ছানি-কাণ্ডে জেলা হাসপাতালের রিপোর্ট দেখে অসন্তোষ প্রকাশ করলেন রাজ্য স্বাস্থ্য অধিকর্তা বিশ্বরঞ্জন শতপথী। বুধবার সকালেই জেলা স্বাস্থ্য কর্তারা তাঁর হাতে ওই রিপোর্ট জমা দেন। পরে স্বাস্থ্য অধিকর্তা বলেন, “যে রিপোর্ট পেয়েছি তাতে আমি সন্তুষ্ট নই। ঘটনার দায়িত্ব কার তা পরিষ্কার নয়। তাই সিএমওএইচকে তদন্ত করে সাত দিনে রিপোর্ট জমা দিতে বলেছি।” জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অবশ্য বিষয়টি নিয়ে কিছু বলতে চাননি। কোচবিহার এমজেএন হাসপাতাল সুপার জয়দেব বর্মনও কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
গত বৃহস্পতিবার হাসপাতালে ছানি অস্ত্রোপচার করে দৃষ্টিশক্তি হারাতে বসেছিলেন ৮ জন রোগী। পরে তাঁদের জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। জলপাইগুড়ি ও শিলিগুড়িতে ফের তাঁদের চোখে অস্ত্রোপচার হয়। এখন তাঁরা সুস্থ রয়েছেন বলে স্বাস্থ্য কর্তারা দাবি করেছেন। ওই ঘটনার পর জেলা হাসপাতালের চক্ষু অপারেশনের ওটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। কী ভাবে ওই ঘটনা ঘটল তা নিয়ে রাজ্য জুড়ে হইচই হয়। হাসপাতালের সহকারী সুপারের নেতৃত্বে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি তৈরি হয়। সেই কমিটির রিপোর্ট স্বাস্থ্য অধিকর্তার হাতে দেওয়া হয়।
কিন্তু, ঘটনার দায় কার? তা ওই রিপোর্টে স্পষ্ট নয়। রোগীর পরিবারের লোকজনদের একাংশের অভিযোগ, কাউকে যাতে শাস্তির মুখে পড়তে না হয় সে জন্যই এমন রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে। বিজেপির জেলার সাধারণ সম্পাদক নিখিল রঞ্জন দে বলেন, “দোষীদের চিহ্নিত করে সাজা দিতে হবে।” এদিন মাথাভাঙা ও তুফানগঞ্জ মহকুমা হাসপাতাল পরিদর্শন করেন স্বাস্থ্য অধিকর্তা। মাথাভাঙায় এখনও ফিভার ক্লিনিক কেন চালু করা হয়নি তা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। জেলার প্রত্যেকটি হাসপাতালে ফিভার ক্লিনিক চালু হলেও চিকিসক ও কর্মী কম থাকার কথা জানিয়ে মাথাভাঙা মহকুমা হাসপাতালে ফিভার ক্লিনিক চালু করা হয়নি। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জানিয়েছিলেন, বহির্বিভাগে আলাদা ভাবে গুরুত্ব দিয়ে জ্বরের রোগীদের দেখা হচ্ছে। ওই যুক্তি মানতে চাননি স্বাস্থ্য অধিকর্তা। হাসপাতাল পরিচ্ছন্ন রাখার নির্দেশ দেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দাবি করেছেন, আলাদা করে জ্বরের রোগীদের রেজিস্টার চালু করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। তুফানগঞ্জ হাসপাতালে বহির্বিভাগে চিকিৎসক দেরি করে পৌঁছনোয় তাঁকে সতর্ক করে দেন স্বাস্থ্য অধিকর্তা। এ দিকে, স্বাস্থ্য অধিকর্তার নির্দেশের ২৪ ঘণ্টা পরেও কোচবিহার জেলা হাসপাতালের চিত্রটা সেই আগের মতোই রয়েছে। ন্যায্যমূল্যের ওষুধের দোকানে তালিকা টাঙানো হয়নি। জরুরি বিভাগের ফাঁকা জায়গায় পড়ে রয়েছে আবর্জনা। এ দিন বামফ্রন্টের তরফে স্বাস্থ্যকর্তাকে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। সিপিএম জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মহানন্দা সাহা বলেন, “মার্চে প্রথম এনসেফেলাইটিসে মৃত্যু হয়। সে সময় গুরুত্ব দেওয়া হলে এত মানুষের মৃত্যু হত না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy