নরেন্দ্র মোদী এক দিকে গঙ্গাকে দূষণমুক্ত করার প্রকল্প ‘নমামি গঙ্গে’-য় টাকা ঢালতে নিজের উপহার নিলাম করছেন। আর এক দিকে, এই প্রকল্পটির নামে ঢাকঢোল পেটানো হলেও বাস্তবে মোদী জমানায় গঙ্গায় দূষণ আরও বেড়েছে বলে রিপোর্ট দিয়েছে কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ।
প্রশ্ন উঠেছে, গঙ্গাকে দূষণ-মুক্ত করার প্রকল্প ব্যর্থ হওয়াতেই কি নরেন্দ্র মোদী এখন ‘নমামি গঙ্গে’ প্রকল্পের নামে উদার হয়ে নিজের উপহার নিলাম শুরু করলেন?
কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের রিপোর্ট বলছে, ২০১৪-র তুলনায় ২০১৮-য় দূষণ বেড়েছে গঙ্গায়। উত্তরাখণ্ডে এই চার বছরে দূষণের মাত্রা বেড়েছে। উত্তরপ্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গে গঙ্গায় দূষণের মাত্রা একই। গত লোকসভা ভোটে বারাণসীতে মনোনয়ন জমা দিতে গিয়ে মোদী বলেছিলেন, তিনি মা গঙ্গার ডাকে এসেছেন। পর্ষদের পরীক্ষায় গঙ্গায় সব থেকে বেশি দূষণের মাত্রা মিলেছে মোদীর লোকসভা কেন্দ্র বারাণসীতেই।
২০১৮-র জুনে এই রিপোর্ট তৈরি হলেও এত দিন তা ধামাচাপা ছিল। এ বার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তা প্রকাশ হয়েছে। কংগ্রেস নেতা অহমেদ পটেল বলেন, ‘‘বিজেপি সরকার নিজের ব্যর্থতা স্বীকারের বদলে রিপোর্ট লুকোনোর চেষ্টা করেছিল। এ বার সরকার কোথায় লুকোবে?’’
আরও পড়ুন: নেতাজি না মোদী, আগে কে? ‘মন কি বাত’ নিয়ে বিস্মিত অনেকেই
দূষণের হাল
• কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের রিপোর্ট, ২০১৪-র তুলনায় ২০১৮-তে গঙ্গায় দূষণ বেড়েছে
• উত্তরাখণ্ডে দূষণ বেড়েছে। উত্তরপ্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গে গঙ্গায় দূষণের মাত্রা একই রয়েছে
• দু’দফায় পরীক্ষায় গঙ্গায় দূষণের মাত্রা সব থেকে বেশি প্রধানমন্ত্রীর কেন্দ্র বারাণসীতে
• ২,৫০০ কিলোমিটার দীর্ঘ গঙ্গার মাত্র একটি স্থানে জল পানযোগ্য
• ২০১৮-র জুনে রিপোর্ট তৈরি হলেও, এত দিন প্রকাশ করা হয়নি। ডিসেম্বরে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে রিপোর্ট প্রকাশ্যে এলেও তা ফের পর্ষদের ওয়েবসাইট থেকে উধাও
• গঙ্গাকে দূষণ মুক্ত করার নরেন্দ্র মোদীর প্রকল্প ‘নমামি গঙ্গে’-য় মোট বাজেট ২০ হাজার কোটি টাকা, এখনও পর্যন্ত ব্যয় ৬,১০০ কোটি টাকা
গঙ্গাকে দূষণমুক্ত করবেনই— প্রধানমন্ত্রীর গদিতে বসে এই শপথ নিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী। গঙ্গা দূষণমুক্তির পুরনো প্রকল্পে ধর্মীয় আবেগ জুড়ে নতুন নাম হয় ‘নমামি গঙ্গে’। জলসম্পদ মন্ত্রকের সঙ্গে গঙ্গা পুনরুজ্জীবন নামের দফতরও যোগ করেন। মোট ২০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দে এখনও পর্যন্ত ৬,১০০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। তবে দূষণ কমেনি। উল্টে এ নিয়ে বিরোধীদের আক্রমণ শুরু হতে পর্ষদের ওয়েবসাইট থেকে ফের সেই রিপোর্ট উধাও। মুখে কুলুপ এঁটেছে সরকার তথা পর্ষদ।
কংগ্রেসের রাজ্যসভার সদস্য রাজীব গৌড়া বলেন, ‘‘কুম্ভমেলায় লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থী প্রয়াগে পুণ্যস্নান করছেন। আর মোদী সরকার দূষণ নিয়ে রিপোর্ট লুকোতে ব্যস্ত। কারণ ইলাহাবাদের জলের মান যে খারাপ হয়েছে, তা সবাই জেনে যাবেন। গঙ্গার প্রতি প্রধানমন্ত্রীর দায়বদ্ধতা আসলে আরও একটি জুমলা— নেহাতই কথার কথা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy