সরিতা সিংহ
মা তখন একটা চিঠি পড়ে শোনাচ্ছেন। চিঠিতে দিল্লির ব্যবসায়ীরা লিখেছেন, কেন তাঁদের দোকান বন্ধ করে দিচ্ছে পুরসভা? জোর আলোচনা চলছে দিল্লি বিধানসভায়।
মায়ের সঙ্গে অদ্বৈতও এসেছে আজ। শীতকালীন অধিবেশনটায় রোজই আসছে। পুরো নাম অদ্বৈত অভিনব রাই। বয়স দু’মাস।
বিধানসভার বিশ্রাম-লাউঞ্জে শুয়ে মাঝেমধ্যে অবশ্য চোখ লেগে যাচ্ছে ছেলের! তার বিধায়ক-মা সরিতা সিংহ কিন্তু নিশ্চিন্ত।
কারণ, তিনি যখন বিধানসভা কক্ষে বা কোনও বৈঠকে ব্যস্ত, তাঁর আম আদমি পার্টির সতীর্থরা কেউ না কেউ পালা করে বসে থাকছেন অদ্বৈতকে কোলে নিয়ে।
অদ্বৈতের বাবা অভিনব রাই আপ-এর ‘দুর্নীতি হটাও অভিযানে’ স্বেচ্ছাসেবী ছিলেন। দলের সূত্রেই সরিতার সঙ্গে তাঁর আলাপ। ২০১৬-য় বিয়ে। গত বিধানসভা ভোটে রোহতাস নগর কেন্দ্র থেকে জেতেন সরিতা। অদ্বৈত জন্মায় গত বছরের ৮ নভেম্বর। সরিতা সেই ইস্তক এক হাতে ছেলেকে সামলাচ্ছেন, অন্য হাতে জনপ্রতিনিধি হিসেবে যাবতীয় কর্তব্য। দলের বৈঠক, জনসংযোগ, কোনও কিছুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান— সবেতেই যাচ্ছেন। বিধানসভা শুরু হতে তিনি সেখানে অদ্বৈতকে নিয়ে আসছেন, কারণ ঘণ্টা দুয়েক পর পর তাকে দুধ খাওয়াতে হয়।
গত সেপ্টেম্বরে এই একটি চিন্তার কথাই তুলেছিলেন অসমের অভিনেত্রী-বিধায়ক আঙুরলতা ডেকা। আইনসভার সদস্যেরা যাতে অধিবেশন কক্ষেই সন্তানকে স্তন্যপান করাতে পারেন, তা নিয়ে আইন রয়েছে অস্ট্রেলিয়ায়। গত বছরই সে দেশের সেনেটর ল্যারিসা ওয়াটার্স তাঁর শিশুকন্যাকে স্তন্যপান করাতে করাতে একটি প্রস্তাব পেশ করেছিলেন পার্লামেন্টে। সারা দুনিয়াকে নাড়া দিয়েছিল সে ছবি। আঙুরলতা বলেছিলেন, তিনি অস্ট্রেলিয়ার মতো আইনের দাবি তুলছেন না। কিন্তু তাঁকে অধিবেশন চলাকালীন মেয়েকে খাওয়াতে বারবার কোয়াটার্সে ছুটতে হচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ বিতর্কে থাকতে পারছেন না। কাজেই সন্তানকে স্তন্যপান করানোর জন্য আইনসভায় একটি আলাদা ঘরের বন্দোবস্ত করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন আঙুরলতা। বলেছিলেন, ‘‘বিধায়ক-সাংসদদের পক্ষে তো ছ’মাসের মাতৃত্বকালীন ছুটিতে যাওয়া সম্ভব নয়।’’
যেমন ছুটি নেই সরিতার। মেহরৌলির আপ বিধায়ক নরেশ যাদব বলেছেন, ‘‘বিধানসভায় কোরাম হওয়াটা দরকার। কিন্তু এক জনকে অদ্বৈতের সঙ্গে থাকতেই হবে। ও আম আদমি পার্টির ভবিষ্যৎ।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy