অলঙ্করণ: শৌভিক দেবনাথ
পৃথিবীর বৃহত্তম গণতন্ত্রে সাধারণ নির্বাচনের আগে উদ্বেগ বাড়াল ‘ইন্টারনেটের বিপদ’ সংক্রান্ত মাইক্রোসফটের রিপোর্ট। এ মাসেই প্রকাশিত মাইক্রোসফটের এই রিপোর্ট অনুযায়ী তিনটি বিষয়ে পৃথিবীতে সবার থেকে এগিয়ে ভারত। এই তিনটি বিষয় হল সাধারণ মানুষের ওপর নজরদারি, ভুয়ো খবর এবং গুজব। পাশাপাশি নিজের বন্ধু এবং পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকেই অনেক বেশি ক্ষতির মুখোমুখি হন ভারতীয়েরা, এমনটাই বলা হয়েছে এই রিপোর্টে।
হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুকের মতো সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপ এবং গুজব, এই জোড়া ফলায় গত এক বছরে বারবার রক্তাক্ত হয়েছে সারা দেশ। কখনও ছেলেধরা, কখনও কিডনি পাচার, কখনও নিছক সন্দেহের বশে গুজব ছড়ানোকে কেন্দ্র করে হওয়া হিংসায় প্রাণ গিয়েছে অন্তত ৪০ নিরপরাধ দেশবাসীর। মাইক্রোসফটের রিপোর্টও বলছে, ভারতের ৫৪ শতাংশ মানুষই গুজবের শিকার। সারা পৃথিবীর ক্ষেত্রে এই সংখ্যা ৫০ শতাংশ। ভারতবর্ষের পাশাপাশি গুজব এখন সারা পৃথিবীর কাছেই উদ্বেগজনক বলে দাবি করা হয়েছে মাইক্রোসফট-এর রিপোর্টে।
গুজবের পাশাপাশি ভুয়ো খবর ছড়ানোতেও এখন শীর্ষে ভারত। ভারতে বেশ কিছু দিন ধরেই নিজের মতাদর্শ প্রতিষ্ঠা করতে ভুল খবর, ছবি এবং ভিডিয়ো তৈরি করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দিচ্ছে বিভিন্ন গোষ্ঠী। নির্বাচন এগিয়ে আসার সঙ্গে বাড়ছে সেই প্রবণতা। মাইক্রোসফটের রিপোর্ট অনুয়ায়ী, সারা পৃথিবীর মধ্যে ভারতেই সব থেকে বেশি ভুয়ো খবর ছড়ানো হয়। সারা পৃথিবীতে ৫৭ শতাংশ মানুষ ভুয়ো খবরের শিকার, সেখানে ভারতের ক্ষেত্রে এই সংখ্যা ৬৪।
আরও পড়ুন: ভয়ঙ্কর গুজব ছড়ানো হচ্ছে রাজ্যের কিছু জায়গায়, সতর্ক থাকুন, এ সবই মিথ্যে
গুজব এবং ভুয়ো খবরের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের তথ্য চুরি এবং তাঁদের ওপর নজরদারিতেও সারা পৃথিবীর থেকে অনেক এগিয়ে ভারত। ভারতে ৪২ শতাংশ মানুষের ওপর কোনও না কোনও ভাবে নজরদারি চালানো হয়, সেখানে পৃথিবীর ক্ষেত্রে ২৯ শতাংশ মানুষ এই নজরদারির শিকার।
পাশাপাশি কারও নামে ভুল খবর তৈরি করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রেও ভারতের পরিসংখ্যান খুবই উদ্বেগজনক। ভারতের ক্ষেত্রে এই বিপদের মুখোমুখি হন ৩১ শতাংশ মানুষ। পৃথিবীতে ক্ষেত্রে এই সংখ্যা ২২।
আরও পড়ুন: নির্বাচনের আগে ভারত জুড়ে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা! ‘রিপোর্ট’ মার্কিন গুপ্তচর বাহিনীর
আসন্ন সাধারণ নির্বাচনে ভোট দেবেন সারা দেশের প্রায় ৮০ কোটি ভোটদাতা। এই বিপুল সংখ্যক মানুষের জনমতকে প্রভাবিত করার ক্ষেত্রে সোশ্যাল মিডিয়ার ভূমিকা হয়ে উঠেছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সব পক্ষই নিজের মতো করে ভোটদাতাকে দলে টানতে মরিয়া। সেই প্রক্রিয়ায় কোনও লাগাম না থাকায় গুজব এবং ভুয়ো খবর নিয়ে আসছে ব্যাপক হিংসা। যে কোনও সময় যে কারও ওপর আছড়ে পড়া জনরোষ এবং হিংসায় লাগাম টানতে বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া সংস্থার সঙ্গে আলোচনাও চালাচ্ছে ভারতের সংসদ। কিন্তু কোনও কিছুই যে যথেষ্ট নয়, তা স্পষ্ট পশ্চিমবঙ্গ সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ঘটে চলা একের পর এক হিংসার ঘটনায়। মাইক্রোসফটের রিপোর্টও সামনে আনল সেই উদ্বেগের কথাই।
আরও পড়ুন: ‘দেশভক্ত’দের বেধড়ক মারে রক্তাক্ত, তবু বাংলা ছাড়বেন না কাশ্মীরের শাল বিক্রেতা জাভেদ
আনন্দবাজারের বক্তব্য, গুজবে কান দেবেন না। গুজব ছড়াবেনও না। ভুয়ো খবর, ছবি এবং ভিডিয়ো শেয়ার করা কিন্তু আইনের চোখে অপরাধ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy