E-Paper

প্রতি পদে মৃত্যুর হাতছানি, বাসন্তী হাইওয়েতে বাড়ছে দুর্ঘটনার সংখ্যা

২০২৫ সালের জানুয়ারি মাস থেকে ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রায় এক বছরে প্রগতি ময়দান থানা ওআনন্দপুর থানা এলাকায় বেশ কয়েকটি দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটে। তাতে বেশ কয়েক জন মারা যান। কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স থানা এলাকায় প্রায় ২৫-৩০টি পথদুর্ঘটনার ঘটনা ঘটে।

সামসুল হুদা

শেষ আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৮:২২

—প্রতীকী চিত্র।

৮৮ কিলোমিটার দীর্ঘ বাসন্তী হাইওয়ের বড় অংশেইমাঝেমধ্যে ঘটে দুর্ঘটনা। বহু মৃত্যুও ঘটেছে। অভিযোগ, রাস্তায় অনেক অংশে আলো নেই। নজরদারিও কম বলে দাবি।

কলকাতার ইস্টার্ন মেট্রোপলিটন বাইপাস থেকে বাসন্তীপর্যন্ত বাসন্তী হাইওয়ের দৈর্ঘ্য প্রায় ৮৮ কিলোমিটার। ইস্টার্ন মেট্রোপলিটন বাইপাসের প্রগতি ময়দান থানা, আনন্দপুর থানা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার কলকাতালেদার কমপ্লেক্স থানা, পোলেরহাট থানা, মাধবপুর থানা, ভাঙড় থানা, জীবনতলা ও বাসন্তী থানা এবং উত্তর ২৪ পরগনার হাড়োয়া, মিনাখাঁ ও সন্দেশখালি থানার উপর দিয়ে চলে গিয়েছে এই পথ।

২০২৫ সালের জানুয়ারি মাস থেকে ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রায় এক বছরে প্রগতি ময়দান থানা ওআনন্দপুর থানা এলাকায় বেশ কয়েকটি দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটে। তাতে বেশ কয়েক জন মারা যান। কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স থানা এলাকায় প্রায় ২৫-৩০টি পথদুর্ঘটনার ঘটনা ঘটে। ১২ জনের মৃত্যু হয়। ভাঙড় ডিভিশনের ভাঙড় ট্র্যাফিক গার্ড এলাকায় (ভাঙড় ওমাধবপুর থানা এলাকা সহ) ৫৫-৬০টি পথ দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটেছে। প্রায় ৬ জনের মৃত্যু হয়।জীবনতলা থানা এলাকায় ১০-১২টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। তিন জনের প্রাণ গিয়েছে। বাসন্তী থানা এলাকায় প্রায় ১৫-২০টি পথ দুর্ঘটনাঘটেছে। তার মধ্যে প্রায় ১০-১২ জনের মৃত্যু হয়েছে।

উত্তর ২৪ পরগনায় (হাড়োয়া, মিনাখাঁ ও সন্দেশখালি থানাএলাকায়) গত এক বছরে বেশ কিছু দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটে। বেশ কয়েক জনের মৃত্যুও ঘটেছে বলে সূত্রের খবর।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেল, বাসন্তী হাইওয়ের ৮৮ কিলোমিটার রাস্তায় রয়েছে অজস্রইংরেজি ‘ইউ’ আকৃতির বাঁক। রাস্তার পাশে রয়েছেএসডব্লিউএফ ময়লা খাল (চৌবাগা-ঘুষিঘাটা) যা বিদ্যাধরী নদীতে গিয়ে মিশেছে। অতীতে দুরন্ত গতির গাড়ি অনেকসময়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খালে পড়েছে। রাস্তায় রয়েছে অসংখ্য ছোট, বড় গর্ত। সন্ধ্যার পরে কড়াইডাঙা থেকে ঘোষপুর-চণ্ডীপুর পর্যন্ত গোটা রাস্তা অন্ধকারে ডুবে থাকে।সায়েন্স সিটি থেকে কড়াইডাঙা পর্যন্ত প্রায় ১৭ কিলোমিটার রাস্তায় ৫৫০টি পথ বাতি লাগানোথাকলেও বাকি রাস্তা অন্ধকারে ডুবে থাকে।

সায়েন্স সিটি থেকে ঘোষপুর পর্যন্ত বাসন্তী হাইওয়েররাস্তা আবার একেবারে সংকীর্ণ। এই রাস্তা চার লেন করার কথা থাকলেও আজও তা হয়নি। ঘটকপুকুর, বড়ালি ঘাট, নলমুড়ি, পাগলাহাট,ভোজেরহাট, বামনঘাটা-সহ বিভিন্ন এলাকায় অধিকাংশ ক্ষেত্রে রাস্তার পাশে সরকারি জমি-জবর দখল করে গড়ে উঠেছে দোকান বাজার। ফলে রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ থমকে গিয়েছে বলেস্থানীয় মানুষের অভিযোগ। যদিও ঘোষপুর থেকে সরবেড়িয়া পর্যন্ত রাস্তা অনেক চওড়া করা হয়েছে।অভিযোগ, একে অন্ধকারাচ্ছন্ন রাস্তা, তার উপরে শীতের সময়ে ঘন কুয়াশায় রাস্তায় দৃশ্যমান্যতা একদমকমে যায়। ফলে দুর্ঘটনা অনেকটাই বেড়ে যায়।

প্রশাসন সূত্রের খবর, রাস্তায় গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণের জন্য লাগানো হয়েছেস্পিডোমিটার, সিসি ক্যামেরা। গাড়ি যাতে খালে না পড়ে, সে জন্য চৌবাগা, কয়লা ডিপো, বানতলা, বামুনিয়া-সহ বিভিন্ন এলাকায় কংক্রিটেরবড় বড় স্তম্ভ, লোহার ব্যারিয়ার লাগানো হয়েছে।কলকাতা পুলিশের ভাঙড় ডিভিশনের এক কর্তা বলেন, ‘‘বাসন্তীহাইওয়েতে দুর্ঘটনা কমানোর জন্য আমরা ইতিমধ্যে বেশ কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। রাস্তারপর্যাপ্ত লাইট লাগানোর জন্য জেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। রাস্তা সম্প্রসারণ করারজন্য সংশ্লিষ্ট দফতরকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকাগুলি চিহ্নিত করে সেখানেগাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণ করতে হাম্প বসানো-সহ বিভিন্ন উদ্যোগ করা হচ্ছে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Road accidents accidents

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy