Advertisement
E-Paper

গোহত্যা হলে গণপিটুনিও চলবে, বিজেপি সাংসদের মন্তব্যে বিতর্ক, উত্তাল সংসদ

লোকসভার অভ্যন্তরে গোরক্ষার নামে গণপিটুনি নিয়ে আলোচনার দাবি জানান তৃণমূলের লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘ঐক্যবদ্ধ ভারতে এই ধরনের ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না। অধিকাংশ বিরোধী দলের সাংসদরা গণপিটুনি নিয়ে আলোচনা চাইছেন।’’

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০১৮ ১৫:৫১
সংসদ চত্বরে গাঁধী মূর্তির সামনে বিক্ষোভ তৃণমূল সাংসদদের। ছবি:পিটিআই

সংসদ চত্বরে গাঁধী মূর্তির সামনে বিক্ষোভ তৃণমূল সাংসদদের। ছবি:পিটিআই

‘গো-হত্যা হলে গণপিটুনিও চলবে’। বিতর্কিত মন্তব্য করে কার্যত ‘অলওয়ার’ আগুনে ঘি ঢাললেন বিজেপি সাংসদ বিনয় কাটিয়ার। গোরক্ষার নামে গণপিটুনি ইস্যুতে সংসদের দুই কক্ষই উত্তাল হয়ে ওঠে। কড়া আইন আনার দাবিতে লোকসভার অভ্যন্তরে সরব হয় কংগ্রেস, তৃণমূল-সহ বিরোধীরা। তার আগে বাইরেও বিক্ষোভ দেখান তৃণমূল সাংসদরা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ যদিও ফের ৮৪-র দাঙ্গার প্রসঙ্গই টেনে এনেছেন। সংসদের এই চাপানউতরের মধ্যেই মঙ্গলবার অলওয়ারে নিহত রাখবর খানের ময়নাতদন্ত রিপোর্ট হাতে পেয়েছে পুলিশ।

সকাল যদি দিনের পূর্বাভাস হয়, তাহলে সংসদ চত্বরে তৃণমূলের প্রতিবাদেই বোঝা গিয়েছিল, সংসদের ভিতরেও অলওয়ার নিয়ে ঝড় উঠতে চলেছে। মঙ্গলবার সকালে গাঁধী মূর্তির পাদদেশে জময়েতের পর গলায় ব্যানার ঝুলিয়ে প্রতিবাদে শামিল হন তৃণমূল সাংসদরা।

লোকসভার অভ্যন্তরে গোরক্ষার নামে গণপিটুনি নিয়ে আলোচনার দাবি জানান তৃণমূলের লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘ঐক্যবদ্ধ ভারতে এই ধরনের ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না। অধিকাংশ বিরোধী দলের সাংসদরা গণপিটুনি নিয়ে আলোচনা চাইছেন।’’ যদিও স্পিকার জানান, এ নিয়ে ইতিমধ্যেই সংসদে বিবৃতি দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তাই এ নিয়ে আলোচনার প্রয়োজন নেই। যদিও তাতেও বিরোধীদের আক্রমণ থামেনি। বিরোধীরা তুমুল হইচই শুরু করেন। তার জেরে একাধিকবার অধিবেশন মুলতুবি করে দেন স্পিকার।

আরও পড়ুন: গোমাংস খাওয়া ছাড়ুন, বন্ধ হবে গণপিটুনি, অভিনব দাওয়াই আরএসএস নেতার

কংগ্রেস নেতা মল্লিকার্জুন খড়গে এ নিয়ে সরকারকে তীব্র আক্রমণ করেন। সিপিএমের মহম্মদ সেলিম বলেন, ‘‘এই প্রবণতা ভয়ঙ্কর। গণপিটুনির নায়কদের মালা পরালে দেশে এই অবস্থাই হবে।’’ পরে সংসদের বাইরে সুদীপ বলেন, আইনশৃঙ্খলা রাজ্যের বিষয় হলেও গণপিটুনির এই প্রবণতা সারা দেশেই ব্যাপক ভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। তাই কেন্দ্রকেই কড়া আইন আনতে হবে।

আরও পডু়ন: এটাই মোদীর নতুন ভারত! অলওয়ার-খোঁচা রাহুলের

জবাবে এদিন ফের ৮৪-র শিখ দাঙ্গার প্রসঙ্গ খুঁচিয়ে তুলেছেন রাজনাথ সিংহ। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে মাথায় রেখে একটি মন্ত্রিগোষ্ঠী গঠন করা হয়েছে এবং তাঁরা এই প্রবণতা রোখার উপায় নিয়ে আলোচনা করছেন বলেও জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। কেন্দ্র এ নিয়ে উদ্বিগ্ন জানিয়েও রাজনাথ বলেন, ১৯৮৪-র শিখ দাঙ্গার সময়ই সবচেয়ে বেশি গণপিটুনির ঘটনা ঘটেছে। সংসদের বাইরে বিজেপি নেতা শাহনওয়াজ হুসেন বলেন, ‘‘কোনও একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনাকে অপপ্রচার করে বিশ্বের কাছে ভারতের মাথা হেঁট করানোর অধিকার কারও নেই।

আরও পডু়ন: গণপিটুনিকেই ঢাল করছেন চোক্সী

অলওয়ারের ঘটনার পর থেকেই দেশ জুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। তার মধ্যেই বিতর্কিত এবং ইন্ধন দেওয়াও বন্ধ নেই। বিজেপি সাংসদ বিনয় কাটিয়ার যেমন বলেন, ‘‘গোহত্যা হলে গণপিটুনিও হবে।’’ সংসদেও এই প্রসঙ্গ তুলে তীব্র আক্রমণ করেন বিরোধী সাংসদরা।

অন্যদিকে, অলওয়ারে নিহত রাখবর খানের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এদিনই হাতে পেয়েছে পুলিশ। ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক রাজীব গুপ্ত জানান, ‘‘একাধিক গভীর ক্ষত তৈরি হয়েছিল। তাতে শরীরের ভিতরে রক্তক্ষরণ এবং আতঙ্কে মৃত্যু হয় আকবরের।’’ রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, ভোঁতা ও ভারী কোনও জিনিস দিয়ে আঘাতের জেরে অন্তত সাতটি ক্ষত তৈরি হয়েছে। আকবরের ভাই দাবি করেছেন, ‘‘এমন নির্মমভাবে পেটানো হয়েছিল যে, দাদার ঘাড় ভেঙে গিয়েছিল।’’

শুক্রবার রাতে গরু কিনে ফেরার সময় রাজস্থানের অলওয়ারে স্বঘোষিত গোরক্ষকদের মারে মৃত্যু হয় রাখবর খানের। রাখবরকে উদ্ধার করেও তিন ঘণ্টা পর হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ। চিকিৎসকরা জানান, হাসপাতালে পৌঁছনোর আগেই মৃত্যু হয় রাখবরের। ঘটনায় গাফিলতির অভিযোগে ইতিমধ্যেই এএসআই মোহন সিংহকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। পুলিশ লাইনে ক্লোজ করা হয়েছে দুই কনস্টেবলকে।

Parliament Uproar Lynching Cow Vigilantism TMC Protest
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy