Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

নাগরিকপঞ্জিতে নাম নেই প্রকৃতিশ বড়ুয়ার! ক্ষুব্ধ গৌরীপুরের রাজপরিবার

প্রকৃতিবিদ ও হাতি বিশেষজ্ঞ ‘লালজি’ নামে খ্যাত প্রকৃতিশবাবু সর্বজনবিদিত নাম। পরিবারের হাতে ১৯৫১ সালের নাগরিকপঞ্জির মূল প্রতিলিপি ও অন্য সব নথিপত্র ছিল। কিন্তু তার পরেও কম্পিউটার ১৯৫১ সালের নাগরিকপঞ্জিতে প্রকৃতিশ বড়ুয়ার নাম খুঁজে পায়নি। 

গৌরীপুর রাজবাড়ির মালখানায় প্রবীর বড়ুয়া। নিজস্ব চিত্র

গৌরীপুর রাজবাড়ির মালখানায় প্রবীর বড়ুয়া। নিজস্ব চিত্র

রাজীবাক্ষ রক্ষিত
গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০১৮ ০২:৫১
Share: Save:

তাঁদের কাছে সব নথি রয়েছে। এক ডাকে গোটা পরিবারকে চেনে গোটা রাজ্য। কিন্তু ১৯৫১ সালের এনআরসিতে গৌরীপুরের রাজপরিবারের প্রধান তথা প্রয়াত ‘বিধায়ক’ প্রকৃতিশচন্দ্র বড়ুয়ার নাম না মেলায় অপমানিত ও বিস্মিত রাজবাড়ির বর্তমান প্রজন্ম। এনআরসি নবীকরণের জন্য পূর্বপুরুষের অসমবাসের লিগ্যাসি ডেটা প্রয়োজন হয়। প্রকৃতিশবাবুর পুত্র প্রবীর বড়ুয়া জানান, তাঁরা অসমের সবচেয়ে পুরনো পরিবারগুলির অন্যতম। প্রকৃতিবিদ ও হাতি বিশেষজ্ঞ ‘লালজি’ নামে খ্যাত প্রকৃতিশবাবু সর্বজনবিদিত নাম। পরিবারের হাতে ১৯৫১ সালের নাগরিকপঞ্জির মূল প্রতিলিপি ও অন্য সব নথিপত্র ছিল। কিন্তু তার পরেও কম্পিউটার ১৯৫১ সালের নাগরিকপঞ্জিতে প্রকৃতিশ বড়ুয়ার নাম খুঁজে পায়নি।

গৌরীপুর রাজপরিবারের পূর্বপুরুষ নরহরি রায় মিথিলারাজের মন্ত্রী ছিলেন। ষোড়শ শতকে বিহার থেকে এসে কোচ রাজার সভায় স্থান পান নরহরি। তিনিই প্রথম বড়ুয়া পদবী নেন। তাঁর নাতি কবীন্দ্র পাত্রকে কোচ রাজা নরনারায়ণ মুখ্যমন্ত্রী পদে নিযুক্ত করেন। তিনি মোগলদের কাছ থেকে কানুনগো হিসেবে রাঙামাটিতে জমি পান। সেখান থেকেই পত্তন গৌরীপুরের। ১৮৮০ সালে প্রতাপচন্দ্র বড়ুয়া সন্তানহীন অবস্থায় মারা গেলে রানি ভবানী প্রভাতচন্দ্র বড়ুয়াকে দত্তক নিয়ে জমিদারি চালাতে থাকেন। প্রজাপালন ও উন্নয়নমূলক কাজে নিবেদিতপ্রাণ প্রভাতচন্দ্র বড়ুয়া সেই অর্থে গৌরীপুরের শেষ রাজা। তিনি ১৯৪০-এ মারা যান। তাঁর দুই পত্নীর আট সন্তানের মধ্যে প্রকৃতিশ ও প্রমথেশ বড়ুয়া প্রসিদ্ধি লাভ করেন। প্রকৃতিশবাবু থেকে যান অসমে। আর প্রমথেশ বিদেশ ঘুরে ভারতে ফিরে নায়ক-পরিচালক হিসেবে বিখ্যাত হয়ে ওঠেন। প্রবীরবাবুর মতে, স্বাধীনতার পরে ধুবুড়ি জেলায় সরকারি নথিপত্র মোটেই সংরক্ষিত হয়নি। বিভিন্ন তথ্যের নবীকরণও হয়নি। ফলে ঐতিহ্যশালী গৌরীপুর রাজবাড়িই নয়, আরও অনেক পরিবারের নাম ১৯৫১-এর এনআরসিতে মিলছে না। তাই ১৯৬৬-র ভোটার তালিকাই তাঁদের সম্বল। সেই তালিকায় অবশ্য রাজপরিবারের সকলের নাম রয়েছে। তাই চূড়ান্ত তালিকাতেও তাঁদের নাম থাকবে বলেই আশা।

আরও পড়ুন: পরিবারের কর্তা ‘বিদেশি’, ব্রাত্য করেছেন পড়শিরাও

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Prabir Barua Assam
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE