ফ্রান্সের রাফাল যুদ্ধবিমান। ছবি: রয়টার্স।
রাফাল চুক্তি নিয়ে যাঁরা সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়েছেন, তাঁরা দেশের প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত গোপন নথি পৌঁছে দিচ্ছেন দেশের শত্রুদের হাতে। এর ফলে জনসমক্ষে চলে আসছে দেশের নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রাফাল নথি, বিপন্ন হচ্ছে জাতীয় নিরাপত্তা। সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা জমা দিয়ে কেন্দ্রের তরফে আজ এই দাবি করল প্রতিরক্ষা মন্ত্রক।
যে বা যাঁরা ফাঁস হওয়া গোপন নথির সাহায্যে রাফাল মামলায় সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পুনর্বিবেচনার দাবি জানাচ্ছেন, তাঁদের আবেদন খারিজ করার আর্জিও জানিয়েছে কেন্দ্র। কেন্দ্রের যুক্তি, এই আবেদনে নথি হিসেবে রাখা হচ্ছে রাফাল চুক্তির অত্যন্ত গোপনীয় সব তথ্য। তাই আবেদনকারীদের পুনর্বিবেচনার দাবি খারিজ করা হোক।
একই সঙ্গে শীর্ষ আদালতকে কেন্দ্র জানিয়েছে, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী যশবন্ত সিনহা, অরুণ শৌরি এবং আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ পুনর্বিবেচনার যে আবেদন করেছেন, তা প্রকাশ্যে বিলি করা হচ্ছে। তাই দেশের গোপনীয় নথি পৌঁছে যাচ্ছে দেশের শত্রুদের হাতে।
আরও পড়ুন: পুঞ্চের কাছে নো-ফ্লাই জোনে পাক যুদ্ধবিমান, হাই অ্যালার্ট ভারতীয় বায়ুসেনায়
কেন্দ্রের হলফনামায় বলা হয়েছে, ‘এই আবেদনের ফলে বিপদের মুখে পড়ছে দেশের নিরাপত্তা। কেন্দ্রের অনুমতি ছাড়া এই সব গোপন নথির নকল বা প্রতিলিপি তৈরি করা অথবা সেই নথি কোনও মামলার আবেদনে যুক্ত করা দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য বিপজ্জনক। বন্ধু দেশের সঙ্গে সম্পর্কেরও অবনতি হতে পারে এই কারণে।’ পাশাপাশি কেন্দ্রের দাবি, সরকার যখন এই গোপনীয়তা রক্ষা করতে চাইছে, তখন আবেদনকারীরা এই নথি জনসমক্ষে তুলে ধরার মতো অপরাধ করছে।
গত ডিসেম্বরেই একটি রায়ে রাফাল চুক্তিতে কেন্দ্রের ভূমিকাকে ক্লিন চিট দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। সিবিআই তদন্তের দাবিও খারিজ করেছিল শীর্ষ আদালত। সেই রায়ের পুনর্বিবেচনার দাবি নিয়েই এখন চলছে শুনানি। শুনানি চলবে বৃহস্পতিবারও। আবেদনকারীদের দাবি, রাফাল চুক্তিতে অনিল অম্বানির সংস্থাকে সুবিধা করে দিতেই বেশি দাম দিয়ে যুদ্ধবিমান কিনেছিল কেন্দ্র। রাফাল যুদ্ধবিমান কিনতে ঠিক কত টাকা খরচ হয়েছে, নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে তা এখনও প্রকাশ্যে আনেনি কেন্দ্র। জট বাড়ছে সেই কারণেই।
রাফাল নিয়ে এর আগের শুনানিতে কেন্দ্র প্রথমে আদালতকে জানিয়েছিল গোপন নথি চুরি গিয়েছে। পরে আবার একশো আশি ডিগ্রি ঘুরে তারা জানায়, নথি চুরি যায়নি, তা ফটোকপি করা হয়েছে। সেই নথি ব্যবহার করার বিরুদ্ধেই এ বার সরব হল কেন্দ্র।
আরও পড়ুন: মাসুদ আজহারকে ‘বিশ্ব সন্ত্রাসী’ ঘোষণায় এ বারও ভেটো? তেমনই ইঙ্গিত চিনের
যদিও যে সংবাদপত্রে এই নথি প্রথম সামনে এসেছিল, সেই ‘দ্য হিন্দু’-র চেয়ারম্যান এন রাম মন্তব্য করেছেন, ‘‘আমরা কোনও নথি চুরি করিনি। আমরা বিশ্বস্ত সূত্রে এই সব নথি পেয়েছি। এবং সেই সূত্র সামনে আনতে আমরা বাধ্য নই।’’ কেন্দ্রের অবস্থানের তীব্র বিরোধিতা করেছে এডিটরস গিল্ড-ও। কোনও সরকার কোনও সংবাদমাধ্যমকে এ ভাবে সূত্র সামনে আনতে বাধ্য করতে পারে না বলেই মত তাদের। যদিও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অরুণ জেটলির তাই নিয়ে মন্তব্য, ‘‘সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা কখনও দেশের নিরাপত্তার থেকে বড় হতে পারে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy