করুণানিধির শেষকৃত্যে দুই ছেলে এম কে স্টালিন (বাঁ দিকে), এম কে আলাগিরি (ডান দিকে) ও মেয়ে কানিমোঝি। —ফাইল ছবি
লার্জার দ্যান পার্টি ইমেজ। ব্যক্তিগত ক্যারিশমা দলকে ছাপিয়ে যাওয়া। দল আর সুপ্রিমোর নাম সমার্থক হয়ে ওঠা। আর মৃত্যুর পর গণবিলাপ, উন্মাদনা এবং অবশ্যম্ভাবী উত্তরাধিকার নিয়ে সংঘাত, দ্বন্দ্ব, পার্টি বিভাজনের মতো ঘটনা।
ডিএমকে সুপ্রিমো মুথুভেল করুণানিধির প্রয়াণের পরও দক্ষিণী রাজনীতির এই প্রবহমান ধারার পরিবর্তন হল না। মারা যাওয়ার পর এক সপ্তাহও কাটেনি। তার মধ্যেই শুরু হয়েছে কালাইনারের চেয়ারে বসা নিয়ে দড়ি টানাটানি, রাজনীতির অঙ্ক কষা।
১৯৮৭। এআইএডিএমকে-র প্রতিষ্ঠাতা মারুদুর গোপলন রামচন্দ্রন মুখ্যমন্ত্রীর পদে থাকাকীলনই মৃত্যু হল। সবাই ধরেই নিয়েছিলেন তাঁর ঘনিষ্ঠ জয়ললিতাই পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু রাজনীতির দাবা খেলায় বাজিমাত করেন এমজিআর পত্নী ভি এন জানকী। তিনিই মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে বসলেন। দল ছাড়লেন জয়ললিতা। তার পর কেন্দ্র ভি এন জানকীর নেতৃত্বে সরকার বাতিল করে। দু’ভাগ হওয়া এআইএডিএমকে বিধানসভা নির্বাচনে ক্ষমতাই হারিয়ে ফেলল। সরকার গঠন করল ডিএমকে।
আরও পড়ুন: দ্বিধাথরথর সিপিএম, পলিটব্যুরোর শোকবার্তা এল ৫ ঘণ্টা পর
এরপর ২০১৬। জয়ললিতার মৃত্যু। দলের নেতৃত্বে কারা, তা নিয়ে শশিকলা,দিনাকরণ বনাম পনিরসেলভম, পলানিস্বামীর লড়াই আদালতে গড়িয়েছিল।
এ বার কলাইনার। ৭ অগস্ট মৃত্যু হয়েছে। ডিএমকে প্রধান হিসাবে কাজ শুরু করে দিয়েছেন করুণানিধি-পুত্র এম কে স্টালিন। কিন্তু ক্ষোভে ফুঁসছেন আর এক ছেলে এক কে আলাগিরি। ২০১৪-য় দলবিরোধী কাজের অভিযোগে বহিষ্কৃত হলেও বাবার মৃত্যুর পরই আসরে নেমে পড়েছেন বাবার চেয়ারে বসার লড়াইয়ে। দলের মধ্যেই স্ট্যালিনের ঘোর বিরোধী আলাগিরি দাবি করে বসেছেন, কলাইনারের প্রকৃত অনুগামীরা তাঁর সঙ্গেই রয়েছেন।
আরও পড়ুন: সংসদীয় দায়িত্ববোধ থেকেই দলের নির্দেশ অমান্য করেছিলেন সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়
মঙ্গলবার চেন্নাইয়ের মেরিনা বিচে আন্না মেমোরিয়ালে শ্রদ্ধা জানাতে যান আলাগিরি। সেখানেই সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘‘কলাইনারের আসল সমর্থক, নেতা-কর্মীরা আমার সঙ্গেই রয়েছেন। তাঁরা আমাকেই সমর্থন করেন।’’ বুধবারই ডিএমকে-র এগজিকিউটিভ কমিটির বৈঠক রয়েছে। সে প্রসঙ্গে আলাগারির জবাব, ‘‘আমি ডিএমকে-তে নেই। দলের বিষয়ে আমাকে কিছু জিজ্ঞাসা করবেন না।’’ একইসঙ্গে তোপ দেগেছেন, স্ট্যালিনের নেতৃত্বে দল বলে কিছু অবশিষ্ট নেই। তবে আলাদা দল গড়ার কথা এখনই ভাবছেন না বলেও জানিয়ে করুণাপুত্র।
স্ট্যালিনপন্থীরা অবশ্য আলাগিরিকে খুব একটা গুরুত্ব দিতে নারাজ। দলের একটি অংশ মনে করছে, দল থেকে বহিষ্কৃত। তার উপর দীর্ঘদিন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গেও যুক্ত নন। দক্ষিণ তামিলনাড়ুর হাতে গোনা দু’-তিনটি জেলা ছাড়া তেমন প্রভাবও নেই আলাগারির। তাই তাঁকে উপেক্ষাই করছেন স্ট্যালিন ও তাঁর অনুগামীরা। সেই কারণেই এখনও পর্যন্ত সরকারিভাবে ডিএমকে-র কেউ আলাগিরি নিয়ে মুখ খোলেননি।
রাজনীতি, অর্থনীতি, ক্রাইম - দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ঘটে যাওয়া গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে দেশ বিভাগে ক্লিক করুন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy