খবর আগে থেকে ছিলই। কিন্তু হাসপাতালে গিয়ে নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিলেন না। প্রতিটা বিভাগের দরজার সামনে করুণ মুখে লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন রোগীরা। অথচ চিকিৎসকের কোনও পাত্তাই নেই। সব দেখেশুনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার নেওয়ার কথা জানালেন। সেই মতো নির্ধারিত সময়ের মধ্যে হাসপাতালে না আসার জন্যে ৮ চিকিৎসককে শো-কজ চিঠি ধরাল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ৭ দিনের মধ্যে তাঁদের কারণ দর্শাতেও বলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার ঘটনাটি ঘটেছে চুঁচুড়া ইমামবাড়া সদর হাসপাতালে। শুধু তাই নয়, সতর্ক করা হয়েছে নার্স ও অন্যান্য কর্মীদেরও।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকালে চুঁচুড়ার বিধায়ক তপন মজুমদার হঠাৎই ওই হাসপাতাল পরিদর্শনে যান। হাসপাতাল সুপার এবং জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে নিয়ে হাসপাতালের ১৬ টি বহির্বিভাগ তিনি ঘুরে দেখেন। দেখা যায় হাসপাতালের বহির্বিভাগে সারি সারি রোগী লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। অথচ চিকিৎসকের দেখা নেই। তাঁদের সামনে পেয়ে ক্ষোভ উগরে দিলেন রোগীরা। জানালেন, প্রতিদিনই তাঁদের চিকিৎসার জন্য সকাল সকাল হাসপাতালে আসতে হয়। লাইন দিয়ে দাঁড়াতে হয়। অথচ ঘণ্টার পর ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও দেখা মেলে না কোনও চিকিৎসকদের। ধনেখালির বাসিন্দা অসীম মাঝি বলেন, “ দাঁতের ব্যথায় দীর্ঘদিন ধরে ভুগছি। তাই হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে এসেছিলাম। সকাল ৭টায় থেকে দাঁড়িয়ে রয়েছি। ঘণ্টা দু’য়েক হতে চলল। এখনও ডাক্তারের দেখা পেলাম না।” তিনি আরও জানান, “সদর হাসপাতালে যদি এই দশা হয় তাহলে গ্রামীণ হাসপাতালগুলিতে পরিষেবার কী হাল তা সহজেই বোঝা যাচ্ছে।”
এরপরে ক্ষুব্ধ ওই বিধায়ক অনুপস্থিত চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা সুপারকে জানান। তারপর হাসপাতাল ছেড়ে বেরিয়ে যান। ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অনুপস্থিত ৮ চিকিৎসককে শো-কজের চিঠি ধরান। তাঁদের ৭ দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
হাসপাতাল সুপার সভাস মণ্ডল বলেন, “ওই চিকিৎসকরা সময় মতো হাসপাতালে না আসায় আপাতত, তাঁদের শো-কজ চিঠি দেওয়া হয়েছে। তাঁদের ৭ দিনের মধ্যে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে। তাছাড়াও নার্সও সমস্ত কর্মীদেরও সময় মতো হাসপাতালে হাজির হওয়ায় জন্য সতর্ক করা হয়েছে।” বিধায়ক তপনবাবু বলেন, “রোগীদের থেকে খবর পেয়ে হাসপাতালে গিয়েছিলাম। তবে চিকিৎসকদের এই খামখেয়ালিপনা বরদাস্ত করা যায় না। প্রয়োজনে রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে জানাব।”
সাসপেন্ড হাসপাতাল সুপার
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা
ব্যারাকপুর বি এন বসু মহকুমা হাসপাতাল থেকে এক রোগিণী নিখোঁজ ও পরে উদ্ধার হওয়ার ঘটনায় সাসপেন্ড করা হল হাসপাতালের সুপার মৃদুল ঘোষকে। রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা বিশ্বরঞ্জন শতপথী বলেন, “বৃহস্পতিবার রাতেই সুপারের কাছে এ ব্যাপারে চিঠি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।” অন্য দিকে, স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের হস্তক্ষেপে বুধবার রাতেই ওই রোগিণী বাণী শর্মাকে ভর্তি করা হয় কলকাতার এক হাসপাতালে। বুধবার ব্যারাকপুরের মহকুমাশাসক পুলিশ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছিলেন, কী ভাবে ওই রোগিণী বেরিয়ে গেলেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তার তদন্ত করে রিপোর্ট দিতে। পুলিশ জানিয়েছে, বাণীদেবী অসংলগ্ন কথা বলায় তাঁর জবানবন্দি নেওয়া যায়নি। এক পুলিশকর্তা জানান, ওই রোগিণী সুস্থ হলে তাঁর জবানবন্দি নেওয়া হবে। তার পরেই তদন্ত-রিপোর্ট দেওয়া হবে।
ইবোলা বৈঠক
ইবোলা প্রতিরোধ নিয়ে বৃহস্পতিবার নবান্নে মুখ্যসচিব সঞ্জয় মিত্রের ডাকা বৈঠকে বসেন স্বাস্থ্য দফতর এবং বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধিরা। স্বাস্থ্য অধিকর্তা জানান, বাগডোগরা বিমানবন্দরে দ্রুত সতর্কতার নির্দেশ পাঠাতে বলা হয়েছে এয়ারপোর্ট অথরিটি অব ইন্ডিয়াকে। সেখানে বিশেষ চিকিৎসার ব্যবস্থা চালু করা নিয়ে ভাবনাচিন্তা চলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy