মঙ্গলবার সকালে বাড়ির নারকেল গাছে উঠেছিলাম। নামার সময়ে হঠাৎ পড়ে যাই। কোমরে তো বটেই, সারা গায়ে চোট লাগে। হাড়গোড় ভেঙে গিয়েছে মনে হল। প্রায় ষাট ছুঁইছুঁই বয়স হতে চলল। এখনও অবশ্য চাষবাস করি। ব্যথা সহ্য করতে না পেরে দুপুরের দিকে অশোকনগরের বামনডাঙার বাড়ি থেকে বেরিয়ে হাবরা স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হই। এক্স-রে করা হয়েছিল। হাড় ভেঙেছে কিনা জানি না। তবে পড়লাম এক অন্য বিপত্তিতে।
রাতে খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। ওয়ার্ডের মধ্যে হইচই শুনে ঘুম ভাঙল। প্রথমে কিছুই বুঝতে পারছিলাম না। সকলেই দেখি ছোটাছুটি করছে। নাকে এল তীব্র পোড়া গন্ধ। ধোঁয়াও দেখতে পেলাম। বুঝলাম আগুন লেগেছে। ভয় ভয় করছিল। হাসপাতালের কর্মীরাও ছোটাছুটি করছেন দেখে সত্যি ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। যে সব রোগীর সঙ্গে লোকজন ছিল, তারাও ঢুকে পড়েছিল ওয়ার্ডে। নেতা-পুলিশকেও দেখলাম। কিন্তু আমার সঙ্গে বাড়ির কেউ ছিল না। তাই আরও চিন্তা ভিড় করতে লাগল। চতুর্দিক থেকে বাঁচাও বাঁচাও চিৎকার ভেসে আসছিল। অ্যাম্বুল্যান্সের ঘনঘন আওয়াজ পাচ্ছিলাম।
কোমরে অসহ্য ব্যথা নিয়েই কোনও মতে ওয়ার্ডের সামনের খুলে দেওয়া গেট দিয়ে দৌড়ে বাইরে চলে এলাম। একটা গাছের তলায় দাঁড়িয়ে দেখছিলাম, রোগীদের পুলিশ গাড়ি ও অ্যাম্বুল্যান্সে করে নিয়ে যাচ্ছে। দমকল আগুন নেভানোর চেষ্টা করছিল প্রচুর লোক ভিড় করেছিল হাসপাতালে। ঘণ্টাখানেক দাঁড়িয়ে থেকে আর পারছিলাম না। হাসপাতালের সামনে এসে সেখানেই শুয়ে পড়ি। ঘুম ভাঙল কার ডাকে তা মনে নেই। আয়ারা বললেন, ওয়ার্ডে গিয়ে শুতে। রাত আড়াইটে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy