বাসিন্দাদের শারীরিক অবস্থা খুঁটিয়ে দেখছেন বিশেষজ্ঞেরা।
জাতীয় মানবাধিকার কমিটির পক্ষে দিল্লির একটি দল দেগঙ্গা, বারাসত এবং ব্যারাকপুরের আর্সেনিক প্রবণ এলাকা ঘুরে দেখলেন। আর্সেনিক বিশেষজ্ঞ দামোদর সারেঙ্গির নেতৃত্বে ওই দলে ছিলেন উত্তর ২৪ পরগনার জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরের আধিকারিক চন্দ্রশেখর ভৌমিক, আর্সেনিক বিশেষজ্ঞ চিকিত্সক অলোক ঘোষ প্রমুখ। তাঁরা বাড়ি বাড়ি ঘুরে আর্সেনিক আক্রান্তদের সঙ্গে কথা বলেন। তাঁদের অভিযোগ খুঁটিয়ে শোনেন। আর্সেনিকমুক্ত পানীয় জল ঠিক মতো পৌঁছচ্ছে কিনা, সে বিষয়ে খোঁজ খবর নেন।
এ দিন ওই দল দেগঙ্গার বেড়াচাঁপার কুণ্ডুপাড়ায় যায়। গত কয়েক বছর আগে ওই পাড়ায় পাঁচ জন ভয়ঙ্কর আর্সেনিকে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। ওই ঘটনার পর তত্কালীন বাম সরকারের পক্ষে প্রায় দুশো কোটি টাকা ব্যয়ে পাইপ লাইন বসিয়ে পরিসুদ্ধ পানীয় জল প্রকল্পের ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু গ্রামের মানুষ প্রতিনিধি দলের কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, আজও সেই জল আক্রান্তদের বাড়ি বাড়ি পৌঁছয়নি।
প্রতিনিধি দলটি এলাকার আক্রান্তদের পরীক্ষা করে তাঁদের কথা মন দিয়ে শোনে। আর্সেনিক ঠেকাতে ভয় না পেয়ে, সঠিক ভাবে ওষুধ এবং পরিস্রুত পানীয় জল ব্যবহার করার বিষয়ে গ্রামবাসীদের বোঝানো হয়। বিভিন্ন কল থেকে জলের নমুনা সংগ্রহ করেন দলের সদস্যেরা। সারা গায়ে আর্সেনিকের দাগে ভরা আক্রান্ত গ্রামবাসীদের ছবিও তোলেন তাঁরা। জয়দীপ নন্দী, শিখা পাল, বিশ্বজিত্ মণ্ডলেরা বলেন, “এখানকার অধিকাংশ মানুষই এই মারণ ব্যাধিতে আক্রান্ত। অথচ পরীক্ষার নামে বারে বারে নেতা থেকে চিকিত্সকের প্রতিশ্রুতি মিললেও আজও পরিসুদ্ধ জল মিলল না।”
এ বিষয়ে চন্দ্রশেখরবাবু বলেন, “পাইপ বসিয়ে স্ট্যান্ড পোস্টের মাধ্যমে আক্রান্তদের কাছে আর্সেনিকমুক্ত পানীয় জল পৌঁছে দেওয়া আমাদের উদ্দেশ্য ছিল। কিন্তু পোস্ট বসানোর আগেই পাইপ ফুটো করে এলাকাবাসীরা নিজেদের সুবিধা মতো জল তুলতে থাকায় সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করা সম্ভব হয়নি।” বাসিন্দাদের অবশ্য দাবি, গুটি কয়েক পোস্টে প্রয়োজনের তুলনায় কিছুই জল সরবরাহ হচ্ছিল না। ফলে তাঁরা কার্যত বাধ্য হন পাইপ ফুটো করতে। সব দেখে শুনে দামোদর সারেঙ্গী বলেন, “এখানকার মানুষের সঙ্গে কথা বলে, তাঁদের বর্তমান অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে যে তথ্য উঠে এসেছে, দিল্লি ফিরে গিয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরে তা নিয়ে রিপোর্ট দেব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy