Advertisement
E-Paper

অস্ত্র টেপ, পাল্টা যুক্তি রাজীবের

ওই কথাবার্তার পরেই সিবিআই রাজীব কুমারের বিরুদ্ধে ‘সক্রিয়’ হয়ে উঠেছে বলে এবার সুপ্রিম কোর্টে রাজীবের হয়ে যুক্তি দিতে চলেছে রাজ্য সরকার।

প্রেমাংশু চৌধুরী

শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০১৯ ০৩:৪৬
—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

গত বছর অক্টোবরের কথা। সোশ্যাল মিডিয়ায় টেলিফোন-সংলাপের একটি অডিয়ো ক্লিপ ছড়িয়ে পড়েছিল। অভিযোগ উঠেছিল, এক জনের কণ্ঠস্বরের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের ভারপ্রাপ্ত বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়ের, অন্যজনের সঙ্গে মুকুল রায়ের গলার মিল রয়েছে। কৈলাস এ ধরনের কথাবার্তা অস্বীকার করলেও মুকুল বলেছিলেন, দলের নেতার সঙ্গে তাঁর কথা হতেই পারে। সেই টেপেই শোনা গিয়েছিল, রাজ্যের চার আইপিএস অফিসারকে ‘ভয়’ দেখানো প্রসঙ্গে কথোপকথন।

ওই কথাবার্তার পরেই সিবিআই রাজীব কুমারের বিরুদ্ধে ‘সক্রিয়’ হয়ে উঠেছে বলে এবার সুপ্রিম কোর্টে রাজীবের হয়ে যুক্তি দিতে চলেছে রাজ্য সরকার।

গত সপ্তাহেই রাজীব কুমারকে গ্রেফতারির অনুমতি চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল সিবিআই। সরকারি সূত্রের খবর, শীর্ষ আদালতের নির্দেশ মেনে শনিবারই ওই হলফনামা জমা পড়তে চলেছে। প্রমাণ হিসেবে ওই কথোপকথনের অডিয়ো ক্লিপ-ও জমা দেওয়া হবে। তা দেখিয়েই রাজ্য প্রমাণ করার চেষ্টা করবে, সিবিআইয়ের পদক্ষেপের পিছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য কাজ করছে।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

রাজীবের গ্রেফতারি চাওয়ার পিছনে সিবিআইয়ের প্রধান দাবি ছিল, তিনি শিলংয়ে জেরার মুখোমুখি হলেও গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে গিয়েছেন। রাজ্যের পাল্টা যুক্তি হতে চলেছে, শিলংয়ে রাজীবকে ৪০ ঘণ্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদের সবটাই ভিডিয়ো রেকর্ডিং করা হয়েছে। সিবিআই তা হলে সেই রেকর্ডিং জমা করুক।
সুপ্রিম কোর্টে এই অভিযোগও তোলা হচ্ছে, সিবিআই সারদা তদন্ত শুরু করার পরে কখনও রাজীব কুমারের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেনি। ২০১৭-য় কৈলাস জনসভায় বলেন, রাজীব প্রমাণ নষ্ট করেছেন। রাজীব কৈলাসের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেন। তারপরেই সিবিআই রাজীবকে নিশানা করা শুরু করে। নোট বাতিলের পরে কালো টাকা সাদা করার অভিযোগে সিবিআইয়ের শীর্ষ অফিসার এম নাগেশ্বর রাওয়ের স্ত্রী এবং কন্যার সংস্থার বিরুদ্ধে রাজ্য পুলিশের তদন্ত শুরু হওয়ায়, সিবিআই রাজীবের বিরুদ্ধে প্রমাণ লোপাট, অভিযুক্তদের ‘কল ডিটেল রেকর্ডস’-এ কারচুপির অভিযোগ তোলে বলেও রাজ্যের অভিযোগ।

রাজীবের যুক্তি হচ্ছে, তাঁকে এত দিন সাক্ষী হিসেবে সিবিআই ডেকে পাঠিয়েছিল। এখন তাঁকে সিবিআই গ্রেফতার করতে চায় কোন যুক্তিতে? সিবিআইয়ের এত দিনের কোনও চার্জশিটেও রাজীবের নাম নেই। বিধাননগর কমিশনারেটের ১২টি মামলার ১০ জন তদন্তকারী অফিসারের মধ্যে সিবিআই মাত্র ১ জনের সঙ্গে কথা বলেছে। তাতেই সিবিআই কী ভাবে বুঝে গেল, রাজীব অন্য কাউকে বাঁচানোর চেষ্টা করছেন।

সিবিআই অভিযোগ তুলেছিল, রাজীব কুমার বিধাননগরের পুলিশ কমিশনার থাকার সময় সারদা ও রোজ ভ্যালি অবাধে টাকা তুলেছিল। ওই দুই সংস্থার কর্পোরেট দফতর বিধানগরে হওয়া সত্ত্বেও রাজীব কোনও ব্যবস্থা নেননি। রাজীব পাল্টা যুক্তি দিতে চলেছেন, তাঁর এলাকায় একটি বাদে বাকি সবই কর্মীদের বেতন না পাওয়ার মামলা ছিল। তিনি সেবি-কে চিঠি পাঠিয়ে ফরেনসিক অডিটর নিয়োগ করতে বলেন। হায়দরাবাদের একটি সংস্থাকে নিয়োগও করা হয়।

রাজীবের বিরুদ্ধে প্রভাবশালীদের বাঁচানোর চেষ্টার অভিযোগের জবাবে রাজ্যের যুক্তি, রাজীবের নেতৃত্বে এসআইটি কোন কোন প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে তদন্ত করছে, তার তালিকাও সুপ্রিম কোর্টে মুখবন্ধ খামে জমা করা হয়েছিল। প্রাক্তন বিচারপতি টি এস ঠাকুর টাকার হাতবদল খুঁজতে রাজ্য পুলিশের তদন্তের প্রশংসাও করেছিলেন।
সিবিআইয়ের অভিযোগ ছিল, প্রভাবশালীদের বাঁচাতে চেয়ে প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ কুণাল ঘোষের কাছে বয়ান চাওয়া হয়েছিল। তিনি তা নিয়ে রাজীব কুমারকে অভিযোগ জানাতেই, তার তদন্ত না করে কুণালকে গ্রেফতার করা হয়। রাজ্যের পাল্টা যুক্তি হবে, বেশ কয়েক বার জিজ্ঞাসাবাদের পরে গ্রেফতারির ঠিক আগে কুণাল এই চিঠি লেখেন। সিবিআই বরাবরই কুণালকে অভিযুক্ত হিসেবে জামিনের বিরোধিতা করেছে। এখন তাঁর কথায় সিবিআই কেন ভরসা করছে!

CBI vs Kolkata Police Rajeev Kumar Supreme Court Of India
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy