প্রতীকী ছবি।
অ্যামাজন-ফ্লিপকার্টের মতো ই-কমার্স সংস্থা লোকসানে চললেও তাদের আপত্তি নেই। কিন্তু সঙ্ঘ পরিবারের সংগঠন স্বদেশি জাগরণ মঞ্চ চায়, আগামী বাজেটে এই সংস্থাগুলির উপরে কর বসাক নরেন্দ্র মোদী সরকার। স্বদেশি মঞ্চের নেতারা ফেসবুকের মতো সোশ্যাল মিডিয়া সংস্থাকেও ছাড় দিতে নারাজ। মঞ্চের দাবি, ফেসবুক যতই বলুক তাদের ব্যবসা এ দেশে নয়, তাদের উপরে কর বসানো হোক। রাজকোষের ঘাটতি সামাল দিতে অর্থ মন্ত্রকও মঞ্চের এই সব প্রস্তাব নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু করেছে।
স্বদেশি জাগরণ মঞ্চের যুগ্ম-আহ্বায়ক অশ্বিনী মহাজন বলেন, ‘‘আমরা আগেও বলেছি। এ বার কেন্দ্রীয় সরকার গুরুত্বের সঙ্গে বিষয়টি দেখছে। কারণ সরকারের কাছে যথেষ্ট টাকা নেই।’’ কিন্তু লোকসানে চলা সংস্থার থেকে কী ভাবে কর আদায় করা সম্ভব? অশ্বিনীর জবাব, ‘‘ম্যাট বা ন্যূনতম বিকল্প কর বসানো হোক। না-হলে এই সংস্থাগুলির ব্যবসার পরিমাণের উপরে কর আদায় করা হোক। ফেসবুকের মতো সংস্থাও বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে বিপুল আয় করছে। কিন্তু বলছে, তাদের ব্যবসা বিদেশে। এদের থেকে কর আদায়ের রাস্তাও খুঁজতে হবে। সরকার গুরুত্ব দিয়ে এ বিষয়ে কাজ শুরু করেছে।’’
মোদী জমানায় আর্থিক নীতিতে সঙ্ঘ-পরিবারের অর্থনৈতিক ‘থিঙ্ক-ট্যাঙ্ক’ স্বদেশি জাগরণ মঞ্চ ক্রমশই প্রভাব বিস্তার করছে বলে খবর। আরসেপ-এর মতো আন্তর্জাতিক বাণিজ্য চুক্তি থেকে সরে আসা বা অ্যামাজনের কর্ণধার জেফ বেজোসের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সাক্ষাৎ না-করার মতো ঘটনায় সেই ছাপ স্পষ্ট। অর্থ মন্ত্রকের কর্তারা মনে করছেন, ১ ফেব্রুয়ারির বাজেটেও স্বদেশি চিন্তার ছাপ থাকবে।
আনন্দবাজারকে অশ্বিনী বলেন, ‘‘আমরা সরকারকে সুপারিশ করেছি, বাজেটে ছোট চাষি, শ্রমিক, ছোট ও মাঝারি শিল্পের জন্য যতখানি সুরাহা দেওয়া যায়, তোমরা দাও। কিন্তু টাকা না-থাকলে কোথা থেকে দেবে? আগে রাজস্ব থেকে আয় বাড়ানোর দিকে নজর দিতে হবে। অর্থমন্ত্রী যে-পরিমাণ রাজস্ব আয়ের লক্ষ্য নিয়েছিলেন, চলতি বছরে তার থেকে আড়াই লক্ষ কোটি টাকা কম আয়ের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।’’
অর্থ মন্ত্রকের কর্তারাও মানছেন, চলতি অর্থ বছরে আয়কর, কর্পোরেট কর থেকে যতখানি আয় হবে বলে অনুমান ছিল, বাস্তবে আয় তার থেকে অন্তত ১.৫ লক্ষ কোটি টাকা কম হতে চলেছে। জিএসটি ও অন্যান্য শুল্ক থেকে আয়েও লক্ষ্যমাত্রার থেকে প্রায় এক লক্ষ কোটি টাকা আয় কম হওয়ার দুশ্চিন্তা তৈরি হয়েছে।
অশ্বিনীর কথায়, ‘‘কেন এই ঘাটতি, তা বুঝতে হবে। এর কারণ হল, যে-সব ক্ষেত্রে সবথেকে বেশি বৃদ্ধি হচ্ছে, যেখানে সব থেকে বেশি ব্যবসা হচ্ছে, সেখানে কোনও কর আদায় হচ্ছে না। ই-কমার্স সংস্থাগুলি বিপুল ব্যবসা করছে। কিন্তু বলছে, লোকসানে চলছে। আমরা কি লোকসানে চলতে বলেছি?’’ কিন্তু লোকসানে চললে, মুনাফা থেকে আয় না-হলে কর্পোরেট সংস্থার থেকে কী ভাবে কর আদায় সম্ভব? অশ্বিনীর যুক্তি, ‘‘তার উপায় খুঁজতে হবে। লোকসানে চললেও সংস্থার মোট মূল্য বাড়ছে। সেই কারণেই আমরা সরকারকে ন্যূনতম বিকল্প কর (ম্যাট), ব্যবসার পরিমাণের উপরে কর বসাতে বলেছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy