ফাইলেরিয়া দূর করতে আট জেলা জুড়ে কর্মসূচি নিল স্বাস্থ্য দফতর। বর্ধমানের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রণব রায় জানান, জেলার প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার মানুষ এখনও ওই রোগের শিকার। ২০১৫ সালের মধ্যে রাজ্যকে ফাইলেরিয়া মুক্ত করতে সরকার ওই কর্মসূচিতে বিশেষ জোর দিচ্ছে বলেও জানান তিনি।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী ২০ থেকে ২২ সেপ্টেম্বর বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রতিষেধক খাওয়ানোর ওই কর্মসূচি চলবে। শতকরা ৮৬ ভাগ মানুষকে প্রতিষেধক খাওয়ানোর চেষ্টা করা হবে। এর আগে ২০০৪ সালেও এ ধরণের কর্মসূচি নেওয়া হয়। সে বার জেলার ৭১ লক্ষ মানুষের মধ্যে শতকরা ৮৩.৫ ভাগকে ওই প্রতিষেধক খাওয়ানো গিয়েছিল বলেও জানা গিয়েছে।
জেলার উপ-স্বাস্থ্য আধিকারিক ২ দ্বৈপায়ন হালদার বলেন, “কুইনকুই ফেসিয়াটাস নামের কিউলেক্স প্রজাতির মশার কামড়ে ফাইলেরিয়া ছড়ায়। বর্ধমানে জেলার শিল্পাঞ্চলের দিকের ব্লকগুলিতে ওই রোগের প্রাদুর্ভার যথেষ্ট বেশি। যেমন কান্দরা, উখরা, রানিগঞ্জ, বরাকর, দুর্গাপুর-ফরিদপুর ইত্যাদি এলাকায় ওই রোগের প্রাদুর্ভাব রয়েছে।” তিনি জানান, এই রোগে কেউ আক্রান্ত হয়েছেন কি না তা বুঝতে আমরা রাতে ওই এলাকার বাসিন্দাদের রক্ত পরীক্ষা করার জন্য সংগ্রহ করি। গত বার প্রায় ৪০০০ মানুষের রক্ত পরীক্ষা করানো হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে ১৪০ জনের শরীরে ওই রোগের জীবানু মেলে। এ বার রক্ত পরীক্ষার হার আরও বাড়ানো হবে বলেও জানান তিনি।
২০ সেপ্টেম্বর বর্ধমান-সহ কুচবিহার, মালদা, মুর্শিদাবাদ, বীরভূম, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া ও উত্তর ২৪ পরগনামোট আটটি জেলার সমস্ত ব্লক ও পুরসভা এলাকায় বাড়ি-বাড়ি গিয়ে পালস্ পোলিও-র ধাঁচে ফাইলেরিয়া প্রতিরোধের ওষুধ খাওয়াবেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। খাওয়ানো হবে দু’রকমের ওষুধ। একটি ডাইইথাইল কার্বোমাজাইন সাইট্রেট ও অন্যটি অ্যালবেনডাজোল ট্যাবলেট। বয়স অনুপাতে ওষুধের মাত্রা বাড়বে বা কমবে। তবে দু’বছরের কম বয়সের শিশু, ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তি, গর্ভবতী ও গুরুতর অসুস্থ ব্যক্তিকে ওই প্রতিষেধক খাওয়ানো যাবে না। দ্বৈপায়নবাবু বলেন, “স্বাস্থ্যকর্মীরা দাঁড়িয়ে থেকেই ওষুধ খাওয়ানোর চেষ্টা করবেন। তবে প্রতিষেধকটি খেতে হবে কিছু খাবার খাওয়ার পরে। প্রতিষেধকের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে মাথা ঘুরতে পারে। যদি তা হয়, বা অন্য কোনও ধরনের অসুস্থতা দেখা দেয় সেক্ষেত্রে সেই চিকিৎসাও স্বাস্থ্য দফতর থেকে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে করানো হবে।” তবে তাঁর দাবি, এই সম্ভবনা প্রায় নেই বললেই চলে।
২০ তারিখের পরের দু’দিন যাঁরা বাদ পড়ে গিয়েছেন তাঁদের খুঁজে খুঁজে প্রতিষেধক খাওয়ানো হবে। স্বাস্থ্য কর্তাদের কথায়, এক বার ফাইলেরিয়ায় আক্রান্ত হলে শরীরের পা বা অন্য অংশ যেভাবে স্ফীত হয়, তা সহজে কমানো যায় না। আগে থেকে প্রতিষেধর খেলে বরং অনেকটা নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় ওই রোগ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy