চলছে বিক্ষোভ।—নিজস্ব চিত্র।
চিকিত্সায় অবহেলায় শিশুমৃত্যুর অভিযোগে বুধবার কাঁকসা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বিক্ষোভ দেখালেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, অসুস্থ সদ্যোজাতটিকে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আনার দু’ঘন্টা পরে চিকিত্সক আসেন। সময়ে চিকিত্সা শুরু হলে শিশুটিকে বাঁচানো যেত বলে দাবি তাঁদের। পুলিশ এসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে। অভিযোগ অস্বীকার করেছেন কাঁকসা ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক সাথী রায়চৌধুরী।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পানাগড় দক্ষিণ ক্যানাল পাড় এলাকার বাসিন্দা পঙ্কজ পণ্ডিতের তিন দিনের শিশুটি মঙ্গলবার রাতে অসুস্থ হয়ে পড়ে। স্থানীয় একটি নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় বুধবার সকালে শিশুটিকে ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। বাসিন্দাদের অভিযোগ, সেই সময়ে কোনও চিকিত্সক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ছিলেন না। চুক্তির ভিত্তিতে নিযুক্ত এক জন চিকিত্সক ঘণ্টা দুয়েক পরে শিশুটিকে দেখেন। কিছুক্ষণ পরে শিশুটির মৃত্যু হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ২ নম্বর জাতীয় সড়ক এবং পানাগড়-মোড়গ্রাম রাজ্য সড়কের সংযোগকারী দার্জিলিং মোড় থেকে সামান্য দূরে রয়েছে ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি। আদিবাসী অধ্যুসিত কাঁকসার এক বিস্তীর্ণ অংশের মানুষ সেটির উপরে নির্ভরশীল। জাতীয় সড়ক বা রাজ্য সড়কে দুর্ঘটনায় আহতদেরও নিয়ে আসা হয় এখানে। বছর পাঁচেক আগে শয্যা সংখ্যা ১০ থেকে বাড়িয়ে ৩০ করা হয়। গড়ে তোলা হয় উন্নতমানের অপারেশন থিয়েটার। কিন্তু পরিষেবার মান আগের থেকেও খারাপ হয়েছে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। তাঁদের দাবি, পূর্ণ সময়ের চিকিত্সক থাকেন না। চুক্তিভিত্তিক চিকিত্সক দিয়ে কাজ চালানো হয়। ফলে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তাঁরা। শিশুটির মৃত্যুও হয়েছে এই কারণেই।
ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক সাথী রায়চৌধুরী অবশ্য বাসিন্দাদের অভিযোগ মানতে চাননি। তিনি জানান, এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বর্তমানে তিন জন পূর্ণ সময়ের চিকিত্সক রয়েছেন। এ ছাড়া আছেন এক জন চুক্তিভিত্তিক চিকিত্সক। এ দিন শিশুমৃত্যুর ঘটনা নিয়ে তিনি জানান, শ্বাসকষ্টের সমস্যায় ভোগা তিন দিনের শিশুটিকে নিয়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এসেছিলেন পরিজনেরা। পর্যাপ্ত পরিকাঠামো না থাকায় সংশ্লিষ্ট চিকিত্সক শিশুটিকে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে ‘রেফার’ করেন। মাতৃযানেরও ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়। কিন্তু শিশুর বাড়ির লোকজন তা না শুনে শিশুটিকে স্থানীয় এক চিকিত্সকের কাছে নিয়ে যান। পথেই শিশুটি মারা যায়। এর পরে দেহ নিয়ে বিক্ষোভ শুরু হয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। পুলিশ পৌঁছে পরিস্থিতি সামাল দেয়। ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, “অবহেলার অভিযোগ ঠিক নয়। শিশুটিকে চিকিত্সা করার মতো পরিকাঠামো না থাকায় মহকুমা হাসপাতালে ‘রেফার’ করা হয়েছিল।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy