নারদাটিভির স্টিং অপারেশনের পর থেকেই সারারাজ্য তোলপাড়।
কেউ ফুটছে উত্তেজনায়। তো কেউ উড়িয়ে দিচ্ছে নকল ভিডিয়ো বলে।
লুকিয়ে তোলা ছবির নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন ছিলই। তবে তার সুফলটাও ফেলে দেওয়ার মতো নয়!
শুধু তো দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনীতিবিদ বা আধিকারিকদের হাতে নাতে ধরার জন্য নয়, লুকোনো ক্যামেরা কাজে লাগতে পারে আপনার নৈত্যনৈমিত্তিক জীবনেও।
কী ভাবে?
ধরুন স্বামী-স্ত্রী দু’জনেই কাজে বেরিয়ে পড়েন সকালে। বাচ্চা থাকে আয়ার কাছে। সারভিলেন্স ক্যামেরা লাগিয়ে রাখুন, চাইলেই দেখে নিতে পারবেন বাচ্চা কেমন আছে। কিছুদিন আগে যেমন বাচ্চাকে মারার ছবি ধরা পড়েছিল ক্যামেরায়।
কিংবা কাজে বেরিয়ে পড়লে বাড়ি থাকে ফাঁকা। বাড়িতে বসিয়ে নিন ইনফ্রা রেড সেন্সর। যে কোনও অনভিপ্রেত ব্যক্তি বাড়ি ঢুকলেই নোটিফিকেশন পৌচ্ছে যাবে ফোনে।
নিজেই যখন গোয়েন্দা
ভিডিয়ো তোলার জন্য পিন হোল ক্যামেরা বা ছোট আকারের ক্যামেরার হাজার মডেল পেয়ে যাবেন বাজারে। টেডিবেয়ারের চোখে লাগানো ক্যামেরা থেকে পেনের ক্লিপে লাগানো খুদে ক্যামেরা — অনলাইনে পেয়ে যাবেন পাঁচশো থেকে হাজার টাকার মধ্যে। চাইলে রেকর্ড করে রাখতে পারেন বা কোনও কোনও মডেলে ওয়াইফাই দিয়ে সরাসরি দেখতে পারেন নিজের ফোনে।
ইনফ্রা রেড সেন্সর বসাতে অবশ্য আর একটু খরচ করতে হবে। লাগবে হাজার পাঁচেক টাকার মতো। নিজেই বানিয়ে নিতে পারেন। রাস্পবেরি পাই (ক্রেডিট কার্ডের মাপের কম্পিউটার), কয়েকটা ইনফ্রা রেড সেন্সর আর ওয়াইফাই কানেকশন দিয়ে নিজেই তৈরি করে নিতে পারেন নিরাপত্তা ব্যবস্থা। তবে টেকনলজিতে সড়গড় না হলে বাজার থেকে রেডিমেড কিনে নেওয়াই ভাল। অনলাইনে এমন অনেক ‘সারভিল্যান্স সিস্টেম’ পেয়ে যাবেন।
না চাইলে
সব জিনিসের ভাল-খারাপ দু’টো দিক থাকে, সেটাই স্বাভাবিক। মনে রাখবেন, আপনি যেমন অন্যদের উপর নজরদারি করতে পারেন, তেমন অন্য কেউও আপনার অজান্তে নজরদারি করতে পারে আপনার উপর। আর সেটা আপনার পছন্দ নাও হতে পারে। সাইবার আইন অনুয়ায়ী, সিসিটিভি ক্যামেরা থাকলে প্রকাশ্যে সে কথাটা লিখে রাখতে হবে, যাতে সবাই জানতে পারে সে সিসিটিভি-র নজরে আছে।
কিন্তু যদি সেটা না থাকে? সে উপায়ও আছে। অ্যানড্রয়েড ফোনের জন্য গ্লিন্ট ফাইন্ডার বা আইফোনের জন্য হিডেন ক্যামেরা ডিটেক্টর ইনস্টল করে নিতে পারেন। সেই অ্যাপ বলে দেবে কোথাও কোনও লুকোন ক্যামেরা আছে কি না। তাই বলে ভাববেন না, অ্যাপ একশো শতাংশ ক্ষেত্রে ধরিয়ে দিতে পারবে লুকোন ক্যামেরা। তাই নিজে সাবধান থাকাই বাঞ্ছনীয়।
নকল ছবি বুঝতে
আর একটা ব্যাপারের সঙ্গে কমবেশি সকলেই পরিচিত। সেটা হল সোশাল মিডিয়া বা অন্য জায়গায় নকল ছবি (মর্ফ করে কোনও ছবির সঙ্গে অন্য ছবি জুড়ে দেওয়া) ছড়িয়ে পড়া। মর্ফ করা আটকানোর সব থেকে সহজ উপায় হল ছবিতে ওয়াটার মার্ক ব্যবহার করা। কিন্তু তাতে আসল ছবিটার উপরে লেখা থাকে, ফলে অনেকে সেটা পছন্দ না-ও করতে পারেন।
কিন্তু কোনও ছবি নকল না আসল সেটা বোঝার অনেক অ্যাপ বা সফটওয়ার আছে বাজারে। যেমন: ফোটো ফরেনসিক বা জেপেগস্নুপ। এই সফটওয়ার কোনও ছবির মধ্যে পরে যোগ করা অংশ সহজেই চিনিয়ে দেবে। আর একটা পদ্ধতি হল রিভার্স ফোটো সার্চ। অর্থাৎ গুগল সার্চ বাই ইমেজ বা টাইনিআই-তে ছবিটা আপলোড করলে, সে দেখিয়ে দেবে এই ছবি আর কোথায় কোথায় আছে। ফলে সেই ছবিগুলোর সঙ্গে মিলিয়ে বুঝে নিতে পারবেন কোনও ছবি আসল না তাতে কারসাজি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ঘুম কমলে শিশুদের কী কী সমস্যা হয়?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy