Advertisement
E-Paper

এনসেফ্যালাইটিস সঙ্কট তীব্র, বিকল এমআরআই

বুধবার দুপুর পর্যন্ত এনসেফ্যালাইটিসে আক্রান্ত আরও দু’জনের মৃত্যু হল উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। এ দিন মারা যান দীনবালা বর্মন (৫২) এবং জিতেন রায় (২৩)। দীনবালা দেবী কোচবিহারের বাসিন্দা, জিতেনবাবু রাজগঞ্জ এলাকার। মঙ্গলবার মৃত্যু হয়েছিল জামালদহ এবং কিসানগঞ্জের দুই ব্যক্তির। মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের তরফে স্বাস্থ্য দফতরে পাঠানো নথিতে বলা হয়েছে গত ১০ দিনে অ্যাকিউট এনসেফ্যালাইটিসের লক্ষণ নিয়ে ভর্তি হওয়া অন্তত ৩১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই তীব্র সঙ্কটের মধ্যে মেডিক্যাল কলেজের এমআরআই যন্ত্রটি খারাপ হয়ে গিয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০১৪ ০১:৩১

বুধবার দুপুর পর্যন্ত এনসেফ্যালাইটিসে আক্রান্ত আরও দু’জনের মৃত্যু হল উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।

এ দিন মারা যান দীনবালা বর্মন (৫২) এবং জিতেন রায় (২৩)। দীনবালা দেবী কোচবিহারের বাসিন্দা, জিতেনবাবু রাজগঞ্জ এলাকার। মঙ্গলবার মৃত্যু হয়েছিল জামালদহ এবং কিসানগঞ্জের দুই ব্যক্তির। মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের তরফে স্বাস্থ্য দফতরে পাঠানো নথিতে বলা হয়েছে গত ১০ দিনে অ্যাকিউট এনসেফ্যালাইটিসের লক্ষণ নিয়ে ভর্তি হওয়া অন্তত ৩১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই তীব্র সঙ্কটের মধ্যে মেডিক্যাল কলেজের এমআরআই যন্ত্রটি খারাপ হয়ে গিয়েছে। ফলে ডাক্তাররা রোগীদের পরীক্ষা করানোর কথা বললেও, অসহায় ভাবে অপেক্ষা করছেন আক্রান্ত রোগীরা।

জ্বর, বমি, অচৈতন্য হয়ে যাওয়া, এমন নানা উপসর্গ নিয়ে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এখনও ৬০ জনেরও বেশি রোগী ভর্তি রয়েছেন। বুধবারও ভর্তি হন অনেকে। শিশু বিভাগে গত তিন সপ্তাহে ২৮ জন ওই লক্ষণ নিয়ে ভর্তি হয়, তার মধ্যে আট জনের মৃত্যু হয়েছে।

তবে রোগের পরিচয় নিয়ে ধন্দ রয়ে গিয়েছে। সুপার অমরেন্দ্র সরকার বলেন, “অ্যাকিউট এনসেফ্যালাইটিস সিনড্রোম নিয়ে অসুস্থ এমন গত ১০ দিনে ৩০জনের বেশি মারা গেলেও তাঁরা সকলে এনসেফ্যালাইটিসে আক্রান্ত নন। জাপানি এনসেফ্যালাইটিসের জন্য তাদের সেরিব্রো স্পাইনাল ফ্লুইড (সিএসএফ) এবং রক্তপরীক্ষা করা হলেও অনেকের ক্ষেত্রেই কিছু মেলেনি। তাই এনসেফ্যালাইটিসে আক্রান্ত হয়ে কত জনের মৃত্যু হয়েছে তা এখনই বলা যাবে না।”

হাসপাতালের তরফে স্বাস্থ্য দফতরে পাঠানো নথিতে বলা হয়েছে, রক্ত পরীক্ষায় ১৩ জনের শরীরে জাপানি এনসেফ্যালাইটিসের জীবাণু মিলেছে, এক জনের মৃত্যু হয়েছে। ভাইরাস-জনিত অন্যান্য ধরনের এনসেফ্যালাইটিসেও আক্রান্ত হয়ে থাকতে পারেন রোগীরা, মনে করছেন স্বাস্থ্য দফতরের বিশেষজ্ঞরা। কলকাতায় স্বাস্থ্য দফতরের সংক্রামক রোগ বিভাগের এক কর্তা জানান, জাপানি এনসেফ্যালাইটিস পরীক্ষা করতে পুনে থেকে ‘কিট’ আনাতে হয়। প্রতিটি কিটে ৯৬টি নমুনা পরীক্ষা করা যায়। রাজ্য সরকার পুনে থেকে বাড়তি কিট চেয়ে পাঠিয়েছে।

এনসেফ্যালাইটিসের লক্ষণগুলি অন্য নানা রোগেও দেখা যায়। তাই রোগ নির্ণয় করতে এমআরআই করা হয়। অথচ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের এমআরআই যন্ত্র গত চার দিনেরও বেশি খারাপ হয়ে পড়ে রয়েছে। ফলে আলিপুরদুয়ারের বাসিন্দা সুনীল দাস, ময়নাগুড়ির সজলকুমার রায়, তুফানগঞ্জের জোৎস্না দাসের মতো রোগীরা বিপাকে পড়েছেন।

জ্যোৎস্নাদেবীর ছেলে বিকাশ দাস বলেন, “গত ১২ জুলাই এমআরআই করার জন্য চিকিৎসক বলেছিলেন। যন্ত্র খারাপ থাকায় তা হয়নি। চিকিৎসকরা বলছেন রোগীর পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাচ্ছে।” অনেকের নালিশ, ডাক্তারেরা অন্যত্র চিকিৎসার জন্য নিয়ে যেতে বলছেন। কারণ, দেরি হলে রোগীর প্রাণ সংশয় হতে পারে। কিন্তু কোথায় যাবেন, বুঝে উঠতে পারছেন না রোগীর পরিজন।

কেন খারাপ যন্ত্র? রাজ্যের স্বাস্থ্য বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য বলেন, “এমন হওয়ার কথা নয়। বুধবারের মধ্যেই এমআরআই যন্ত্র ঠিক হয়ে যাবে বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন।”

মুখ্যমন্ত্রী এ দিন থেকে উত্তরবঙ্গ সফরে দার্জিলিঙে পৌঁছন। এর মধ্যে এনসেফ্যালাইটিসে এত জনের মৃত্যুর আশঙ্কা শাসক দলের নেতা মন্ত্রীদের উদ্বেগ বাড়িয়েছে। রুদ্রনাথবাবু হাসপাতাল পরিদর্শন করেন। মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার, অধ্যক্ষদের সঙ্গে কথা বলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব।

জানুয়ারি মাস থেকে এখনও পর্যন্ত ‘অ্যাকিউট এনসেফ্যালাইটিস সিনড্রোম’ নিয়ে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি অন্তত ৬৪ জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে। তাঁরা জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, অসম, নিম্ন অসম, উত্তর দিনাজপুর, বিহারের বিভিন্ন জায়গার বাসিন্দা। গত ৩১ দিনে যে রোগীদের মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের মধ্যে জলপাইগুড়ির বাসিন্দা ১৭, দার্জিলিঙের ৬, কোচবিহারের ৫, উত্তর দিনাজপুরের ১, অসমের ১ এবং বিহারের কিসানগঞ্জের ১জন।

encephalitis mri died uttarbanga medical college hospital
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy