Advertisement
০৯ মে ২০২৪

বেড়েছে শয্যা, চালু এসএনসিইউ, চিকিৎসক না বাড়ায় বেহাল পরিষেবা

শয্যাসংখ্যা বাড়িয়ে ৩০ থেকে ৮০ করা হয়েছে। খোলা হয়েছে সদ্যোজাতদের চিকিৎসার জন্য সিক নিওনেটাল কেয়ার ইউনিট (এসএনসিইউ)। তৈরি হয়েছে পৃথক প্রসূতি বিভাগ, চালু হয়েছে অস্ত্রপোচার করে প্রসবের ব্যবস্থাও। কিন্তু পরিকাঠামোর হাল এখনও সেই তিমিরেই। ছবিটা হাওড়ার আমতা গ্রামীণ হাসপাতালের। তবে পরিকাঠামোর এমন হাল সত্ত্বেও স্বাস্থ্য দফতর এটিকে স্টেট জেনারেল হাসপাতালে উন্নীত করার লক্ষ্যে এগোচ্ছে বলে দাবি করেছেন উলুবেড়িয়া উত্তর কেন্দ্রের বিধায়ক নির্মল মাজি।

আমতা গ্রামীণ হাসপাতাল। ছবি: সুব্রত জানা।

আমতা গ্রামীণ হাসপাতাল। ছবি: সুব্রত জানা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আমতা শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০১৪ ০১:১১
Share: Save:

শয্যাসংখ্যা বাড়িয়ে ৩০ থেকে ৮০ করা হয়েছে। খোলা হয়েছে সদ্যোজাতদের চিকিৎসার জন্য সিক নিওনেটাল কেয়ার ইউনিট (এসএনসিইউ)। তৈরি হয়েছে পৃথক প্রসূতি বিভাগ, চালু হয়েছে অস্ত্রপোচার করে প্রসবের ব্যবস্থাও। কিন্তু পরিকাঠামোর হাল এখনও সেই তিমিরেই। ছবিটা হাওড়ার আমতা গ্রামীণ হাসপাতালের। তবে পরিকাঠামোর এমন হাল সত্ত্বেও স্বাস্থ্য দফতর এটিকে স্টেট জেনারেল হাসপাতালে উন্নীত করার লক্ষ্যে এগোচ্ছে বলে দাবি করেছেন উলুবেড়িয়া উত্তর কেন্দ্রের বিধায়ক নির্মল মাজি।

সদ্যোজাতরা গুরুতর অসুস্থ হলে বা কোনও অসুখ নিয়ে জন্মালে তাকে এসএনসিইউতে স্থানান্তরিত করা হয়। সে ক্ষেত্রে এই বিভাগে একজন শিশুবিশেষজ্ঞ থাকা বাধ্যতামূলক বলে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর সূত্রেই জানানো হয়েছে। কিন্তু আমতায় এসএনসিইউ থাকলেও এখনও সেখানে কোনও শিশুবিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নিয়োগ করা হয়নি। স্বল্পদিনের প্রশিক্ষণ দিয়ে একজন সাধারণ চিকিৎসককে দিয়েই ওই বিভাগের কাজ চালানো হচ্ছে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে। ওই চিকিৎসক আবার যেদিন অনুপস্থিত থাকেন, সে দিন ওই বিভাগের অবস্থা শোচনীয় হয়ে পড়ে। অসুস্থ অবস্থায় কোনও শিশু ভর্তি হতে এলে বাধ্য হয়েই তাকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।

বেহাল পরিকাঠামোয় ধুঁকছে প্রসূতি বিভাগও। এখানে নেই বেবি ওয়ার্মার বা ইনকিউবিটর। সর্বোপরি গোটা হাসপাতালে নেই জেনারেটরের ব্যবস্থা। বিদু্যৎ না থাকলে এসএনসিইউ অচল হয়ে পড়ে। তখন গুরুতর অসুস্থ সদ্যোজাতদের সেখান থেকে বের করে আনতে হয়। চিকিৎসক তাদের রেফার করে দেন অন্যত্র। এমন অবস্থা চললেও গত এক বছরে হাসপাতালে একটি জেনারেটরের ব্যবস্থা করা যায়নি। এ প্রসঙ্গে আমতা(১)-র ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক দেবশঙ্কর মান্না বলেন, “স্থানীয় বিধায়ক নির্মল মাজি জেনারেটরের ব্যবস্থা করে দেবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন। খুব শীঘ্রই তা কেনা হবে।”

পরিকাঠামোর এমন হাল সত্ত্বেও নির্মলবাবু বলেন, “অন্য গ্রামীণ হাসপাতালের তুলনায় আমতার অবস্থা অনেক ভাল। এখানে চিকিৎসক নিয়োগ, মহিলাদের ক্যানসার নির্ণয় পদ্ধতি, ন্যায্যমূল্যে ওষুধের দোকান সবই হবে। আপাতত সব কাজ আটকে আছে ভোটের জন্য। আমার লক্ষ্য এটাকে স্টেট জেনারেল হাসপাতালে উন্নীত করা।”

আমতা গ্রামীণ হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে ৫০-৬০ জন রোগী চিকিৎসাধীন থাকেন। বহির্বিভাগে গড়ে সাত-আটশো রোগী চিকিৎসা করাতে আসেন। কিন্তু প্রয়োজনের তুলনায় হাসপাতালে স্বাস্থ্যকর্মীর সংখ্যা খুবই কম। হাসপাতাল সূত্রের খবর, বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসক রয়েছেন ৬ জন, নার্স ১১ জন, ফার্মাটিস্ট ২ জন আর সাফাইকর্মী ২ জন। যদিও একটি ৮০ শয্যার হাসপাতালের জন্য কমপক্ষে ১৫ জন চিকিৎসক দরকার বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য দফতরই। প্রয়োজন ৩০-৩৫ জন নার্স, ৬ জন ফার্মাটিস্ট, কমপক্ষে ১০ জন সাফাইকর্মী। সেখানে এই হাসপাতালে যে কয়েকজন স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছেন তাঁদের সকলকেও একসঙ্গে পাওয়া যায় না। চিকিৎসকদের শিফটিং ডিউটি থাকায় গড়ে ৩-৪ জন ডিউটিতে থাকেন। একই অবস্থা অন্যদের ক্ষেত্রেও। হাসপাতালে ৭-৮ জন নার্স ও মাত্র ১ জন সাফাইকর্মীকেই দেখা যায়। এই সামান্য কয়েকজন কর্মীর পক্ষে আউটডোর ও ইনডোর একসঙ্গে সামলানো সম্ভব হয় না বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য।

জেলা স্বাস্থ্য দফতরও আমতা গ্রামীণ হাসপাতালে পরিকাঠামোর সমস্যার কথা স্বীকার করেছে। এই দফতরের এক কর্তা জানান, স্বাস্থ্যভবনে বহুবার এ সব সমস্যার কথা জানানো হয়েছে। নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়টি তাঁরা দেখবেন বলে জানিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

amta rural hospital sncu
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE