Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Sonia Gandhi

প্রত্যাহার হোক পরিবেশ-বিজ্ঞপ্তি, লিখলেন সনিয়া

সনিয়ার মতে, কোভিড অতিমারির জন্ম ও তার প্রভাব সারা বিশ্বের সামনেই একটি হুঁশিয়ারি।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৪ অগস্ট ২০২০ ০৫:০৮
Share: Save:

রাহুল গাঁধী মুখ খুলেছিলেন আগেই। বলেছিলেন, শিল্প ক্ষেত্রে পরিবেশ সংক্রান্ত ছাড়পত্রের খসড়া বিজ্ঞপ্তিটির আড়ালে নরেন্দ্র মোদী সরকার আসলে তাদের ‘সুট-বুটের বন্ধুদের’ দেশ লুটের সুযোগ করে দিয়েছে। এ বার কলম ধরলেন কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী। একটি সংবাদপত্রে প্রকাশিত দীর্ঘ নিবন্ধে সনিয়ার দাবি, দেশের পরিবেশ আইনকে ধ্বংস করছে কেন্দ্র। ওই খসড়া বিজ্ঞপ্তি অবিলম্বে প্রত্যাহার করা হোক। মায়ের নিবন্ধ টুইটারে শেয়ার করে রাহুল লিখেছেন, ‘‘প্রকৃতি তখনই রক্ষা করে, যদি তাকে রক্ষা করা হয়।’’

কোনও প্রকল্পে পরিবেশ সংক্রান্ত ছাড়পত্র দেওয়ার প্রক্রিয়া সহজ করতে সম্প্রতি খসড়া বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিল কেন্দ্র। পরিবেশকর্মীদের বক্তব্য ছিল, ওই বিজ্ঞপ্তির ফলে পরিবেশে প্রকল্পের প্রভাব খতিয়ে দেখার শর্তগুলি লঘু হয়ে যাবে। এ দিনের নিবন্ধে সনিয়া সাফ জানিয়েছেন, পরিবেশকে রক্ষা করাটা সরকারের সামাজিক দায়বদ্ধতা। তাঁর কথায়, ‘‘ওই খসড়া প্রত্যাহার করাটাই প্রথম পদক্ষেপ হওয়া উচিত। জনসমাজে ব্যাপক আলোচনা দরকার, যাতে একটা জাতীয় কর্মসূচি তৈরি হয়— যা ভারতকে বিশ্ব উষ্ণায়ন ও অতিমারির বিরুদ্ধে যুদ্ধের সামনের সারিতে এনে দেবে।’’

সরকারের যদিও বক্তব্য, খসড়াটি নিয়ে জনতার মতামত চেয়েছে তারা। চূড়ান্ত খসড়ায় সকলের পরামর্শই বিবেচিত হবে। কিন্তু অভিযোগ উঠেছে, খসড়াটি নিয়ে পরিবেশমন্ত্রীকে ই-মেল পাঠানোর ‘অপরাধে’ ইউএপিএ-তে মামলার হুমকি থেকে শুরু করে ওয়েবসাইট ব্লক— নানা ভাবে পরিবেশকর্মীদের হয়রান হতে হয়েছে। অনেকের মেল ‘বাউন্স’ করে ফিরে এসেছে।

মোদী জমানায় অর্থনীতির বেহাল দশা নিয়ে রাহুল বরাবরই সরব। কিন্তু শিল্প সংস্থাকে ছাড়পত্র দেওয়ার ক্ষেত্রে পরিবেশ রক্ষার বিষয়টি উপেক্ষিত হওয়া যে কাম্য নয়, তা-ও বুঝিয়েছে কংগ্রেস। সনিয়া তাঁর নিবন্ধে লিখেছেন, ‘‘আমাদের দেশ প্রায়শই লাগামছাড়া আর্থিক বৃদ্ধির একটা ভ্রান্ত কল্পনাকে তাড়া করতে গিয়ে পরিবেশ ও মানুষের অধিকারকে জলাঞ্জলি দিয়েছে। অগ্রগতির ক্ষেত্রে অবশ্যই একটা ভারসাম্য প্রয়োজন। একটা সীমারেখা থাকা দরকার, যেটা পেরোনো চলবে না।’’

সনিয়ার মতে, কোভিড অতিমারির জন্ম ও তার প্রভাব সারা বিশ্বের সামনেই একটি হুঁশিয়ারি। এই আবহে সরকারের উচিত ছিল পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের বিষয়টি নিয়ে ভাবা। তার বদলে লকডাউনের সময়ে প্রয়োজনীয় আলোচনা ছাড়াই ছাড়পত্র দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী যে ভাবে সংরক্ষিত এলাকায় কয়লাখনি নিলামের ঘোষণা করেছেন, তাতে বোঝা যায়, সরকারের ত্রুটি সংশোধনের কোনও ইচ্ছেই নেই। পরিবেশ সংরক্ষণের পরিকাঠামোটাই গত ছয় বছরে মুছে ফেলেছে কেন্দ্র। এই খসড়া বিজ্ঞপ্তিতে এমন ব্যবস্থা রয়েছে, যাতে পরিবেশ আইন ভাঙলেও ক্লিনচিট পাওয়া যাবে। ফলের কথা না-ভেবে এ দেশে কত সহজে ব্যবসা করা সম্ভব, বিশ্বের সামনে সেটাই তুলে ধরা সরকারের লক্ষ্য।

কংগ্রেস সভানেত্রীর কথায়, ‘‘আমাদের সামনে সুযোগ রয়েছে অর্থনীতিকে ঘুরে দাঁড় করানোর। ভারত যে সবুজ তৈরির কেন্দ্র হয়ে উঠতে পারে, বৃদ্ধির কৌশলে তা বিশ্বের নেতাদের আমরা দেখিয়ে দিতে পারি। কার্বন নির্গমন কমাতে সাবেক যোজনা কমিশনের বিশেষজ্ঞ গোষ্ঠীর রিপোর্ট ও ২০১৯ সালের ভোটে কংগ্রেসের ইস্তাহারে দেওয়া প্রস্তাবগুলি থেকেই সেই কাজ শুরু করা যেতে পারে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Sonia Gandhi EIA EIA 2020
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE