Advertisement
E-Paper

কথাযুদ্ধ, তবু ছন্দে ফিরছে অযোধ্যা

রাস্তায়-রাস্তায় ব্যারিকেড সরে গিয়েছে। গল্পে মত্ত নিরাপত্তা রক্ষীরা ফিরেও তাকাচ্ছেন না কারও দিকে। বন্ধ থাকা সব রাস্তা আজ খুলে দেওয়া হয়েছে। গত দু’দিন যেখানে গাড়ি ঢোকার অনুমতি ছিল না, সেখানে আজ দিব্যি গাড়ি পৌঁছে যাচ্ছে হনুমানগড়ী পর্যন্ত। তিন দিন বাদে চুড়ির দোকান খুলেছেন মহম্মদ আমানউল্লা। 

অনমিত্র সেনগুপ্ত

শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০১৮ ০৪:৪৯

রাস্তায়-রাস্তায় ব্যারিকেড সরে গিয়েছে। গল্পে মত্ত নিরাপত্তা রক্ষীরা ফিরেও তাকাচ্ছেন না কারও দিকে। বন্ধ থাকা সব রাস্তা আজ খুলে দেওয়া হয়েছে। গত দু’দিন যেখানে গাড়ি ঢোকার অনুমতি ছিল না, সেখানে আজ দিব্যি গাড়ি পৌঁছে যাচ্ছে হনুমানগড়ী পর্যন্ত। তিন দিন বাদে চুড়ির দোকান খুলেছেন মহম্মদ আমানউল্লা।

সপ্তাহান্তের উদ্বেগ কাটিয়ে সোমবার থেকে স্বাভাবিক হতে শুরু করল অযোধ্যা।

শান্তির ওই আবহেও সামান্য দুশ্চিন্তায় ছিল প্রশাসন। উত্তরপ্রদেশের দলিত সংগঠন ভীম আর্মির প্রধান চন্দ্রশেখর আজাদ আজ দুপুরে অযোধ্যা এসে পৌঁছন। আজাদের দাবি— সুপ্রিম কোর্টকে এড়িয়ে রাম মন্দিরের দাবিতে সঙ্ঘ পরিবার যে আন্দোলনে নেমেছে, তা সংবিধান-বিরোধী। সোমবার সংবিধান দিবসে অযোধ্যার জেলাশাসকের হাতে সংবিধান তুলে দেওয়ার কর্মসূচি নিয়েছিল ভীম আর্মি। তবে দলিত দলের ওই কর্মসূচি নির্বিঘ্নেই মিটেছে।

মন্দির নিয়ে উদ্ধব ঠাকরের অতিসক্রিয়তা দেখে বিজেপির একাংশের অভিযোগ, আন্দোলন হাইজ্যাক করতে চাইছে শিবসেনা। তার জবাবে শিবসেনার মুখপত্র ‘সামনা’য় আজ বলা হয়েছে, ‘বিজেপি একা মন্দিরের ঠিকা নিয়ে রাখেনি। বরং হিন্দুদের এই আকাঙ্ক্ষা রূপায়ণে তারা বরাবর হাত গুটিয়ে থেকেছে। মন্দির নিয়ে রাজনীতির নাটক তারা বন্ধ করুক।’ আবার দলের থেকে ভিন্ন সুরে গেয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা ’৯২-এর রামমন্দির আন্দোলনের মুখ উমা ভারতী। তিনি বলেন, ‘‘শিবসেনার উদ্যোগ প্রশংসনীয়। রাম মন্দির অন্দোলন বা নির্মাণের পেটেন্ট কেবল বিজেপির হাতে নেই।’’

মোদী সরকারের মনোভাব নিয়ে সমালোচনার জবাব দিতে ইন্দৌরের প্রচার সভা থেকে রাম মন্দির নিয়ে সরব হয়েছেন অমিত শাহও। বিজেপি সভাপতি বলেন, ‘‘আমরা চাই ওই জমিতেই রাম মন্দির হোক। কিন্তু কংগ্রেস চাইছে লোকসভা ভোটের পরে রায় দিক আদালত। আসলে মন্দির নির্মাণ পিছিয়ে দিতে চাইছে কংগ্রেস।’’ শীতকালীন অধিবেশনে মন্দির নির্মাণে অধ্যাদেশ আনা হতে পারে কি না, সে প্রশ্নের জবাবে অমিত শাহ বলেন, ‘‘দেখুন জানুয়ারিতে সুপ্রিম কোর্ট কী রায় দেয়!’’

কাল প্রধানমন্ত্রী অভিযোগ করেছিলেন, মন্দির নিয়ে রায় পিছিয়ে দেওয়ার জন্য সুপ্রিম কোর্টকে ভয় দেখাচ্ছে কংগ্রেস। আজ তার জবাবে সিপিএম নেতা সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টে প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ সরকারের বিরুদ্ধেই উঠেছে। প্রধানমন্ত্রী এখন বিরোধীদের ঘাড়ে সেই দোষ ঠেলছেন!’’ কংগ্রেস নেতা কপিল সিব্বল বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য সুপ্রিম কোর্টের অসম্মান!’’

শান্তির আবহে মন্দির নির্মাণ হোক, চাইছেন রাম মন্দির জন্মভূমি ন্যাসের প্রধান নিত্যগোপাল দাস। তাঁর কথা, ‘‘রাজনীতি অনেক হয়েছে। এ বার মন্দির হোক।’’ ন্যাসই শুধু নয়, অযোধ্যার মহন্ত কূলের সকলেই চান লোকসভা ভোটের আগেই মন্দির নির্মাণ শুরু হোক। তাঁদের আশঙ্কা লোকসভা ভোটে বিজেপি হেরে গেলে ফের বিশ বাঁও জলে চলে যাবে মন্দির প্রসঙ্গ। বস্তুত সে জন্যই সরকারের ওপর চাপ বাড়াচ্ছে সব পক্ষ।

গত কাল নির্মোহী আখাড়ার প্রধান রামজি দাস জানিয়েছিলেন, প্রয়াগের কুম্ভেই মন্দির নির্মাণের দিনক্ষণ ঠিক হতে পারে। তবে ১১ ডিসেম্বর ৫ রাজ্যে ভোটের ফল বেরোনোর পরে মন্দিরের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী কোনও ঘোষণা করতে পারেন বলে জগৎগুরু রামভদ্রাচার্য ধর্ম সংসদে যে আশ্বাস দিয়েছেন, তাতেই আস্থা রাখছেন রামভক্তেরা।

Ayodhya Chandrashekhar Azad Ayodhya Ram Mandir Bhim Army
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy