যাঁরা আটকে পরেছেন তাঁদের ঘরে ফেরার অনুমতি দিল কেন্দ্র।—ছবি এএফপি।
দ্বিতীয় দফার লকডাউনের একেবারে শেষ পর্বে এসে পরিযায়ী শ্রমিক, তীর্থযাত্রী, পড়ুয়া, পর্যটক ও চিকিৎসা করাতে গিয়ে ভিন্ রাজ্যে আটকে পড়া মানুষদের ঘরে ফেরার প্রশ্নে ছাড়পত্র দিল কেন্দ্র। আজ এক নির্দেশিকায় কেন্দ্র জানিয়েছে, উপসর্গহীনেরাই শুধু নিজ রাজ্যে ফিরে যেতে পারবেন। বাড়ি ফিরে নির্দিষ্ট সময় তাঁদের ঘরবন্দি থাকতে হবে। তবে তার আগে, কেউ নিজ রাজ্যে ফিরলেই, রাজ্য সরকারকে তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে ও সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে বলেছে কেন্দ্র।
এতে তিনটি প্রশ্ন উঠেছে। এক, স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের অনেকে বলছেন, এর ফলে এক ধাক্কায় বিপুল সংখ্যক মানুষের করোনা পরীক্ষার দায় নিতে হবে রাজ্যগুলিকে। তাঁদের প্রশ্ন, রাজ্যগুলির সেই পরিকাঠামো আছে কি?
দুই, গোটা দেশেই উপসর্গহীন সংক্রমিতের সংখ্যা ৬৯ শতাংশ। ফলে ভিন্ রাজ্যে হোক বা নিজ রাজ্যে, ঠিক মতো পরীক্ষা না-হলে সংক্রমিত কিন্তু উপসর্গহীন প্রচুর মানুষের সমাজে মিশে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হবে। বিশেষ করে গ্রামগুলিতে! আশঙ্কা বাড়বে গোষ্ঠী সংক্রমণেরও।
তিন, আর্থিক প্রশ্নেও মোদী সরকারের এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছে এআইটিইউসি। শ্রমিক সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক অমরজিৎ কৌরের কথায়, “এত দিন পরে বাড়ি ফেরার প্রশ্নে কেন ছাড় দেওয়া হল, তা বোধগম্য নয়। বিশেষ করে যখন ধীরে ধীরে আর্থিক কর্মকাণ্ড সচল হতে শুরু করেছে।”
রাজ্যের মুখ্যসচিবদের পাঠানো নির্দেশে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় ভল্লা বলেছেন, লোকজনকে ঘরে ফেরানোর বিষয়ে রাজ্যগুলিকেই সক্রিয় ভূমিকা নিতে হবে। প্রতি রাজ্যে গড়তে হবে নোডাল অথরিটি। আটকে পড়াদের তালিকা তৈরি করবে তারা। এবং নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম মেনে প্রতিটি রাজ্য অন্য রাজ্যে আটকে থাকা ব্যক্তিদের ঘরে ফিরিয়ে আনবে বা ঘরে পাঠানোর ব্যবস্থা করবে।
বিমান ও ট্রেন পরিষেবা বন্ধ। তাই সড়কপথেই আটকে থাকাদের ঘরে ফেরাতে দু’রাজ্যের মধ্যে পারস্পরিক সমন্বয় গড়ে তুলতে নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র। যাতায়াতের জন্য বাসের ব্যবস্থাও করতে বলা হয়েছে রাজ্যগুলিকেই। বাসগুলিকে সংক্রমণমুক্ত করা ছাড়াও বাসে দূরত্ববিধি মেনে বসার ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
তবে আটকে থাকাদের ঘরে পাঠানোর প্রশ্নে কতগুলি শর্ত রয়েছে।
এক, প্রত্যেককে পরীক্ষা করে দেখতে হবে এবং কোভিড-১৯-এর উপসর্গ না-থাকলে, তবেই তিনি রাজ্যে ফেরার অনুমতি পাবেন।
দুই, নিজ রাজ্যে ফেরার পরেও প্রত্যেক ব্যক্তির স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে হবে। ভিন্ রাজ্য থেকে ফেরা ব্যক্তি সংক্রমিত কি না, তা পরীক্ষা করে দেখার পরেই তাঁকে বাড়ি ফেরার অনুমতি দেবে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর।
তিন, সংক্রমণমুক্তেরা বাড়ি ফিরতে পারলেও নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য তাঁদের ঘরবন্দি হয়ে থাকার পরামর্শ দিয়েছে কেন্দ্র।
চার, যাঁদের ক্ষেত্রে প্রয়োজন হবে, তাঁদের নিভৃতবাসে পাঠিয়ে নিয়মিত নজরদারিতে রাখতে হবে। নিভৃতবাসে থাকা ব্যক্তিদের আরোগ্য সেতু মোবাইল অ্যাপ ডাউনলোড করতে বলা হয়েছে।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy