• ডায়াবিটিস নিয়ন্ত্রণে: লবঙ্গের আর একটি উপাদান হল নাইজেরিসিন। বিভিন্ন পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে, এই উপাদানের জন্যই রক্ত থেকে শর্করা বিভিন্ন কোষে পৌঁছে দেওয়া, ইনসুলিন উৎপাদনকারী কোষগুলির কার্যক্ষমতা বাড়ানো ও ইনসুলিন নিঃসৃত হওয়ার পরিমাণ বাড়ানোর মতো কাজ ভাল ভাবে হয়। তাই মধ্য মাত্রার ডায়াবিটিস নিয়ন্ত্রণে লবঙ্গ ভাল কাজে দেয়।
• অ্যান্টি-ব্যাকটিরিয়া: সর্দি-কাশি, সাইনাসের ব্যথায় লবঙ্গ তেল মালিশের কথা অনেকেই জানেন। এর অ্যান্টি-ব্যাকটিরিয়া ও অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি গুণের জন্যই দাঁতের ব্যথায়ও এটি খুব উপকারী। নিয়মিত লবঙ্গ দেওয়া মাউথ ওয়াশ ব্যবহার করলে মাড়ি সুস্থ থাকে। ব্যাকটিরিয়ার হাত থেকে দাঁত বাঁচায়।
• পাকস্থলীর আলসারের নিরাময়ে: সংক্রমণ, স্ট্রেস বা জিনগত কারণে পেপটিক আলসার বা স্টমাক আলসারের সমস্যা বাড়ে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, লবঙ্গের এসেনশিয়াল অয়েল গ্যাসট্রিক মিউকাসের উৎপাদনে সাহায্য করে। এই মিউকাসই সংক্রমণের হাত থেকে পাকস্থলীকে রক্ষা করতে ঢাল হিসেবে কাজ করে।
• হাড়ের চিকিৎসায়: লো-বোন মাস এমন একটি অবস্থা, যা বয়োজ্যেষ্ঠদের মধ্যে অস্টিয়োপোরোসিসের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। কয়েকটি পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে, লবঙ্গের উপাদান হাড়ের জোর ও বোন ডেনসিটি বাড়াতে সাহায্য করে।
কী কী ভাবে খাওয়া যায়?
• সর্দি লাগলে লবঙ্গ দেওয়া চা হামেশাই খাওয়া হয়। গার্গল করার সময়ে জলে লবঙ্গ দিলে, ওর ঝাঁঝে অনেকটা উপশম হয়।
• গরম জলে পাঁচ মিনিট লবঙ্গ ফুটিয়েও সেই জল পান করা যায়।
• কাঁচা লবঙ্গ চিবিয়ে বা নুন মাখিয়ে খাওয়া যায়।
• মধুর সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়া যায়।
সতর্কতা
ডায়াটিশিয়ান কোয়েল পাল চৌধুরী সাবধান করলেন...
• অনেকে অকারণেই মুখে লবঙ্গ রাখতে পছন্দ করেন। অতিরিক্ত লবঙ্গ খেলে বিষক্রিয়ার ভয় থাকে।
• অতিরিক্ত লবঙ্গ রক্ত পাতলা করে দেয়। রক্ততঞ্চনেও অনেক সময়ে বাধা দেয়। হিমোফিলিয়া রোগীদের এ ক্ষেত্রে ভয় বেশি।
• যাঁদের সুগার কমে যাওয়ার প্রবণতা থাকে, তাঁদের ক্ষেত্রেও অতিরিক্ত লবঙ্গ হাইপোগ্লাইসিমিয়ার কারণ হতে পারে।
• লবঙ্গ বা লবঙ্গের তেলে অ্যালার্জি হচ্ছে কি না, নজর রাখতে হবে।
মনে রাখতে হবে, আদা, হলুদের মতো লবঙ্গের নানাবিধ ভেষজ গুণ নিয়ে প্রতিনিয়ত পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। তাই কোন রোগের নিরাময়ে এর কতটা ব্যবহার করবেন, তা চিকিৎসকের অনুমতি সাপেক্ষ।