভেসিভ ভেন্টিলেশন। এর আবার দু’টি ভাগ— সিপ্যাপ এবং বাইপ্যাপ। সিপ্যাপ অর্থাৎ কন্টিনিউয়াস পজ়িটিভ এয়ারওয়ে প্রেশার। মেশিনের মাধ্যমে অনবরত বাতাস ফুসফুসে পৌঁছে দেওয়া। যাঁরা ওবিস, বেশি নাক ডাকেন বা চর্বির কারণে স্বরনালি কোল্যাপ্স করে যায়, তাঁদের ক্ষেত্রে ঘুমোনোর সময়ে সিপ্যাপের ব্যবহার বেশ কার্যকর। ঘুমের মধ্যে যাতে দম আটকে না আসে, তাই এই ব্যবস্থা।
বাইপ্যাপের পুরো কথাটি হল, বাইলেভেল পজ়িটিভ এয়ারওয়ে প্রেশার। সিপ্যাপের সঙ্গে এর প্রধান পার্থক্য, বাইপ্যাপে দু’ধরনের প্রেশার থাকে। শ্বাস নেওয়ার সময়ে একটু জোরে প্রেশারের মাধ্যমে অক্সিজেন প্রবেশ করে। আর শ্বাস ছাড়ার সময়ে অপেক্ষাকৃত কম প্রেশার লাগে। এই দু’ধরনের প্রেশারই মেশিনে অ্যাডজাস্ট করা যায়। কখনও ১০ এবং ২.৫ দিয়ে শুরু করা হয়, তার পরে রোগীকে পর্যবেক্ষণ করে প্রেশার বাড়ানো বা কমানো হয়ে থাকে। মেশিনে একটি সেন্সর দেওয়া থাকে, শ্বাস নেওয়া ও ছাড়ার সময়ে যাতে প্রেশার অ্যাডজাস্ট করা যায়। তবে বাইপ্যাপ খুলে নিলেই রোগীর দেহে অক্সিজেনের মাত্রা কমে গেলে তাকে মেকানিক্যাল ভেন্টিলেশনে দেওয়ার কথা ভাবেন চিকিৎসকেরা।
উন্নততর ব্যবস্থা
বাইপ্যাপে প্রেশার মেনটেন করা গেলেও একটা নির্দিষ্ট মাপের বেশি অক্সিজেন দেওয়া যায় না। মেডিসিনের চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদার জানালেন, কোভিড রোগীদের চিকিৎসায় বাইপ্যাপ তো বটেই, পাশাপাশি তাঁরা হাইফ্লো নেজ়াল অক্সিজেনের ব্যবহারও করছেন। ‘‘এতে মিনিটে ৫০ লিটার পর্যন্ত পিয়োর অক্সিজেন দেওয়া যায়। এটিও নন-ইনভেসিভ। একটি ছোট্ট হিটারও থাকে, যাতে খুব জোরে ঠান্ডা বাতাস ভিতরে প্রবেশ না করে,’’ বললেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy