Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus

নিজামউদ্দিন: বিদেশিদের কেন আটকানো হয়নি? প্রশ্নের মুখে কেন্দ্র

তবলিঘি জামাতের ভবন বা মরকজ থেকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার ঘটনা সামনে আসায় সামগ্রিক ভাবেই প্রশ্নের মুখে সরকার।

নিজামউদ্দিনের ধর্মীয় জনসভায় আসা লোকেদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে কোভিড-১৯ টেস্টের জন্য।—ছবি পিটিআই।

নিজামউদ্দিনের ধর্মীয় জনসভায় আসা লোকেদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে কোভিড-১৯ টেস্টের জন্য।—ছবি পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০২০ ০৫:৩৩
Share: Save:

মার্চের প্রথম দিন থেকে দিল্লির নিজামুদ্দিনে তবলিঘি জামাতের সমাবেশে ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া থেকে ধর্মপ্রচারকরা এসে জড়ো হয়েছিলেন। ওই সব দেশে তত দিনে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হয়ে গিয়েছে। কেন তাঁদের এ দেশে আসা আটকানো হল না, সেই প্রশ্ন উঠছে এখন।

তবলিঘি জামাতের ভবন বা মরকজ থেকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার ঘটনা সামনে আসায় সামগ্রিক ভাবেই প্রশ্নের মুখে সরকার। আরও আগেই সরকারি তৎপরতা শুরু হয়নি কেন, সে প্রশ্নই তুলছেন বিরোধীরা। কংগ্রেস নেতাদের যুক্তি, তাঁরা এ নিয়ে রাজনীতি করতে চান না। কিন্তু রাহুল গাঁধী ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি থেকেই করোনা নিয়ে সরকারকে সাবধান করেছিলেন। কিন্তু কেন্দ্র কোনও তৎপরতা দেখায়নি।

১৩-১৫ মার্চ সমাবেশ ছিল তবলিঘির। ২২ মার্চ বিদেশি বিমান আসা বন্ধ করে কেন্দ্র। তার আগে ১১ মার্চ বিশেষ কিছু ক্ষেত্র বাদ দিলে সব ভিসা স্থগিত রাখা হয়েছিল। চিন, ইটালি, ইরান, দক্ষিণ কোরিয়া, ফ্রান্স, স্পেন বা জার্মানির মতো দেশগুলি থেকে আসা ভারতীয় বা বিদেশিদের ১১ দিন গৃহবন্দি থাকার নির্দেশও জারি হয়েছিল। কিন্তু সেই নির্দেশ যে প্রথম দিকে রাজ্য স্তরে ঠিক মতো কার্যকর হয়নি, তা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কর্তারাও মানছেন। সেই কারণেই বিদেশি ধর্মপ্রচারকরা আসতে পেরেছেন।

যদিও সরকারি সূত্রের বক্তব্য, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনান্ড ট্রাম্প ভারত থেকে ফেরার পরই করোনা নিয়ে সক্রিয় হয় মোদী সরকার। মার্চের গোড়া থেকেই কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে সঙ্গে নিয়ে প্রতি সপ্তাহে করোনা নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন শুরু করে। কিন্তু বিরোধীদের দাবি, বিভিন্ন দেশ থেকে ভারতে আসা বিদেশি এবং ভারতীয় নাগরিকদের কোয়রান্টিন করার জন্য কড়া পদক্ষেপ সে সময়ে করা হয়নি। বরং মার্চের তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত সাংবাদিক বৈঠকে ধারাবাহিক ভাবে তুলে ধরা হয়েছিল কী ভাবে বিভিন্ন দেশে আটকে যাওয়া ভারতীয় নাগরিকদের করোনা পরীক্ষা করে, যাঁরা সেই মুহূর্তে আক্রান্ত নন তাঁদের ফিরিয়ে আনা হচ্ছে।

এখানেই কিছু ফাঁক রয়ে গিয়েছিল বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। যাঁরা করোনা-প্রবণ দেশ থেকে ভারতে নামছেন, তাঁরা হয়তো সেই সময় পরীক্ষায় নেগেটিভ ছিলেন। কিন্তু সংক্রমিত হওয়ার বেশ কিছুদিন পর্যন্ত যে রোগ ধরা না-ও পড়তে পারে, কারও শরীরে সংক্রমণের লক্ষণ দেখা না গেলেও তিনি যে অন্যকে সংক্রমিত করতে পারেন, সেই হিসেবটা করা হয়নি। ফলে দেশে ফিরিয়ে আনলেও তাঁদের জন্য ১৪ দিন কোয়রান্টিনের ব্যবস্থা আঁটোসাঁটো হওয়া এবং বাধ্যতামূলক করা উচিত ছিল। যা করা হয়নি। বিমানবন্দরে নাম কে ওয়াস্তে জ্বর মেপে কোয়রান্টিনের নিদান দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল।

এখন বিদেশ মন্ত্রক বলছে, ভবিষ্যতে আর কোনও তবলিঘি প্রচারককে ট্যুরিস্ট ভিসা দেওয়া হবে না। স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় ভাল্লা এও জানিয়েছেন, যাঁরা ইতিমধ্যেই পর্যটক ভিসায় এসে এ দেশের ধর্মপ্রচার করছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যাঁরা নিয়ম ভেঙেছেন, তাঁদের কালো তালিকাভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Markaz Nizamuddin Masjid COVID-19
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE