Advertisement
১৯ মে ২০২৪

দোকানই নেই, ওষুধ মিলবে কোথায়

জেলার অন্য সব মহকুমা হাসপাতালেই চালু হয়ে গিয়েছে অনেক দিন আগে। দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের জন্যও সরকারি অনুমোদন এসে গিয়েছে বছরখানেক আগে। কিন্তু ন্যায্যমূল্যের ওষুধ দোকান এখনও চালু হয়নি এখানে। ফলে, এই সরকারি পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন রোগীরা। আসানসোল স্বাস্থ্যজেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক মনিকাঞ্চন সাহার অবশ্য আশ্বাস, শীঘ্র কাজ শুরু হবে। এ ছাড়া আসানসোল ও দুর্গাপুর হাসপাতালে দু’টি ডায়ালিসিস ইউনিটও চালু করা হবে বলে জানান তিনি।

দুর্গাপুর হাসপাতাল। —নিজস্ব চিত্র।

দুর্গাপুর হাসপাতাল। —নিজস্ব চিত্র।

সুশান্ত বণিক
আসানসোল শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০১৪ ০১:৫০
Share: Save:

জেলার অন্য সব মহকুমা হাসপাতালেই চালু হয়ে গিয়েছে অনেক দিন আগে। দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের জন্যও সরকারি অনুমোদন এসে গিয়েছে বছরখানেক আগে। কিন্তু ন্যায্যমূল্যের ওষুধ দোকান এখনও চালু হয়নি এখানে। ফলে, এই সরকারি পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন রোগীরা। আসানসোল স্বাস্থ্যজেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক মনিকাঞ্চন সাহার অবশ্য আশ্বাস, শীঘ্র কাজ শুরু হবে। এ ছাড়া আসানসোল ও দুর্গাপুর হাসপাতালে দু’টি ডায়ালিসিস ইউনিটও চালু করা হবে বলে জানান তিনি।

দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, বছরখানেক আগে অনুমোদন আসার পরে ন্যায্যমূল্যের ওষুধের দোকান তৈরির বরাত দেওয়া হয় একচটি সংস্থাকে। কিন্তু তা এখনও হয়ে ওঠেনি। বাইরে থেকে বেশি দামে ওষুধ কিনতে বাধ্য হচ্ছেন হাসপাতালে আসা রোগী ও তাঁদের পরিজনেরা। কেন এখনও এই কাজ সম্পূর্ণ হল না, সে প্রশ্নে হাসপাতালের সুপার দেবব্রত দাস বলেন, “এই দোকান করার বরাত যাঁকে দেওয়া হয়েছে, তিনি কোনও আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। আমরা তাঁকে ডেকে অনেক বার বলেছি। কিন্তু, কেন তিনি আগ্রহ দেখাচ্ছেন না বুঝতে পারছি না।”

বরাত পাওয়ার পরেও দোকান কেন হয়নি, সে ব্যাপারে না হাসপাতালের একটি সূত্রের আবার দাবি, হাসপাতালের মধ্যে কোনও ঘর না থাকায় সামনের ফাঁকা অংশে নতুন একটি দোকান গড়তে হবে। যিনি বরাত পেয়েছেন তাঁকেই ওই দোকানটি তৈরি করে নিতে বলেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তাঁকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, ভাড়া বাবদ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে মাসিক যে টাকা দেওয়ার কথা, তা দোকান তৈরির খরচ হিসেবে কেটে নেবেন। তিনি কিন্তু এর পরেও দোকান তৈরিতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না তিনি। হাসপাতালের সুপার জানান, পুরো বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে ভুক্তভোগী হচ্ছেন রোগীরা। বাঁকুড়ার বড়জোড়া থেকে এসে ছেলেকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ভর্তি করেছিলেন ময়ূর দাস। এখানে ন্যায্যমূল্যের ওষুধ দোকান নেই জেনে ময়ূরবাবু বলেন, “বাঁকুড়া হাসপাতালে আছে, অথচ দুর্গাপুরে এই দোকান নেই শুনে অবাক লাগছে।” আর এক রোগীর আত্মীয় পানাগড়ের দিলীপ বাগদির ক্ষোভ, “এক বছর আগে একই সঙ্গে অনুমোদন পেয়ে আসানসোল হাসপাতালে এই দোকান হয়ে গিয়েছে। কিন্তু, দুর্গাপুরে হল না!” রোগীর পরিজনদের দাবি, যত দ্রুত সম্ভব এখানে এই ন্যায্যমূল্যের ওষুধের দোকান তৈরি করা হোক।

দুর্গাপুরের ডেপুটি মেয়র জহর বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতে, সরকারি অনুমোদন আসার পরেও হাসপাতালে ন্যায্যমূল্যের ওষুধ দোকান না হওয়ায় রোগীদের কাছে সরকার সম্বন্ধে ভুল বার্তা যাচ্ছে। তিনি বলেন, “আমি সুপারের সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত দোকান খোলানোর ব্যবস্থা করছি।” একই সঙ্গে তিনি অভিযোগ করেন, দুর্গাপুর হাসপাতালে একটি ডায়ালিসিস ইউনিট প্রায় দেড় বছর আগে থেকে তৈরি হয়ে পড়ে আছে। দুর্গাপুরের তৃণমূল বিধায়ক নিখিল বন্দ্যোপাধ্যায়ের তহবিল থেকে প্রায় ৫৮ লক্ষ টাকা সেটি কেনা হয়েছে। কিন্তু সেটি আজও চালু করা যায়নি।

মুখ্য স্বাস্থ আধিকারিক মনিকাঞ্চনবাবু জানান, দুর্গাপুরের হাসপাতালে ন্যায্যমূল্যের ওষুধের দোকান নিয়ে প্রশাসনিক পর্য়ায়ে আলোচনা হয়েছে। খুব দ্রুত কাজ শুরু হবে। একই সঙ্গে আসানসোল ও দুর্গাপুরে একটি বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে ডায়ালিসিস ইউনিট খোলার সিদ্ধান্ত পাকা হয়ে গিয়েছে। আগ্রহী সংস্থাকে বরাতও দেওয়া হয়েছে। প্রথম দুর্গাপুরে, তার পরে আসানসোলে সেই কাজ শুরু হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE