Advertisement
২০ মে ২০২৪

লিঙ্ক মেলে না, লম্বা লাইনে নিত্য ভোগান্তি হাসপাতালে

চারটে কম্পিউটারের মধ্যে দু’টি অকেজো। তার উপরে ‘লিঙ্ক’ না থাকার কারণে প্রতিদিনই বেশ কিছু সময় সচল কম্পিউটারগুলি কাজ হয় না বলে অভিযোগ। যার জেরে জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালের বহির্বিভাগের টিকিট কাউন্টারে লাইন দিয়ে প্রতিদিনই দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বলে অভিযোগ। লাইনে দাঁড়িয়ে ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও টিকিট-জানালার কাছে পৌঁছনো যায় না বলে অভিযোগ।

জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালের বহির্বিভাগ।—নিজস্ব চিত্র।

জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালের বহির্বিভাগ।—নিজস্ব চিত্র।

রাজা বন্দ্যোপাধ্যায়
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ০৫ জুন ২০১৪ ০২:০০
Share: Save:

চারটে কম্পিউটারের মধ্যে দু’টি অকেজো। তার উপরে ‘লিঙ্ক’ না থাকার কারণে প্রতিদিনই বেশ কিছু সময় সচল কম্পিউটারগুলি কাজ হয় না বলে অভিযোগ। যার জেরে জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালের বহির্বিভাগের টিকিট কাউন্টারে লাইন দিয়ে প্রতিদিনই দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বলে অভিযোগ। লাইনে দাঁড়িয়ে ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও টিকিট-জানালার কাছে পৌঁছনো যায় না বলে অভিযোগ। কম্পিউটার বিকল থাকলেও হাতে লেখা টিকিট দেওয়ার অনুমতি জোগাড় করতেই অনেকটা সময় পেরিয়ে যায়। তাই বহির্বিভাগের লাইন প্রতিদিনই দীর্ঘতর হতে থাকে বলে অভিযোগ। দীর্ঘদিন টিকিট কাউন্টারের কম্পিউটার অকেজো হয়ে থাকলেও সে খবর ‘কর্তৃপক্ষের’ কাছে পৌঁছয়নি বলে হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে। এ দিন হাসপাতালের সুপার সুশান্ত রায় বলেন, “কম্পিউটার খারাপ থাকার কথা জানতাম না। দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছি।” সুপারের দাবি, “হাসপাতালের একটি ফাঁকা জায়গায় নতুন বহির্বিভাগ চালুর সিদ্ধান্ত হয়েছে। অনুমোদনও পাওয়া গিয়েছে। সেখানে বহির্বিভাগের টিকিট দেওয়ার ছয়টি জানালা করা হবে। তখন আর কোন সমস্যা থাকবে না।”

কবে নতুন ভবন নির্মাণের কাজ শেষ হবে, কবে থেকে কাউন্টার চালু হবে তা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানাতে পারেননি। বহির্বিভাগে ২ টাকা দিয়ে টিকিট কেটে বাসিন্দাদের চিকিৎসকদের দেখাতে হয়। সকাল সাড়ে ৮টা থেকে জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালের ৪টে কাউন্টার থেকে টিকিট দেওয়ার কথা। বুধবার বেলা দশটার সময় হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেল, দু’টি জানালার সামনে লম্বা লাইন। লিঙ্ক না থাকায় কোনও কাউন্টার থেকে টিকিট মিলছে না। কাউন্টারের সামনে জটলায় ক্ষোভ। ভুক্তভুগীদের অভিযোগ, প্রায়দিনই কাউন্টারের লিঙ্ক থাকে না। সদর হাসপাতালের নিজস্ব সার্ভার ব্যবস্থা থেকে কম্পিউটারগুলি চলে। সেই সার্ভারের যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ না হওয়ায় মাঝেমধ্যেই লিঙ্ক থাকছে না। বহির্বিভাগের একাংশ কর্মীও একই অভিযোগ জানিয়েছেন। বর্হিবিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিদিন দু’হাজার টিকিট এই কাউন্টার থেকে বিক্রি হয়।

এমন একটা গুরুত্বপূর্ণ বহির্বিভাগে টিকিট দেওয়ার জন্য চারটে কম্পিউটার রয়েছে। তার প্রতিটির সঙ্গে রয়েছে একটি করে প্রিন্টার। তার মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই দু’টি কম্পিউটার এবং প্রিন্টার অকেজো হয়ে থাকলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সে বিষয়ে পদক্ষেপ না করায় ক্ষুব্ধ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরাও। লিঙ্ক না থাকলে বা ভিড় বেশি হলে হাতে লেখা টিকিট দেওয়ায় সমস্যা রয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ দাবি করেছেন। হাসপাতাল কর্মীরা জানান হাতে লেখা টিকিট দিতে গেলে বিশেষ অনুমতির প্রয়োজন হয়। সেই অনুমতি সংগ্রহের পদ্ধতি শেষ করতেই অনেক সময় পেরিয়ে যায়। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, দীর্ঘক্ষণ ধরে লিঙ্ক না থাকলে হাতে লেখা টিকিট দেওয়া হয়। বাসিন্দাদের দাবি, যে দু’টি কাউন্টারের কম্পিউটার অকেজো সেগুলি থেকেও হাতে লেখা টিকিট দিলে চাপ কমতে পারে। জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালে বহির্বিভাগের লাইনে দাঁড়িয়ে বেরুবাড়ি এলাকার আমিনা খাতুন, বাসুসুবার সায়রা বানু অথবা রংধামালির সুমিত্রা রায় বলেন, “চিকিৎসক দেখাতে এসে লাইনে দাঁড়িয়ে ৪৫ মিনিট কেটে গেল। যন্ত্র খারাপ থাকায় টিকিট দেওয়া বন্ধ। কখন যে টিকিট পাব আর কখন ওষুধ নিয়ে বাড়ি ফিরব জানি না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

harassment jalpaiguri district hospital long queues
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE