এই হামলার জেরে কানে আঘাত পেয়েছেন প্রিয়নন্দনন। ছবি: প্রিয়নন্দননের ফেসবুক অ্যাকাউন্টের সৌজন্যে।
শবরীমালা নিয়ে মুখ খোলায় হিন্দু কট্টরপন্থীদের হামলার শিকার হলেন জাতীয় পুরস্কার বিজয়ী পরিচালক প্রিয়নন্দনন। শুক্রবার সকালে কেরলের ত্রিশূরে নিজের বাড়ির সামনেই প্রিয়নন্দননকে শারীরিক ভাবে নিগ্রহ করেন এক ব্যক্তি। পরিচালককে মারধর করে তাঁর মাথায় গোবরজল ঢেলে দেওয়া হয়। প্রিয়নন্দননের অভিযোগ, এই হামলার পিছনে আরএসএসের হাত রয়েছে। যদিও এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে রাজ্য বিজেপি।
এই হামলার জেরে কানে আঘাত পেয়েছেন প্রিয়নন্দনন। তাঁকে স্থানীয় এক বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আপাতত সেখানেই চিকিৎসাধীন তিনি।
হামলা প্রসঙ্গে সংবাদমাধ্যমের কাছে ৫৩ বছরের প্রিয়নন্দনন বলেন, “সাধারণত রোজ সকাল ৭টা নাগাদ বাড়ি থেকে বেরিয়ে রাস্তা ধরে হাঁটতে থাকি। তবে আজ বেরতে একটু দেরি হয়ে গিয়েছিল। প্রায় ৯টা বেজে গিয়েছিল।” প্রিয়নন্দননের দাবি, আক্রমণ করার জন্যই চেপুরে তাঁর বাড়ির সামনে অপেক্ষা করছিল ওই হামলাকারী। বাড়ি থেকে বেরিয়ে হাঁটা শুরু করলে কাছে এসে তাঁর পরিচয়ও জানতে চায় সে। তাঁর কথায়, “মনে হচ্ছে, ওই লোকটা আমার জন্যই অপেক্ষা করছিল। আমি বেরতেই আমার পিছু পিছু চলে আসে। এর পর আমাকে মারধর করে। মাথায় গোবরজলও ঢেলে দেয়।” হামলাকারী ছাড়াও এই ঘটনার পিছুনে আরও অনেকে জড়িত বলে অভিযোগ প্রিয়নন্দননের।
আরও পড়ুন: ‘সুন্দরী, কিন্তু রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা নেই’! প্রিয়ঙ্কাকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য বিহারের আরও এক মন্ত্রীর
পরিচালক প্রিয়নন্দননকে মারধর করে তাঁর মাথায় গোবরজল ঢেলে দেওয়া হয়। ছবি: সংগৃহীত।
২৮ সেপ্টেম্বর শবরীমালার আয়াপ্পা মন্দিরে ১০ থেকে ৫০ বছরের ঋতুমতী মহিলাদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা তুলে দিয়ে এক ঐতিহাসিক রায় দেয় সুপ্রিম কোর্ট। এর পর থেকে ওই রায়ের বিরুদ্ধে উত্তেজনা ছড়ায় কেরলে। বিক্ষোভ-পাল্টা বিক্ষোভ, প্রতিবাদে উত্তাল হয় দেশের বিভিন্ন রাজ্য। এই আবহে গত ১১ জানুয়ারি শবরীমালা নিয়ে একটি ফেসবুক পোস্ট করেছিলেন মালয়ালম সিনেমার এই পরিচালক। ওই পোস্ট ঘিরে সরব হন হিন্দু কট্টরপন্থী সংগঠনের কর্মী-সমর্থকেরা। শবরীমালা কর্মসমিতি নামে একটি কট্টরপন্থী সংগঠন ওই ফেসবুক পোস্ট নিয়ে প্রিয়নন্দননের বাড়ির সামনে বিক্ষোভও দেখায়। পরে ওই পোস্টটি ফেসবুক থেকে সরিয়ে নেন তিনি।
আরও পড়ুন: ঘরে ঘরে আসছে মোদীর ‘চিঠি’! ১৫ কোটি খরচে নির্বাচনী ‘গিমিক’, তোপ বিরোধীদের
এই হামলার তীব্র নিন্দা করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। তিনি বলেন, “এ ধরনের হামলা বরদাস্ত করা হবে না।” বিজয়ন জানিয়েছেন, ওই পোস্টটির পর থেকেই প্রিয়নন্দননকে হুমকি দিতে থাকে সঙ্ঘ পরিবার এবং বিজেপি-র কর্মী-সমর্থকেরা। মিছিলও করে তাঁর বাড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখানো হয়। এমনকি, তাঁর উপর সাইবার-হামলাও চালানো হয়। এ দিনের হামলাকে বাক্-স্বাধীনতার উপর সরাসরি আক্রমণ বলেও নিন্দা করেছেন বিজয়ন। তবে এই হামলায় নিজেদের দায় অস্বীকার করেছে রাজ্য বিজেপি। দলের এক শীর্ষ নেতা বি গোপালকৃষ্ণন বলেন, “প্রিয়নন্দনন যা ইচ্ছে অভিযোগ করতেই পারেন। ওঁর উপর হামলা চালানোর হলে তো ওই ফেসবুক পোস্টের পরেই আমরা তা করতাম।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy