Advertisement
০৫ মে ২০২৪
বহরমপুর ব্লাড ব্যাঙ্ক

রক্ত মজুত কত, লেখা নেই বোর্ডের

মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অধীনে থাকা জেলা ব্লাড ব্যাঙ্কে চরমে উঠেছে রক্ত সঙ্কট। সঙ্কট এতটাই তীব্র যে, রক্তের কোনও পরিসংখ্যান ব্লাড ব্যাঙ্কের বোর্ডে লেখা হচ্ছে না। ব্লাড ব্যাঙ্কে কোন গ্রুপের কত রক্ত আছেদিনের দিন বোর্ডে লিখে প্রকাশ্যে টাঙানো থাকত। এখন ওই নোটিস বোর্ড ব্লাড ব্যাঙ্কের কাউন্টারের পিছনের দেওয়ালের নীচে মেঝেতে এমন ভাবে ফেলে রাখা হয়, যা রোগীর বাড়ির লোকজনের চোখে পড়ে না।

মঙ্গলবারের বোর্ডে ৪ অগস্টের হিসাব। ছবি: গৌতম প্রামাণিক।

মঙ্গলবারের বোর্ডে ৪ অগস্টের হিসাব। ছবি: গৌতম প্রামাণিক।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বহরমপুর শেষ আপডেট: ১৩ অগস্ট ২০১৪ ০১:৫৯
Share: Save:

মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অধীনে থাকা জেলা ব্লাড ব্যাঙ্কে চরমে উঠেছে রক্ত সঙ্কট।

সঙ্কট এতটাই তীব্র যে, রক্তের কোনও পরিসংখ্যান ব্লাড ব্যাঙ্কের বোর্ডে লেখা হচ্ছে না। ব্লাড ব্যাঙ্কে কোন গ্রুপের কত রক্ত আছেদিনের দিন বোর্ডে লিখে প্রকাশ্যে টাঙানো থাকত। এখন ওই নোটিস বোর্ড ব্লাড ব্যাঙ্কের কাউন্টারের পিছনের দেওয়ালের নীচে মেঝেতে এমন ভাবে ফেলে রাখা হয়, যা রোগীর বাড়ির লোকজনের চোখে পড়ে না। মঙ্গলবার দেখা গেল, ওই বোর্ডে গত ৪ অগস্টের রক্তের পরিসংখ্যান রয়েছেতাতে নেগেটিভ ও পজিটিভ কোনও গ্রুপের রক্ত নেই বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

রক্তের এই তীব্র সঙ্কটে রোগী এবং তাঁদের আত্মীয়-স্বজন নাকাল। কিন্তু ব্লাড ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের হেলদোল নেই। ব্লাড ব্যাঙ্কের কাউন্টারের চেয়ার সকাল সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ফাঁকা পড়ে রয়েছে। কোনও কর্মীর দেখা মেলেনি। কান্দির গোকর্ণের রেজাউল শেখ মঙ্গলবার সকাল ৭টায় রক্তের নমুনা-সহ সমস্ত কাগজপত্র জমা দিয়েও দুপুর ১২টা পর্যন্ত রক্ত না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়েছেন। তিনি বলেন, “বহরমপুর মাতৃসদনে ভর্তি রয়েছেন স্ত্রী রেক্সোনা বিবি। তাঁর দু’বোতল রক্ত লাগবে জেনে ব্লাড ব্যাঙ্কে আসি। কিন্তু এখনও রক্ত পাইনি।”

জেলা ব্লাড ব্যাঙ্কের ভারপ্রাপ্ত চিকিৎসক জয়ন্ত বিশ্বাস অবশ্য বলেন, “এই মুহূর্তে ৮১ ব্যাগ রক্ত অপরীক্ষিত অবস্থায় রয়েছে। তবে নেগেটিভ কোনও রক্ত নেই। ‘বি’ পজিটিভ রক্তও শেষ হয়ে গিয়েছে। বাকি ‘এ’, ‘ও’ এবং ‘এবি’ পজিটিভ রক্ত সামান্য পড়ে রয়েছে।” কেন বোর্ডে লেখা হচ্ছে না তা? সদুত্তর মেলেনি।

জানা গিয়েছে, গত তিন মাসে মাত্র চারটে রক্তদান শিবির হয়েছে এবং ওই শিবিরগুলি থেকে সংগ্রহ হয়েছে ১০৭৬, ১৩৮৩ ও ১১৭৪ ব্যাগ রক্ত। যেখানে জেলা ব্লাড ব্যাঙ্কে প্রতি মাসে ১৫০০ থেকে ১৬০০ বোতল রক্তের চাহিদা থাকে। সিপিএমের যুব সংগঠনের জেলা সম্পাদক জামাল হোসেনের অভিযোগ, “প্রয়োজনীয় সংখ্যক রক্তের ব্যাগ ও কিট সরবরাহ করতে না পারার জন্য রক্তদান শিবির আয়োজন করা সম্ভব হচ্ছে না।” গত ৬ অগস্ট সিপিএমের ছাত্র সংগঠন রক্তদান শিবিরের আয়োজন করে ১০০টি ব্যাগ দেওয়ার আবেদন করে। কিন্তু ব্লাড ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ মাত্র ৪১টি ব্যাগ দেয়। ফলে ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও অনেকে রক্ত দিতে পারেননি বলে অভিযোগ। স্বাস্থ্য দফতর থেকে পরে ব্যাগ এলেও কিটের অভাব এখনও রয়েছে বলে মেনে নিচ্ছেন জয়ন্ত বিশ্বাস। এদিকে, আগামী ১৫ অগস্ট বিভিন্ন সংগঠন ও ক্লাব কর্তৃপক্ষ রক্তদান শিবিরের আয়োজন করার কথা ঘোষণা করেছেন। কর্তৃপক্ষের আশ্বাস, ১৫ অগস্টের কথা মাথায় রেখে প্রয়োজনীয় সংখ্যক রক্তের ব্যাগ সংগ্রহ করে রাখা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

berhampur blood bank murshidabad medical college
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE