জগন্মোহন রেড্ডি ও নবীন পট্টনায়ক। -ফাইল ছবি।
‘চন্দ্রপতন’ ঘটল অন্ধ্রে। চলে যেতে হল অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নায়ডুকে। চমকে দেওয়ার মতো উত্থান হল কংগ্রেস ছেড়ে ওয়াইএসআর কংগ্রেস গড়ে তোলা জগন্মোহন রেড্ডির। অন্য দিকে, নানা ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্যেও নিজের গড় আগলে রাখতে পারলেন ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ক।
তবে লোকসভা ভোটের মতো বিজেপি কিন্তু ‘অশ্বমেধের ঘোড়া’ ছোটাতে পারেনি ৪ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে। ফলাফল এখনও পর্যন্ত যেটুকু বেরিয়েছে, তাতে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের অরুণাচল প্রদেশ ছাড়া আর কোনও রাজ্যেই বিধানসভা ভোটে দৃশ্যত কোনও শক্তি হয়ে ওঠার জোরালো ইঙ্গিত দিতে পারেনি বিজেপি।
তবে শেষ দফার ভোটের দিন থেকেই যিনি রাজ্যে রাজ্যে ঘুরে কেন্দ্রে বিজেপি-বিরোধী জোট গড়ে তুলতে মরীয়া হয়ে উঠেছিলেন, সেই তেলুগু দেশম পার্টি তা চন্দ্রবাবু নায়ডুর ভরাডুবি হল তাঁর রাজ্যেই। ভোটে হেরে গিয়ে পদত্যাগ করতে হল মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নায়ডুকে।
ভোটগণনায় এখনও পর্যন্ত যে আভাস মিলেছে, তাতে সেই চন্দ্রবাবুর কট্টর প্রতিপক্ষ জগন্মোহন রেড্ডির দল ওয়াইএসআর কংগ্রেসের হাতেই যাচ্ছে অন্ধ্রপ্রদেশ। ১৭৫ সদস্যের অন্ধ্রপ্রদেশ বিধানসভায় ওয়াইএসআর কংগ্রেস এগিয়ে রয়েছে ১৫২টি আসনে। চন্দ্রবাবুর দল তেলুগু দেশম এগিয়ে মাত্র ২৩টি আসনে।
গত লোকসভা নির্বাচনে তেলুগু দেশম পার্টি অন্ধ্রে ১৫টি আসন পেলেও যেখানে পেয়েছিল ৪০.৫ শতাংশ ভোট, সেখানে মাত্র ৮টি আসন পেলেও জগনের দল পেয়েছিল ৪৫.৩৮ শতাংশ ভোট। তার আগে বিধানসভা ভোটেও উল্লেখযোগ্য সাফল্য পেয়েছিল জগনের দল, ভোটপ্রাপ্তির শতাংশের নিরিখে।
তবে অন্ধ্রপ্রদেশের মতো দক্ষিণের একটি বড় রাজ্যে নিজেরা কিছু করে দেখাতে না পারলেও হয়তো এ বার ‘নতুন বন্ধু’ পেতে চলেছে বিজেপি। বহু দিনের সঙ্গী অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী তেলুগু দেশম নেতা চন্দ্রবাবু নায়ডু বিজেপির সঙ্গ ছেড়েছিলেন গত বছর।
২০১৪-র বিধানসভা ভোটে কিন্তু বিজেপি ৪টি আসন পেয়েছিল অন্ধ্র বিধানসভায়। চন্দ্রবাবুর দল পেয়েছিল ১০২টি আসন। জগনের দলের ঝুলিতে গিয়েছিল ৬৭টি আসন। এ বার লোকসভা ভোটের আগেই বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে কয়েক দফা কথা হয়েছে জগন্মোহনের। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের ধারণা, কেন্দ্রে বিজেপির নেতৃত্বে শক্তিশালী এনডিএ সরকার গঠনের ইঙ্গিত মেলায় জগন বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দেবেন বিজেপির দিকেই। সে ক্ষেত্রে অন্ধ্রপ্রদেশের মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি দক্ষিণী রাজ্যে চন্দ্রবাবুর মতো বহু দিনের ‘বন্ধু’কে হারানোর দুঃখ বিজেপি ভুলতে পারবে জগনের হাত ধরে।
আরও পড়ুন- দেশ জুড়ে ফের গেরুয়া ঝড়! মোদীর শাসনেই ভারত, বিরোধী শিবির অন্ধকারেই
আরও পড়ুন- উত্তরপ্রদেশে ছুটল বিজেপির অশ্বমেধের ঘোড়া, মুখ থুবড়ে পড়ল বুয়া-বাবুয়ার মহাজোট
পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়কের রাজ্য ওড়িশাও ছিল এ বার বিজেপির টার্গেটে। কিন্তু লোকসভা ভোটে কিছুটা দাগ কাটতে পারলেও এখনও পর্যন্ত প্রকাশিত ফলাফলের ট্রেন্ডে বিজেপি তেমন কিছু করে দেখাতে পারেনি। তবে গত বারের চেয়ে বিধানসভায় হয়তো আসন বাড়াতে চলেছে বিজেপি। এখনও পর্যন্ত এগিয়ে রয়েছে ২৫টি আসনে। কংগ্রেস এগিয়ে রয়েছে ১০টি আসনে।
১৪৭ আসনের ওড়িশা বিধানসভায় এখনও পর্যন্ত ১১০টি আসনে এগিয়ে রয়েছে বিজেডি। বিজেপি এগিয়ে রয়েছে ২৫টি আসন। কংগ্রেস ১০টিতে এবং অন্যান্য ১টি আসনে এগিয়ে রয়েগত বিধানসভা ভোটে ওড়িশায় বিজেডি পেয়েছিল ১১৭টি আসন। আর বিজেপি জিতেছিল ১০টি আসনে।
বরং উত্তর-পূর্বা়ঞ্চলের অরুণাচল প্রদেশে বিধানসভা ভোটে এখনও পর্যন্ত ১৮টি আসনে এগিয়ে রয়েছে বিজেপি। তার মধ্যে তিনটি আসনে ইতিমধ্যেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছেন বিজেপি প্রার্থীরা। রাজ্য বিধানসভার আসন সংখ্যা ৬০। ম্যাজিক ফিগার ৩১। তবে কংগ্রেস এবং এনপিপির মতো দলগুলি এখনও পর্যন্ত খাতাই খুতে পারেনি। অরুণাচল ছিল কংগ্রেসের দখলে। গত বার কংগ্রেস পেয়েছিল ৪২টি আর বিজেপি পেয়েছিল ১১টি আসন।
৩২ সদস্যের সিকিম বিধানসভা ভোটের ফলাফলে এখনও পর্যন্ত খাতা খুলতে পারেনি বিজেপি। গত বারও সিকিম বিধানসভায় কোনও আসন পায়নি বিজেপি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy