ইসলামাবাদে ভারতীয় দূতাবাস।
পাক সেনার হাতে অভিনন্দন বর্তমান ধরা পড়ার পর ইসলামাবাদে ভারতীয় কূটনীতিকদের হেনস্থা করেছিল পাকিস্তান। দূতাবাসে যাওয়ার পথে একাধিক কূটনীতিককে অনুসরণ করা, কটু মন্তব্য তো ছিলই, হুমকিও দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। এই মর্মে পাকিস্তানকে একটি প্রতিবাদপত্র পাঠিয়েছে ভারতীয় বিদেশমন্ত্রক। উপযুক্ত তদন্ত এবং তার ফলাফল সম্পর্কে ভারতকে জানানোর জন্যও ইসলামাবাদকে ওই চিঠি পাঠিয়েছে নয়াদিল্লি।
গত ২৭ ফেব্রুয়ারি নিয়ন্ত্রণরেখায় পাকিস্তানের এফ-১৬ যুদ্ধবিমানের সঙ্গে ভারতীয় বায়ুসেনার মিগ-২১ বাইসনের ডগফাইট হয়। তাতে ভারতীয় বায়ুসেনার উইং কমান্ডার অভিনন্দনের বিমান ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় তিনি ‘ইজেক্ট’ করে প্যারাসুটে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে নামতে বাধ্য হন। তাঁকে নিজেদের হেফাজতে নেয় পাক সেনা। এই ঘটনার পর থেকেই ইসলামাবাদে ভারতীয় কূটনীতিকদের হেনস্থার অন্তত তিনটি ঘটনা ঘটেছে।
বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে খবর, ২৮ ফেব্রুয়ারি ইসলামাবাদে ভারতীয় দূতাবাসে যাচ্ছিলেন দুই ভারতীয় কূটনীতিক। তাঁরা দূতাবাসের গাড়িতেই যাচ্ছিলেন। সেই সময়েই পাক গুপ্তচর সংস্থা ইন্টার সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স (আইএসআই)-এর কয়েক জন অফিসার তাঁদের গাড়ির পিছনে ধাওয়া করেন। শেষ পর্যন্ত ভারতীয় দুই কূটনীতিকের গাড়ির সামনে নিজেদের গাড়ি দাঁড় করিয়ে দেন আইএসআই-এর ওই অফিসাররা। তাঁদের মধ্যে এক জন ক্ষিপ্তস্বরে ভারতীয় কূটনীতিকদের ধমকের সুরে বলেন, ‘‘আমরা আপনাদের দু’জনকে আটক করেছি। অথচ আপনারাই সংযত আচরণ করছেন না।’’
আরও পডু়ন: ভারত-পাক দ্বন্দ্ব নিয়ে আপনার জ্ঞানভাণ্ডার ঝালিয়ে নিন
আরও পড়ুন: দু’-তিন সেকেন্ড সময় পেলেই অভিনন্দন ঢুকে যেতেন ভারতীয় আকাশ সীমায়, বলছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা
পাক বিদেশমন্ত্রককে পাঠানো ভারতীয় বিদেশমন্ত্রকের ওই ‘নোট’-এ আরও দু’টি ঘটনার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। প্রায় একই রকম ভাবে আরও দুই অফিসারকে অনুসরণ ও ধাওয়া করেন আইএসআই-এর অফিসাররা। বার বার ওই দুই ভারতীয় অফিসারের ছবি তোলেন তাঁরা। নোটে উল্লেখ করা তৃতীয় ঘটনা হিসেবে বলা হয়েছে, ভারতীয় দূতাবাসের এক জন অফিসার বাজারে যাচ্ছিলেন। মোটরবাইক নিয়ে ১০ মিটারের মতো দূর থেকে তাঁর গাড়ি অনুসরণ করতে থাকেন এক আইএসআই অফিসার।
গত ২৭ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তান প্রথমে দাবি করেছিল, দুই ভারতীয় পাইলটকে আটক করেছে তারা। যদিও পরে ইসলামাবাদ শুধু অভিনন্দন বর্তমানকে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার কথাই বলে। পরে অভিনন্দনকে ভারতের হাতে তুলে দেয় ইসলামাবাদ। সেই ঘটনা স্তিমিত হওয়ার পর এ বার লিখিত প্রতিবাদপত্র পাঠিয়ে ওই ঘটনার তদন্তের দাবি করল বিদেশমন্ত্রক।
আরও পড়ুন: ফের প্রকাশ্যে পাকিস্তানের দ্বিচারিতা, জঙ্গি শীর্ষনেতাই এ বার ইমরানের দলে
নোট-এ বিদেশমন্ত্রক এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছে, ‘ভারতীয় কূটনীতিক বা তাঁদের পরিবারের সদস্যদের এই ধরনের হেনস্থার ঘটনা ১৯৬১ সালের কূটনৈতিক সম্পর্ক সংক্রান্ত ভিয়েনা চুক্তির পরিপন্থী।’ পাক বিদেশমন্ত্রককে স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়েছে, ‘ভারতীয় দূতাবাস, সেখানকার কর্মী-অফিসার এবং তাঁদের পরিবারের সদস্যদের সম্পূর্ণ সুরক্ষার দায়িত্ব পাকিস্তান সরকারের।’ পাকিস্তান যাতে ঘটনার উপযুক্ত তদন্ত করে এবং তদন্তে কী উঠে এল, তা ভারতীয় বিদেশমন্ত্রককে জানায়, সে কথাও বলা হয়েছে ওই নোট-এ।
(ভারতের রাজনীতি, ভারতের অর্থনীতি- সব গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে আমাদের দেশ বিভাগে ক্লিক করুন।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy