Advertisement
E-Paper

অসাংবিধানিক বলল কংগ্রেস, তুমুল হইচই, এর মধ্যেই অমিতের নাগরিকত্ব বিল পেশ লোকসভায়

এ দিন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সংসদের নিম্নকক্ষে বিলটি পেশ করার পর আলোচনা শুরু হয়ে যায়। বিলের তীব্র বিরোধিতা করেন লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরী।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০১৯ ১২:৪২
লোকসভায় সিএবি পেশ অমিত শাহের। ছবি: লোকসভা টিভির সৌজন্যে

লোকসভায় সিএবি পেশ অমিত শাহের। ছবি: লোকসভা টিভির সৌজন্যে

নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল নিয়ে তুমুল বিতর্ক দেশ জুড়ে। সোমবার সেই বিতর্কের ঝড় আছড়ে পড়ল সংসদেও। এ দিন লোকসভায় বিলের তীব্র বিরোধিতা করেন কংগ্রেস-সহ অধিকাংশ বিরোধী দলের সাংসদরা। যদিও, বিলের পক্ষে জোর সওয়াল করেন অমিত শাহ। অবশেষে, ধ্বনি ভোটে বিল পেশের ছাড়পত্র মেলে।

লোকসভায় বিল নিয়ে চর্চা শুরু হতেই হইচই জুড়ে দেন বিরোধীরা। বিলটি ‘অসাংবিধানিক’ এবং ‘বিভেদ সৃষ্টিকারী’ বলে ব্যাখ্যা করেন তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ সৌগত রায়। বিলের একাধিক অংশ নিয়ে আপত্তি তোলেন লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরীও। বিলটি সংখ্যালঘুদের স্বার্থ বিরোধী বলে আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘আমাদের দেশের সংখ্যালঘু মানুষদের নিশানা করেই এই বিলটি বানানো হয়েছে।’’ অধীর স্পষ্ট অভিযোগ করেন, ‘‘বিলটি সংবিধানের ১৪ নম্বর অনুচ্ছেদ লঙ্ঘন করছে।’’ ওই অনুচ্ছেদে প্রত্যেক নাগরিকের আইনের সমানাধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। যদিও এ দিন অমিত শাহর অবশ্য দাবি করেছেন, এই বিল সংখ্যালঘুদের বিরোধী নয়।

বিলটি নিয়ে লোকসভায় বিতর্ক এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে বার বার হস্তক্ষেপ করতে হয় স্পিকার ওম বিড়লাকে। এই বিল কেন প্রয়োজন তার প্রেক্ষাপট ব্যাখ্যা করতে গিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘‘আফগানিস্তান, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের সংবিধানে রাষ্ট্রের ধর্মের উল্লেখ করা হয়েছে। ভারত ভাগের পর, ১৯৫০ সালে নেহরু-লিয়াকত সমঝোতার মাধ্যমে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু, দুর্ভগ্যবশত তাঁদের উপর অত্যাচার হয়েছে।’’ অমিত শাহের দাবি, তিন দেশেই হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পারসি, ও ক্রিশ্চানদের উপর অত্যাচার হয়েছে। ওই তিন দেশের সংখ্যালঘুদের নাগরিকত্ব দেওয়ার জন্যই এই বিল, জানান কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তাঁর এই মন্তব্যের পরই লোকসভায় তুমুল হই হট্টগোল শুরু করেন কংগ্রেস-সহ বিরোধী সাংসদরা। উত্তেজিত হয়ে পাল্টা অমিত শাহ বলেন, ‘‘কংগ্রেসই ধর্মের ভিত্তিতে দেশ বিভাজন করেছে। এটা ইতিহাস বলছে। আর এখন এটা কংগ্রেসকে শুনতে হবে।’’ অমিতের এই মন্তব্যে ফের হইচই শুরু হয়ে যায়।

আরও পড়ুন: উপহার সিনেমা হলের স্মৃতি ফিরল দিল্লিতে, অগ্নিদগ্ধ হয়ে ৪৩ জনের মৃত্যু​

পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যে বিলটি পেশের জন্য ধ্বনি ভোট নিয়ে হয়। অবশেষে, ভোটাভুটিতে লোকসভায় বিলটি পুনরায় পেশের ছাড়পত্র মেলে। এর পক্ষে ভোট পড়ে ২৯৩টি। বিলের বিপক্ষে ভোট পড়ে ৮২টি। এর পর ওই বিল নিয়ে আলোচনা শুরু হয় সংসদের নিম্নকক্ষে।

বিলটি নিয়ে সংসদের ভিতরে যেমন তরজা শুরু হয়েছে, তেমনই বিক্ষোভ চলছে বাইরেও। এ দিন বিল পেশের আগে দিল্লির যন্তর মন্তরে বিক্ষোভ দেখান অল ইন্ডিয়া ইউনাইটেড ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট (এআইইউডিএফ)-এর সাংসদ বদরুদ্দিন আজমল। সিএবি নিয়ে ক্ষোভে ফুঁসছেন উত্তর-পূর্ব ভারতের একটি অংশের মানুষ। এ দিন বিলের প্রতিবাদে বিক্ষোভ দেখানো হয় ত্রিপুরাতেও।

আরও পড়ুন: বড় নেতার ঘনিষ্ঠ খাদান মালিকের সঙ্গে বিরোধ! উপরতলার ‘শাসনে’ চাকরি ছাড়লেন ওসি​

দিন কয়েক আগেই বিলটিকে ছাড়পত্র দেয় মন্ত্রিসভা। গত জানুয়ারিতে লোকসভায় পেশ হয়েছিল সংশোধিত বিলটি। তাতে বলা হয়েছিল, আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ থেকে আসা হিন্দু, শিখ, জৈন, পার্সি, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী মানুষ, যাঁরা এ দেশে শরণার্থী হিসেবে রয়েছেন, তাঁদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। বিলটিতে ভিত্তিবর্ষ হিসাবে ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৪ সালকে ধরা হয়েছে। অর্থাৎ ওই দিনের আগে যাঁরা ভারতে এসেছেন, তাঁরাই নাগরিকত্ব পাবেন।

(ভ্রম সংশোধন: এই প্রতিবেদনটি ক্রমাগত আপডেট হচ্ছে। এক সময় বলা হয়েছিল, বিলটি পাশ হয়েছে, যা সঠিক নয়। এই অনিচ্ছাকৃত ত্রুটির জন্য আমরা দুঃখিত।)

CAB Lok Sabha Amit Shah
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy