Advertisement
E-Paper

শয্যা থেকে উধাও রোগীর দেহ রাস্তায়

ঝাড়গ্রাম জেলা হাসপাতালে চিকিত্‌সাধীন এক রোগীর মৃতদেহ মিলল রাস্তার ধার থেকে। রবিবার সকালের ওই ঘটনায় হাসপাতালের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ফের প্রশ্নের মুখে। মৃত বছর পঞ্চাশের জয়দেব পাঠকের বাড়ি অরণ্যশহরের সুভাষপল্লি এলাকায়। শনিবার সকালে পেটের ব্যথা নিয়ে মেল মেডিক্যাল ওয়ার্ডে ভর্তি হন পেশায় দর্জি জয়দেববাবু। হাসপাতাল সূত্রে খবর, জয়দেববাবুর অগ্নাশয়ে গুরুতর সমস্যা ছিল। এ ছাড়া প্রবল রক্তাপ্লতাও ছিল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০১৪ ০১:২১
ভিজিটিং আওয়ার্স নয়। দুপুর আড়াইটেতেও রক্ষী নেই প্রধান ফটকে। ছবি: দেবরাজ ঘোষ।

ভিজিটিং আওয়ার্স নয়। দুপুর আড়াইটেতেও রক্ষী নেই প্রধান ফটকে। ছবি: দেবরাজ ঘোষ।

ঝাড়গ্রাম জেলা হাসপাতালে চিকিত্‌সাধীন এক রোগীর মৃতদেহ মিলল রাস্তার ধার থেকে।

রবিবার সকালের ওই ঘটনায় হাসপাতালের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ফের প্রশ্নের মুখে। মৃত বছর পঞ্চাশের জয়দেব পাঠকের বাড়ি অরণ্যশহরের সুভাষপল্লি এলাকায়। শনিবার সকালে পেটের ব্যথা নিয়ে মেল মেডিক্যাল ওয়ার্ডে ভর্তি হন পেশায় দর্জি জয়দেববাবু। হাসপাতাল সূত্রে খবর, জয়দেববাবুর অগ্নাশয়ে গুরুতর সমস্যা ছিল। এ ছাড়া প্রবল রক্তাপ্লতাও ছিল।

রবিবার সকাল সাড়ে ছ’টার পর হাসপাতালের শয্যা থেকে নিখোঁজ হয়ে যান তিনি। পরে ঘোড়াধরা এলাকায় পাওয়ার হাউস রোডের ধারে তাঁর নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। কী ভাবে জয়দেববাবু বেরিয়ে গেলেন? সদুত্তর নেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে। এর আগে গত সেপ্টেম্বরে হাসপাতালের ফিমেল মেডিক্যাল ওয়ার্ডের ছাদ থেকে পড়ে জখম হন মানসিক অবসাদগ্রস্ত এক রোগিনী। তার পরও কর্তৃপক্ষের হুঁশ ফেরেনি, রবিবারের ঘটনায় তা স্পষ্ট।

জয়দেববাবুর ভাই সহদেব পাঠক বলেন, “রবিবার দাদার খোঁজ নিতে গিয়ে দেখি বেড খালি। কর্তব্যরত নার্স জানান, দাদার খোঁজ মিলছে না। আমরাও খোঁজ শুরু করি।” ইতিমধ্যে শহরের রাস্তায় এক ব্যক্তির দেহ পড়ে থাকতে দেখে চাঞ্চল্য ছড়ায়। মৃতের ডান হাতে স্যালাইনের চ্যানেল থাকায় ওই ব্যক্তি চিকিত্‌সাধীন ছিলেন বলে সন্দেহ হয় বাসিন্দাদের। খবর পেয়ে সহদেববাবু সেখানে গিয়ে দেহটি তাঁর দাদার বলে শনাক্ত করেন। মৃত্যুর প্রাথমিক কারণ, রক্তাপ্লতার জন্য মাথা ঘুরে পড়ে হার্টফেল। সহদেববাবর প্রশ্ন, “জেলা হাসপাতাল থেকে রোগী বেরিয়ে গেল, অথচ কেউই জানতে পারলেন না, এটা কী করে সম্ভব!”

মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে জেলাস্তরে ‘উন্নীত’ এই হাসপাতালে কার্যত কোনও নিরাপত্তা নেই, অভিযোগ রোগীর পরিজনদের। হাসপাতালের নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে একটি বেসরকারি সংস্থা। অভিযোগ, বেশির ভাগ সময়েই হাসপাতালের গেটে ও বিভিন্ন ওয়ার্ডের ঢোকার দরজায় নিরাপত্তা কর্মীরা দায়িত্ব পালন করেন না। জয়দেববাবুর হাতে স্যালাইনের চ্যানেল ছিল। তা সত্ত্বেও তিনি বেরিয়ে যাওয়ার সময় কেন কারও চোখে পড়ল না, সেই প্রশ্নও উঠেছে।

এ দিন হাসপাতালে গিয়ে সুপার মলয় আদকের দেখা মেলেনি। কেননা, রবিবার তিনি আসেন না। দু’জন সহকারি সুপারেরও দেখা মেলেনি। ওয়ার্ড মাস্টারের ঘরও খালি ছিল। পরে সেখানে চতুর্থ শ্রেণীর কর্মী সন্তোষকুমার দত্তের দেখা মিলল। জানা গেল, সন্তোষবাবু ওয়ার্ড মাস্টারের ‘প্রক্সি’ দিচ্ছেন। তিনি বলেন, “সকালে হাসপাতালের গেট খোলার পরে ওই রোগী নিখোঁজ হয়ে যান। সাড়ে সাতটা নাগাদ নার্স লক্ষ্য করেন রোগী নেই। এরপরই ঘটনাটি ঝাড়গ্রাম থানায় জানানো হয়।”

হাসপাতাল সুপার মলয় আদক দাবি করেছেন, “ভিজিটিং আওয়ার্স বাদে বিভিন্ন দরজায় সব সময় নিরাপত্তা কর্মীরা থাকেন। তা ছাড়া হাসপাতালের রোগীদের জেলখানার মতো পাহারা দেওয়া সম্ভব নয়। ওই রোগীর কাছে পরিবারের সদস্যদেরও থাকা উচিত ছিল।” সুপার মানছেন, “ঘটনাটি দুঃখজনক। কেন এমন হল তা দেখা হবে।”

jhargram district hospital patient's body road
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy