Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Galwan

চিনা দখলে চার ফিঙ্গার নিয়েই চিন্তা ভারতের

প্যাংগং লেক এলাকায় ফিঙ্গার পয়েন্টগুলি থেকে চিনা সেনা সরানোর প্রশ্নে আগামী দিনে বেজিংয়ের সঙ্গে প্রবল দর কষাকষি হতে চলেছে বলেই মনে করছেন সেনা ও কূটনীতিকরা।

গালওয়ান উপত্যকা। উপগ্রহ চিত্র। ছবি সৌজন্য ম্যাক্সার।

গালওয়ান উপত্যকা। উপগ্রহ চিত্র। ছবি সৌজন্য ম্যাক্সার।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০২০ ০৪:১২
Share: Save:

গালওয়ানে একাধিক জায়গায় চিনা সেনা পিছু হটলেও জট রয়ে গেল প্যাংগং লেকের কাছে থাকা ফিঙ্গার পয়েন্টগুলি নিয়ে। সূত্রের মতে, প্যাংগং লেক এলাকায় ফিঙ্গার পয়েন্টগুলি থেকে চিনা সেনা সরানোর প্রশ্নে আগামী দিনে বেজিংয়ের সঙ্গে প্রবল দর কষাকষি হতে চলেছে বলেই মনে করছেন সেনা ও কূটনীতিকরা।
সেনা সূত্রের খবর, গত রবিবার রাত থেকে গালওয়ান উপত্যকার পেট্রোলিং পয়েন্ট ১৪ থেকে সেনাও তাঁবু গোটাতে শুরু করে। মঙ্গলবার সেই প্রক্রিয়া শেষ হয়। একই সঙ্গে হটস্প্রিং ও গোগরা থেকেও পিছু হটা শুরু করে চিন। আজ সেনা সূত্রে বলা হয়েছে, হটস্প্রিং এলাকায় পেট্রোলিং পয়েন্ট-১৫ এর কাছে দু’পক্ষই সেনা সরানোর কাজ শেষ করেছে। যার অর্থ, দু’দেশই প্রায় দু’কিলোমিটারের বেশি পিছিয়ে মাঝে তিন কিলোমিটারের মতো বাফার জ়োন সৃষ্টি করেছে। ওই বাফার জ়োনে কী ভাবে টহলদারি হবে, তা ঠিক হবে আগামী সেনা কমান্ডার পর্যায়ের বৈঠকে। যা খুব দ্রুত হতে চলেছে বলেই সেনা সূত্রের খবর।

গোগরা এলাকায় থাকা ১৭-এ পেট্রোলিং পয়েন্ট থেকেও পিছিয়ে যেতে শুরু করেছে উভয় বাহিনী। আগামিকাল বা শুক্রবার ওই পয়েন্টে সেনা পিছিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া শেষ হতে পারে। যদিও প্রাক্তন সেনা কর্তাদের মতে, বাফার জ়োন তৈরি করাটাই ভারতের একমাত্র লক্ষ্য হওয়া উচিত নয়। কারণ চিনা সেনা সীমানা পেরিয়ে ভারতের জমিতে বেশ কয়েক কিলোমিটার ঢুকে এসে ঘাঁটি বানিয়েছিল। দেখতে হবে সেই অধিকৃত জমি ছেড়ে তারা সীমানা পেরিয়ে নিজেদের এলাকায় ফিরে গিয়েছে কি না। তা না-হলে কখনওই সেটিকে সাফল্য বলা যায় না। ৪ মে-র আগেকার স্থিতাবস্থা যদি ফিরে আসে, তবেই সাফল্য বলে দাবি করতে পারে নরেন্দ্র মোদী সরকার।

আরও পড়ুন: গাঁধী পরিবারের তিনটি ট্রাস্টের বিরুদ্ধে তদন্তে নামল কেন্দ্র

আরও পড়ুন: ফেব্রুয়ারিতে দিনে ৩ লাখ করে সংক্রমণ বাড়বে ভারতে? দাবি গবেষণার

গালওয়ানে চিনা সেনার পিছিয়ে যাওয়া নয়াদিল্লিকে আপাত স্বস্তি দিলেও প্যাংগং লেকের কাছে ফিঙ্গার চার থেকে আট পর্যন্ত এখনও জাঁকিয়ে বসে রয়েছে চিনা সেনা। সূত্রের মতে, ফিঙ্গার ফোর থেকে কিছু গাড়ি পিছিয়ে ফিঙ্গার ফাইভে নিয়ে গিয়েছে তারা। অন্যান্য ফিঙ্গার থেকেও আগের চেয়ে চিনা সাঁজোয়া গাড়ি ও তাঁবুর সংখ্যা সংখ্যায় কমলেও এখনই সেই এলাকা থেকে চিন সেনা সরাচ্ছে বলে মানতে নারাজ ভারতীয় সেনা। ভারতীয় সেনা সূত্রের বক্তব্য, যত ক্ষণ না সম্পূর্ণ পশ্চাদপসারণ হচ্ছে, তত ক্ষণ কোনও ভাবেই সেনা প্রত্যাহার বলা যায় না। ভারত-চিন উভয় দেশই ফিঙ্গার চার থেকে আট পর্যন্ত এলাকাকে নিজেদের বলে দাবি করে এসেছে। সেই কারণে ওই বিতর্কিত এলাকাটিতে দু’দেশের সেনাই এত দিন টহল দিয়ে এসেছে। কিন্তু ৪ মে–র পরে ফিঙ্গার আট থেকে একেবারে চার পর্যন্ত নিজেদের সীমানা বলে দাবি করে ঘাঁটি বানায় চিনা সেনা। এই মুহূর্তে প্যাংগং লেককে ঘিরে পাহাড়ের বেরিয়ে থাকা ওই খাঁজ বা ফিঙ্গারগুলির মাথায় নিজেদের ঘাঁটি গেড়ে বসে রয়েছে তারা। রণকৌশলগত ভাবে উঁচুতে থাকার সুবিধে ছাড়তে রাজি নয় চিন। বিশেষ করে স্থায়ী বাঙ্কার, পিলবক্স, নজরদারি টাওয়ার বানানোর পরে তারা কতটা এলাকা ছাড়বে, তা নিয়ে ঘোরতর সন্দেহ রয়েছে সেনায়। যদিও সরকারের দাবি, গালওয়ানের পরে এ বার ফিঙ্গার এলাকাগুলি থেকে সেনা সরানোর জন্য চাপ বাড়াবে ভারত। কিন্তু দর কষাকষির প্রশ্নে স্নায়ুর যুদ্ধ ফিঙ্গার এলাকাগুলিকে নিয়েই হবে বলে মনে করছেন কূটনীতিকরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Galwan India China
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE