Advertisement
E-Paper

প্রবাদের ঝুলি নিয়ে কেরলে বাঁকুড়ার দিশা

চাষিদের হিসেবে, দক্ষিণ দিক থেকে হাওয়া বইলে সেটা নিম্নচাপ কেটে যাওয়ার লক্ষণ।

তারাশঙ্কর গুপ্ত

শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২০ ১০:০০
দিশা মণ্ডল। —নিজস্ব চিত্র।

দিশা মণ্ডল। —নিজস্ব চিত্র।

‘পুরনো চাল ভাতে বাড়ে, দেশি বীজ ধাতে বাড়ে’।

উচ্চ ফলনশীল আর পুরনো দেশি পেঁপের বীজ এক সঙ্গে লাগিয়ে ওরা দেখেছে, দ্বিতীয়টি বেশি ঘাতসহ। ফলন কিছু কম হলেও, মানে ভাল।

‘বামুন, বাদল, বান, দখিনা পেলেই যান।’

চাষিদের হিসেবে, দক্ষিণ দিক থেকে হাওয়া বইলে সেটা নিম্নচাপ কেটে যাওয়ার লক্ষণ। নিজেদের তৈরি বাত-পতাকায় (বায়ুর দিক নির্দেশ যন্ত্র) বছরখানেক ধরে নজর রেখে ওরা দেখেছে, কথাটা ভুল নয়।

‘সকালের কুটুম্ব থাকে না, বিকেলের কুটুম্ব যায় না।’

এক বছর ধরে বৃষ্টির আসা-যাওয়ার হিসেব ওরা রেখেছে খাতায়। দেখেছে, সকালে বৃষ্টি শুরু হলে সাধারণত থেমে যায়। কিন্তু বিকেলে শুরু হলে, সহজে থামতে চায় না।

আরও পড়ুন: আম আদমিতে যোগ দিলেন কংগ্রেসের আরও দুই নেতা

কেরলে জাতীয় শিশু বিজ্ঞান কংগ্রেসে তথ্যপ্রমাণ নিয়ে গিয়ে সম্প্রতি বাঁকুড়ার দশম শ্রেণির ছাত্রী দেখিয়ে এল, প্রবীণদের মুখে যে প্রবচনগুলি শোনা যায়, তা নেহাত উড়িয়ে দেওয়ার মতো নয়। ডিসেম্বরের শেষে কেরলের তিরুঅনন্তপুরমে ওই আসর বসেছিল। পশ্চিমবঙ্গ থেকে সেখানে প্রতিনিধিত্ব করেছে বাঁকুড়ার বড়জোড়ার ভিড়কাশোল গ্রামের দিশা মণ্ডল। স্থানীয় নিবারণ মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্রের ছাত্রী দিশার প্রকল্পের বিষয় ছিল ‘আবহাওয়া ও কৃষির সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত প্রবাদের পিছনে বৈজ্ঞানিক নীতিগুলির মূল্যায়ন’।

ওই স্কুলের শিক্ষক তথা দিশার ‘প্রজেক্ট গাইড’ শুভ্রাংশু বসু জানাচ্ছেন, জেলা এবং রাজ্য স্তরে সফল হয়ে সে পাড়ি দিয়েছিল কেরলে। দিশার বাড়ি এবং স্কুল কৃষিপ্রধান এলাকায়। তাই প্রকল্পের জন্য মাটির কাছাকাছি বিষয় ভাবা হয়েছিল। স্কুলের বাগানে ছাত্রছাত্রীরা বিভিন্ন চাষ করেছিল। তৈরি করা হয়েছিল ছোট্ট পরীক্ষাগার। বানিয়ে নেওয়া হয়েছিল বাত-পতাকা। আনা হয়েছিল বৃষ্টি মাপার যন্ত্র আর থার্মোমিটার। বছরখানেক ধরে পড়ুয়ারা বৃষ্টি আর হাওয়ার গতিপ্রকৃতি দেখে লিখে রেখেছিল খাতায়। সে তথ্যই তুলে ধরা হয়েছে শিশু বিজ্ঞান কংগ্রেসে।

পুরুলিয়ার জেলা কৃষি অধিকর্তা সুশান্ত মহাপাত্রও বলছেন, ‘‘বিভিন্ন প্রবাদের মধ্যে দিয়ে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে জ্ঞান সঞ্চারিত হয়। চাষের ক্ষেত্রে এ সমস্ত প্রবাদ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে এখন উন্নত প্রযুক্তির অনেক সুবিধা মিলছে। প্রাচীন জ্ঞান আর আধুনিক বিজ্ঞান মিলিয়েই উন্নতি সম্ভব।’’ নিবারণ মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক মানিকচন্দ্র পাল জানান, দিশা ছিল প্রকল্পটির দলনেত্রী। তাকে সাহায্য করেছেন শিক্ষকেরা। পাশে ছিলেন প্রাক্তন শিক্ষক হলধর অধিকারী।

দিশার বাবা দিলীপকুমার মণ্ডল মুদির দোকান চালান। দিশা বলছে, ‘‘বড় হয়ে কৃষিবিজ্ঞানী হতে চাই।’’

Bankura Childrens Science Congress Kerala
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy