Advertisement
E-Paper

কক্ষপথে অত্যাধুনিক ‘গুপ্তচর’ উপগ্রহ পাঠাল ভারত, স্পষ্ট দেখা যাবে চিন-পাক গতিবিধি

কোনও একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুর ছবি দিনে দুই থেকে তিনবার তুলতে পারবে ভারতের ৬১৫ কেজি ওজনের এই নয়া ‘গুপ্তচর’।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২২ মে ২০১৯ ১০:৩৪
অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান মহাকাশ কেন্দ্র থেকে উৎক্ষেপণের পর। ছবি: এএফপি।

অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান মহাকাশ কেন্দ্র থেকে উৎক্ষেপণের পর। ছবি: এএফপি।

আজ ভোর সাড়ে পাঁচটায় অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটা থেকে কক্ষপথে অত্যাধুনিক গুপ্তচর উপগ্রহ (রিস্যাট-২) পাঠাল ভারত। এর ফলে মহাকাশ থেকে শত্রুপক্ষের উপর নজরদারি হবে আরও নিখুঁত এবং স্পষ্ট।

এই উপগ্রহ ছবি পাঠাতে শুরু করলে ভারত মহাসাগরে কোনও চিনা যুদ্ধজাহাজ লুকিয়ে আছে কি না অথবা পাকিস্তানের জঙ্গি ঘাঁটিতে উগ্রপন্থীরা কী করছে, সেই গতিবিধি এক লহমায় চলে আসবে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্রের বিজ্ঞানীদের কাছে। সেই অনুযায়ী প্রস্তুতি নিতে পারবে ভারতীয় সেনাও।

এর আগের রিস্যাট পর্যায়ের উপগ্রহগুলির থেকে অনেক শক্তিশালী এই রিস্যাট-২বি। এই মুহূর্তে মহাকাশে আছে ভারতের রিস্যাট-১ এবং রিস্যাট-২ উপগ্রহ। তাদের থেকে অনেক নিখুঁত ছবি পাঠাবে এই নয়া উপগ্রহ।

আরও পড়ুন: মহাকাশের মেঘনাদ! কী আছে ভারতের এই গুপ্তচর উপগ্রহে

দিনের মতোই রাতের বেলাতেও কাজ করবে এই উপগ্রহের শক্তিশালী রেডার। সমুদ্রপৃষ্ঠের ৫৫৭ কিলোমিটার উপর থেকে মেঘের আস্তরণ ভেদ করে শত্রুভূমিতে দৃষ্টি রাখতে পারবে এই নজরদারি উপগ্রহ। নজরদারির কারণেই এই উপগ্রহকে ডাকা ‘আকাশের গোপন চোখ’ বা ‘গুপ্তচর’ উপগ্রহ নামেও।

কোনও একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুর ছবি দিনে দুই থেকে তিনবার তুলতে পারবে ভারতের ৬১৫ কেজি ওজনের এই নয়া ‘গুপ্তচর’। এর ফলে কোনও বাড়ি বা অঞ্চলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কী পরিবর্তন হচ্ছে, তা নির্ভুল ভাবে বলতে পারবে রিস্যাট-২। পাকিস্তান ছাড়াও এই ‘গুপ্তচর’ নজর রাখবে আরব সাগর, বঙ্গোপসাগর এবং ভারত মহাসাগরের উপর।

আরও পড়ুন: পাল্টে গেল কিলোগ্রাম, এ বার সেকেন্ডের পালা

এই নিয়ে মহাকাশে মোট ৩৫৪টি কৃত্রিম উপগ্রহ পাঠাল ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা। এই উপগ্রহ পাঠানোর সঙ্গেই মোট ৫০ টন ওজনের সামগ্রী মহাকাশে পাঠানোর কৃতিত্ব অর্জন করল ইসরো। আরও একটি কারণে এই কৃত্রিম উপগ্রহ পাঠানো বিশেষ কৃতিত্বের দাবি রাখে। এই উৎক্ষেপণে এই প্রথম ব্যবহার করা হল ভারতের নিজের বানানো প্রসেসর ‘বিক্রম’।

এই উপগ্রহের সফল উৎক্ষপণের পর ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থাকে অভিনন্দন জানিয়ে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারামন টুইট করেছেন, ‘ইসরো আমাদের আরও এক বার গর্বিত করল। এই উপগ্রহই হয়ে উঠবে আমাদের চোখ, সারা বছরের জন্য।’

২০০৮ সালের মুম্বই হামলার পরই এই ধরনের নজরদারি উপগ্রহের প্রয়োজনীয়তা বুঝতে পারে। সেই কারণে তড়িঘড়ি রিস্যাট-১ এর আগে মহাকাশে রিস্যাট-২ পাঠায় ভারত। ২০০৯ সালের ২০ এপ্রিল ইজরায়েলে বানানো রিস্যাট-২ আকাশে পাঠিয়েছিল ভারত। ৫৩৬ কিমি উচ্চতা থেকে এই উপগ্রহ সারা বছর নজর রাখে ভারতের সীমান্তে। সন্দেহজনক কিছু দেখলেই সেই খবর পৌঁছে যায় ভারতের সেনা এবং গোয়েন্দা সংস্থাদের কাছে। ২০১৬ সালে উরিতে সার্জিকাল স্ট্রাইক বা সাম্প্রতিক বালাকোট অভিযান করা হয়েছিল এই উপগ্রহের সাহায্যেই।

আরও পড়ুন: ২০৩৩-এ কি মঙ্গলে? তৈরি হচ্ছে নাসা

কিন্তু সেই রিস্যাট-২ এর থেকেও অনেক বেশি শক্তিশালী এই নয়া উপগ্রহ। এখানে ব্যবহার করা হয়েছে সিন্থেটিক অ্যাপারচার রেডার, যার ফলে উচ্চমানের ছবি তোলা যাবে আকাশ থেকে। নজরদারি ছাড়া প্রাকৃতিক দুর্যোগ-সহ অন্যান্য বিপর্যয় মোকাবিলার ক্ষেত্রেও কাজে লাগানো যাবে এই উপগ্রহ।

এখানেই শেষ নয়, আগামী জুলাইতেই ফের আরও একটি বিরল কৃতিত্বের মুখোমুখি হতে চলেছে ইসরো। এই সময়েই চাঁদে রোবট পাঠানোর পরিকল্পনা ইসরোর। ইসরো প্রধান ডক্টর কে শিবান যা নিয়ে বলেছেন, ‘‘মহাকাশে ভারত যে জায়গায় পৌঁছতে যাচ্ছে, যেখানে অন্য কেউ এখনও পর্যন্ত যেতে পারেনি। তা হল চাঁদের দক্ষিণ মেরুর কাছের একটি জায়গা।’’

Satellite ISRO Indian Space Research Organisation
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy